Advertisement
১১ মে ২০২৪

নেই বাতি, আঁধার পথে ডরায় মেয়ে

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন হাঁসখালির দক্ষিণপাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলরাম বিশ্বাস। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সুস্মিত হালদার। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন হাঁসখালির দক্ষিণপাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলরাম বিশ্বাস। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সুস্মিত হালদার। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

তৈরি হলেও চাল ল না পরিস্রুত জল প্রকল্প। ছবি:সুদীপ ভট্টাচার্য

তৈরি হলেও চাল ল না পরিস্রুত জল প্রকল্প। ছবি:সুদীপ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

•গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে আমাদের গ্রামে রাস্তার বেশ কিছু অংশ বেহাল। বর্ষার সময় হাঁটাচলা করাই দায়। অথচ বাজারে যাওয়ার এটাই এক মাত্র রাস্তা। রাস্তাটি পাকা করা হোক।

আরতি বিশ্বাস, উত্তর-দক্ষিণপাড়া

প্রধান-বাজার থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত রাস্তাটা গত বছরই পিচের করা হয়েছে। বাকি ৫০ মিটার রাস্তা এখনও ইটের। টাকা এলেই ওই রাস্তা পাকা হবে।

•গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে অনেক আগে। কিন্তু, রাস্তার আঁধার এখনও ঘুচল না। রাতবিরেতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। মেয়েরা টিউশন নিতে যেতে ভয় পায়। পঞ্চায়েতকে বহুবার বলেছি।

শিখা বিশ্বাস, চাকি পাড়া

পুরো পঞ্চায়েত এলাকায় আমরা ১১০টি আলো লাগিয়েছি। যে সব এলাকায় এখনও আলো লাগানো হয় নি, সেখানে দ্রুত আলোর ব্যবস্থা হবে। টেন্ডার ডাকা হয়েছে।

•বেলেপাড়া মোড় থেকে চাপড়ি হয়ে মহেন্দ্রনগর যাওয়ার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। ইটের রাস্তার পুরোটাই এবড়ো-খেবড়ো। পদে পদে ঠোক্কর খেতে হয়।

রূপা চাকি, চাকি পাড়া

পুরো রাস্তাটা পাঁচ কিলোমিটার। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ৩৫ লক্ষ টাকায় রাস্তা সংস্কার হয়েছে। পিচ দিয়ে নতুন রাস্তা তৈরির টাকা নেই। বিধায়ক বা সাংসদ এবং জেলা পরিষদের কাছে টাকা চেয়েছি।

•আমাদের পঞ্চায়েত এালকার বিভিন্ন রাস্তায় মালবাহি ভারি লরি যাতায়াত করে। ফলে বিভিন্ন রাস্তায় ফাটল ধরতে শুরু করেছে। এটা নিয়ে পঞ্চায়েত কী ভাবছে?

কল্পনা শর্মা, দক্ষিণপাড়া

সত্যিই এটা একট বড় সমস্য। আমরা বিভিন্ন রাস্তায় ভারি যান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছি। তারপরও তা আটকানো যাচ্ছে না। আমরা তা বন্ধ করার চেষ্টা করছি।

•একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সুপারভইজারের কাজ করি। আমার গ্রাম সংসদে গত বছর প্রায় এক হাজার শ্রম দিবসের কাজ হয়েছে। কিন্তু মজুরি দেওয়া যায়নি। মানুষ টাকা চাইছে। এই বছর কী আদৌ ওই প্রকল্পে কোনও কাজ হবে।

আবর্জনা পড়ে বুজে গিয়েছে নিকাশি নালা। ছবি:সুদীপ ভট্টাচার্য

স্বপন প্রামাণিক, মজিতপুর

এখন একশো দিনের প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র সরকার সরাসরি শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়। তাই, আমাদের কিছু করার থাকে না। যদিও এই বিষয়টি আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। যেখানেই কাজ হচ্ছে আমরা বলে দিচ্ছি, টাকা পরে পাবেন।

•শ্বশুরের বয়স ৭৫ বছর। শ্বাশুড়ির ৬৫। অভাবের সংসার। তবুও তাঁরা বার্ধক্য ভাতা পান না। এলাকার অনেকেরই এরকম অবস্থা।

শুভদ্রা তরফদার, দক্ষিণপাড়া

শুধু আমার পঞ্চায়েতেই নয়, একই অবস্থা সর্বত্র। কারণ, সেই পুরনো তালিকা ধরেই ভাতা দেওয়া হচ্ছে। নতুন তালিকা পাঠানো হলেও সেই তালিকা এখনও অনুমোদন পায়নি।

•গোটা পঞ্চায়েতে পানীয় জলের সমস্যা। ২০০৫ সালে জল প্রকল্প তৈরি হয়ে গেলেও তা কেন এখনও চালু হল না জানি না। কবে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল পাব?

রথীন্দ্রনাথ বালা, বেলেপাড়া

জল প্রকল্প এখনও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাতে। তবে, কিছু দিনের মধ্যেই তা আমাদের হস্তান্তর করা হবে বলে জেনেছি। আমাদের হাতে এলে যত দ্রত সম্ভব তা চালু হবে। তবে সব এলাকায় এখনও পাইপ বসেনি।

•দক্ষিণপাড়া একটা গুরুত্বপূর্ণ বাজার। একটা বিরাট এলাকার মানুষ আসেন বাজারে। কিন্তু বাজারের বেশ কয়েকটি ভেপার বাতি বিকল হয়ে গিয়েছি। আলো জ্বলে না। সমস্যা হয়।

সমর মণ্ডল, দক্ষিণপাড়া

বিধানসভা ভোটের পর মাত্র চার লক্ষ পেয়েছি। নানা কাজে সেই টাকা খরচ হয়েছে। টাকার অভাবেই বাতি মেরামত করা যাচ্ছে না। টাকা এলেই বাতি জ্বলবে।

•গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন থেকে বাজার পর্যন্ত রাস্তায় কোনও নিকাশি ব্যবস্থা নেই। বর্ষায় হাঁটু সমান জল ভেঙে পঞ্চায়েতে আসতে হয়। একটা উন্নত নিকাশি ব্যবস্থা কি করা যায় না?

রফিকুল ধাবক, উত্তর-দক্ষিণপাড়া

এর আগে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা রাস্তার পাশে কাঁচা নিকাশি নালা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু তা টেকেনি। পাকা নর্দমা তৈরি খুবই প্রয়োজন। পরিকল্পনাও করা হয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবেই তা করতে পারছি না।

•গ্যাস গোডাউন থেকে ইটাবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা বেহাল। বর্ষায় জল জমে। কাদা রাস্তায় যাওয়া আসা যায় না।

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, ইটাবেড়িয়া

দেড় কিলোমিটার রাস্তা বিধায়ক ও সাংসদ কোটার টাকায় পাকা করা হয়েছে। টাকার অভাবে বাকিটা করে উঠতে পারছি না। জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে।

আমাদের গ্রামের প্রাথমিক স্কুল বিল্ডিংয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। দরজা-জানালা ভাঙা। গ্রামের নিকাশি ব্যবস্থাও ভাল নয়। এর কোনও কী প্রতিকার নেই?

প্রহ্লাদ বিশ্বাস,ভগবতীতলা

গ্রামের জমা জল যে এলাকা দিয়ে বের হত সেই জমির মালিক মাটি ফেলে জায়গা উচুঁ করে দিয়েছেন। তবে আমরা পাকা নর্দমা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। ওই স্কুলের দরজা-জানালা সারিয়ে দেওয়া হবে।

•অনেক গরিব মানুষ, যাঁদের মাথার উপরে ছাদ নেই, তাঁদেরকে দেখছি ঘর পাচ্ছেন না। যাদের দরকার নেই, তারা পাচ্ছেন। কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।

সুকান্ত বিশ্বাস, বেড়ের পাড়া

২০১১ সালে সমীক্ষা হয়েছিল। সেই মত তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকার যোগ্যতামাণ অনুযায়ী ঘর পাওয়া যায়। আমাদের কিছু করার থাকে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Village Panchyat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE