Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মাঠ গিলেছে রাস্তা, কপালে ভাঁজ টিফিনে

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন হরেকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনুপ বিশ্বাস। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়ার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কল্লোল প্রামাণিক। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন হরেকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনুপ বিশ্বাস। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়ার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কল্লোল প্রামাণিক। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

রাস্তার ধারে স্কুল। প্রাচীরের বালাই নেই।

রাস্তার ধারে স্কুল। প্রাচীরের বালাই নেই।

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

• পঞ্চায়েত এলাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় শৌচালয় নেই। সে সব জায়গায় নতুন শৌচালয় দরকার। আবার কিছু জায়গায় যে শৌচালয় রয়েছে, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

সুবোধ সরকার, ধনারপাড়া

বাজারে, রাস্তার মোড়ে বেশ কিছু শৌচালয় তৈরি করেছে পঞ্চায়েত। আগামী দিনে অারও শৌচালয় তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পুরনো শৌচালয়গুলো পরিচর্যার মতো লোক এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। বেশি টাকা দিয়ে বাইরে থেকে লোক আনতে সমস্যা হচ্ছে।

•এক সময় দুর্লভপুরে রাস্তার পাশে নিকাশিনালা তৈরি হলেও এখন সেই নালার অবস্থা খুব খারাপ। নালাটি মাটি ও আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। বর্ষার সময় রাস্তায় জল জমে যায়।

পূর্ণিমা দেবনাথ, হরেকৃষ্ণপুর

বর্ষায় জল জমার জন্য বহু টাকা ব্যয়ে পঞ্চায়েত ওখানে নালাটি তৈরি করেছিল। কিন্তু স্থানীয় মানুষের জন্যই নালার এই হাল। লোকজন আবর্জনা ফেলে ভরিয়ে ফেলেছে নালা।

• পঞ্চায়েতের অনেক এলাকায় যেমন দুর্লভপুর, ধনারপাড়া, জয়রামপুরে পানীয় জলের অভাব। বেশিরভাগ গ্রামের বাসিন্দারা বিশুদ্ধ পানীয় জল পায় না।

গোলাম নবি মণ্ডল, জয়রামপুর

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এলাকার জয়রামপুর ও দুর্লভপুরে দু’টি পাম্প তৈরি করছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন সেই কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের সাথে কথা বলে দেখা হবে। পাম্প নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলে বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়।

• এক সময়ের জলঙ্গি নদী এখন মজে গিয়েছে। নদীর সংস্কার হলে চাষি ও মৎস্যজীবীরা উপকৃত হত।

প্রদীপ্ত চৌধুরী, ধনারপাড়া

নদিয়া-মুর্শিদাবাদ দুই জেলার সীমানায় ওই নদী। ওই নদী সংস্কারের জন্য দুই জেলা প্রশাসনকে জানানো হবে। পঞ্চায়েতের ক্ষমতা নেই।

• দুর্লভপুর থেকে জয়রামপুর অবধি রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে রয়েছে। অথচ ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বহু মানুষকে অফিসে ও ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যেতে হয়।

মৌসুমি মণ্ডল, হরেকৃষ্ণপুর

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে ওই রাস্তা তৈরি হয়। জেলা পরিষদ ওই রাস্তা সংস্কার করবে। মানুষের সমস্যার কথা আগেও তাদের জানানো হয়েছে। আবারও জানাব।

• পঞ্চায়েত এলাকার ধনারপাড়া, দুর্লভপুর ও জয়রামপুরের শ্মশানের পরিকাঠামোর উন্নয়ন প্রয়োজন। শ্মশানে চুল্লি, মানুষের বসার জায়গা বা স্নানের ঘাট তৈরি করা প্রয়োজন।

বিমল সরকার, কুমরি

তিনটির মধ্যে ধনারপাড়া শ্মশানে চাপ বেশি। ওখানে মৃতদেহ সৎকাজের সময় মানুষের দাঁড়ানোর জন্য পঞ্চায়েত একটি জায়গা বানিয়েছে। চুল্লি বা স্নানের ঘাট তৈরির মতো অর্থ পঞ্চায়েতের নেই।

এ ভাবেই অসমাপ্ত পড়ে রয়েছে জল সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজ।

• পঞ্চায়েতের অনেক দুঃস্থ মানুষ বিপিএল তালিকায় নাম না থাকার জন্য খাদ্য সুরক্ষার কার্ড পাচ্ছেন না।

অমৃত রায়, দুর্লভপুর

পূর্বের সমীক্ষা অনুযায়ী বিপিএল তালিকা তৈরি হয়েছিল। সেই তালিকায় বহু যোগ্য মানুষই বঞ্চিত হয়েছেন। পরবর্তীতে নতুন সমীক্ষা হলে তখন তাদের নাম সংযোজনের ব্যাপারে পঞ্চায়েত চেষ্টা করবে।

• এলাকার বহু মহিলা বিধবা ভাতা বা বার্ধক্য ভাতা পান না। অভাবের সংসারে ভাতা পেলে দুঃস্থ মানুষগুলোর সুবিধা হতো।

অনুপ বিশ্বাস, দুর্লভপুর

বিপিএল তালিকায় নাম না থাকায় ওদের ভাতা দেওয়া পঞ্চায়েতের সম্ভব নয়। পরে নতুন সমীক্ষা তালিকায় তাদের নাম থাকলে দেওয়া হবে।

• পঞ্চায়েতের ধনারপাড়া, দুর্লভপুর, কুমরি, জয়রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি রাস্তার পাশে হলেও স্কুলের কোনও প্রাচীর নেই। মাঠে গরু-ছাগলের অবাধ যাতায়াত। পঞ্চায়েত ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।

ত্রিমান মণ্ডল, দুর্লভপুর

স্কুলগুলোর প্রাচীর নির্মাণ করা সত্যিই জরুরী। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। খুব শীঘ্র স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবে পঞ্চায়েত।

• এলাকার বেশির ভাগ বাচ্চাদের বহু দূরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যেতে হয়। ছোটদের পক্ষে তা খুব সমস্যার।

মান্টি মণ্ডল, গৌরীপুর

নিজস্ব জায়গার অভাবে প্রচুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এত দিন পরের জায়গায় চলত। সরকারের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী সরকারি বা কোনও খাস জমিতে তৈরি করতে হবে। সব সময় কাছাকাছি জমি পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে তিন-চারটি জায়গা পাওয়া গিয়েছে। আগামী দিনে সেখানেই বাচ্চারা যেতে পারবে।

• পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে অনেক সরকারি টিউবয়েল থাকলেও তা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। মানুষ সেখানে জল পায় না।

সিরাজুল ইসলাম, গোপালপুরঘাট

যে সব টিউবয়েল জেলা ও ব্লক থেকে বসানো হয়েছিল, সেগুলোর অবস্থা ওই রকম। ওতে পঞ্চায়েত হাত দিতে পারে না। সেগুলো তারাই সারাবে। পঞ্চায়েতের বসানো কোনও টিউবয়েল খারাপ নেই।

• প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনেক গরিব মানুষ ঘর পাননি। অথচ যাঁদের পাকা ঘর রয়েছে, ঘর পাওয়ার জন্য তাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে।

সীমান্ত মণ্ডল, তাঁরাপুর

আগের সমীক্ষায় ভুল করার জন্য বিপিএল তালিকায় অনেক দুঃস্থ মানুষের নাম নেই। সেই কারনে ইচ্ছে থাকলেও তাঁদের দেওয়া ঘর যাচ্ছে না। নতুন তালিকায় নাম উঠলে তাঁদের ঘর দেওয়া সম্ভব হবে।

• বিভিন্ন রকম রেশন কার্ড হওয়ার জন্য রেশন ডিলারের কাছে গ্রাহকরা ঠিকঠাক মাল পাচ্ছেন না। অনেক ধনী দু’টাকা কেজি চাল পাচ্ছেন, অথচ প্রকৃত গরিব মানুষ কিনছে বেশি দামে।

আলম মণ্ডল, কুমরি

পুরনো কার্ডের বদলে এখন খাদ্য সুরক্ষার নতুন ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এই সমস্যার ব্যাপারে স্থানীয় ডিলার ও ব্লক খাদ্য দফতরের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE