Advertisement
১১ মে ২০২৪

কাজ আছে কার্ড নেই, চুপ প্রশাসন

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন মণীন্দ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠু ঘোষ। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়ার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় শুভাশিস সৈয়দ। রইল বাছাই করা প্রশ্নোত্তর।সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন মণীন্দ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠু ঘোষ। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়ার কথা উঠে এল আলোচনায়। সঞ্চালনায় শুভাশিস সৈয়দ। রইল বাছাই করা প্রশ্নোত্তর।

উঠে গিয়েছে পিচ। আইটিআই কলেজ মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।

উঠে গিয়েছে পিচ। আইটিআই কলেজ মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে যে কার্ড বিলি হচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে দরিদ্র নয় এমন মানুষও দু’টাকা কিলো দরে চাল ও গম পাবে। এটা কী করে সম্ভব হল?

ঊষা পাল, দিঘিরপাড়

কার্ডের বিষয়টি সম্পূর্ণ জেলা খাদ্য দফতরের এক্তিয়ারে। বহরমপুরের বিডিও-র অনুরোধে পঞ্চায়েত কার্যালয় থেকে ওই ডিজিট্যাল রেশন কার্ড বিলি করা হয়েছে। তবে বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে। আমি গোটা বিষয়টি বিডিওর সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেছি।

এলাকায় পানীয় জলে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করা গেল না কেন?

সুরজিৎ পাহাড়িয়া, সুন্দরকলোনি

প্রতি মাসে পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি সংসদের টিউবওয়েলের জল পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় আর্সেনিক রয়েছে জানার পরে ওই টিউবওয়েলের গায়ে লাল চিহ্ন করে দেওয়া হয় এবং ওই এলাকার অন্যত্র নতুন করে নলকূপ বসানো হয়। ফলে আর্সেনিকের সমস্যা থাকলেও পঞ্চায়েত সতর্ক রয়েছে। তবে হরিদাসমাটি জলপ্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে পাইপ লাইনের সাহায্যে জল সরবরাহ হবে।

২০০৮ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পরে আবেদন করা সত্ত্বেও বিধবা ভাতা এখন পর্যন্ত পাইনি। বিধবা ও বার্ধক্য ভাতা কবে থেকে মিলবে?

গিরিবালা বিশ্বাস, হাজারিবাগান

বিধবা ভাতার টাকা সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় কিছু নেই। তবে পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে আমি প্রশাসনের কাছে দরবার করতে পারি, যাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিধবা ভাতা দেওয়ার যায়।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নতুন করে জব কার্ড করার জন্য এলাকার মানুষ পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঘুরছে। কিন্তু কার্ড পাচ্ছেন না। কবে ওই সমস্যা মিটবে?

নিরঞ্জন পাল, সুকান্তপল্লি

নতুন করে জব কার্ড দেওয়া বন্ধ রয়েছে। তবে কার্ডের জন্য অনেকেই আগ্রহী। কিন্তু এখন জব কার্ড বিলি বন্ধ রয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হয়। কিন্তু কবে থেকে জব কার্ড দেওয়া শুরু হবে তা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর নেই।

বিপিএল তালিকায় নাম আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা খাতে এখনও গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়নি। কবে হবে?

অশোক মণ্ডল, হাতা কলোনি

ওই প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণের জন্য উপভোক্তাপিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আমার পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকশো উপভোক্তার নামের তালিকা তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। তার মধ্যে অগ্রাধিকারারের ভিত্তিতে একশো জনের নামের তালিকা তৈরি করে রাখতে বলেছে প্রশাসন। কিন্তু তাও কয়েক মাস হয়ে গেল। কিন্তু ওই খাতে এখন পর্যন্ত কোনও অর্থ আসেনি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

জাতীয় সহায়তা কর্মসূচি প্রকল্প বিপিএল তালিকায় নাম আছে এমন কোনও পরিবারের একমাত্র উপাজর্নশীল ব্যক্তি ৫৯ বছরের মধ্যে মারা গেলে সেই পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকায় ওই অর্থ একজনও পাননি!

রতন দত্ত, বানজেটিয়া

নিয়ম মেনে তালিকা তৈরি করে বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়াই এখনও ওই অর্থ কোনও পরিবারকে দেওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আমি ব্লক প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেছি।

জলঙ্গি রোড জামতলা থেকে মণীন্দ্রনগর গার্লস স্কুল ও মণীন্দ্রনগর উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা অবিলম্বে সংস্কারের প্রয়োজন। জনবহুল ওই রাস্তা দিয়ে কয়েক হাজার পড়ুয়া ও এলাকার মানুষ বিভিন্ন কাজে নিয়মিত যাতায়াত করেন। পঞ্চায়েত কার্যালয়ও ওই রাস্তার উপরে পড়ে। কিন্তু রাস্তা সারাইয়ে কারও হেলদোল নেই।

অনাথবন্ধু দাস, ২ নম্বর বানজেটিয়া

ওই বড় রাস্তা সংস্কারের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা পঞ্চায়েতের নেই। গত দু’তিন বছর ধরে সরকারের কাছ থেকে কোনও অর্থ পাইনি। এমনকী ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ১৪তম অর্থ পরিকল্পনা খাতে যে অর্থ আসার কথা ছিল, তা এসেছে ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে। তাও প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছি। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে তৃতীয় তম অর্থ পরিকল্পনা খাতের টাকা ২০১৬-১৭ সালে পেয়েছি, তাও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। একই ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকা উন্নয়নের জন্য বিআরজেএফ প্রকল্প খাতে যে অর্থ বরাদ্দ হয়, তাও গত চার বছর ধরে পাইনি। এই অবস্থায় এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়ছে।

এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় নিকাশির সমস্যা রয়েছে। ওই নিকাশি সমস্যার সমাধান কি করা হবে?

গৌতম কুণ্ডু, কাশিমবাজার

কাশিমবাজার থেকে বানজেটিয়া-মণীন্দ্রনগর হয়ে হাতা কলোনি পর্যন্ত জল নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি করে গোবর্ধন নালার সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে পারলে স্থায়ী সমাধান হতে পারে। কিন্তু তার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা খরচের সাধ্য পঞ্চায়েতের নেই। ওই ব্যাপারে একটি প্রকল্প তৈরি করে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোনও সুরাহা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manindranagar Panchayat Pradhan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE