Advertisement
E-Paper

স্তব্ধ ট্রেন, প্ল্যাটফর্মে ছটফট করলেন ক্যানসার রোগী

রিকশা থেকে নেমে, প্ল্যাটফর্ম উপচানো ভিড়টা সিঁটিয়ে দিয়েছিল তাঁকে। রুগ্ন স্বামীর হাত ধরে বলেছিলেন ‘‘চলো ফিরে যাওয়াই ভাল। এই ভিড়ে পারবে না!’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৬
ট্রেনের অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

ট্রেনের অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

রিকশা থেকে নেমে, প্ল্যাটফর্ম উপচানো ভিড়টা সিঁটিয়ে দিয়েছিল তাঁকে।

রুগ্ন স্বামীর হাত ধরে বলেছিলেন ‘‘চলো ফিরে যাওয়াই ভাল। এই ভিড়ে পারবে না!’’

সরকারি হাসপাতালের ‘ডেট’, আবার কবে দেবে— ফিরতি ভাবনাটা মাথা চাড়া দিতেই সোমা চক্রবর্তী তাঁর স্বামীকে নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে উঠে এসেছিলেন প্ল্যাটফর্মে। খাদ্যনালিতে ক্যানসার, স্বামী স্বপনবাবুকে আঁকড়ে কোনওক্রমে উঠেছিলেন শান্তিপুর লোকালে। তা সে ট্রেন যে কল্যাণীতে এসে থমকে যাবে কে জানত!

কাঁকিনাড়ায় চটকলে শ্রমিকদের মাস পয়লা মাইনের দাবিতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অবরোধটা শুরু হয়েছিল সকালেই। স্তব্ধ ট্রেন চলাচলের জেরটা ততক্ষণে গ্রাস করেছে কল্যাণী ছাপিয়ে শান্তিপুর-কৃষ্ণনগর শাখাতেও। সড়ক পথে কলকাতা যাওয়া যায় বটে, তবে, গাড়ি বাড়া করে খরচের বড়সড় ধাক্কা রয়েছে। শান্তিপুর থেকে ট্রেনে ওঠার পরে ভিড়ের চাপে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা স্বপনবাবুকে নিয়ে এক সময়ে তাই নেমে গিয়েছিলেন কল্যাণীতে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের ‘ডেট’-এর কথা ভেবে ফিরে না গিয়ে কল্যাণী স্টেশনে অপেক্ষার রাস্তাই বেছে নিয়েছিলেন।

কোনওক্রমে তরল খাবার খেতে পারেন ভদ্রলোক। কল্যাণীর প্ল্যাটফর্মে সহযাত্রীরাই সে ব্যবস্থা করেছিলেন ওই অসুস্থের জন্য। তার পর বেলা একটা নাগাদ, অবরোধ উঠলে ফের ট্রেন ধরেন তাঁরা।

অবরোধের জল গড়িয়ে নদিয়া কিংবা পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদ বুধবার দিনভর এ ভাবেই ভুগল। যার জেরে এ দিন সকাল থেকে বাদকুল্লা, বীরনগর এবং মুড়াগাছায় ডাউন লালগোলা প্যাসেঞ্জার দীর্ঘক্ষণ থমকে পড়ায় কেউ তাঁর অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পড়ে থাকলেন প্ল্যাফর্মে কেউ বা দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে কলকাতা ছুটলেন চাকরি বাঁচাতে। বেলডাঙায় বাসিন্দা ইন্তিখাব আলম আর সুরাবর্দি শেখ কলকাতায় কাজ করেন। এ দিন না গেলে কাজটাই চলে যেত তাঁদের। বীরনগরে আটকে পড়েছিলেন তাঁরা। পরে বাস ধরে কলকাতা পাড়ি দেন। বলছেন, ‘‘যা আয় করি, তাতে বাসে যাতায়াত বিলাসিতা। তবু করতে হল।’’

করিমপুরের নাজিরপুরের যুবক হাসিবুল মালিথা, এনাফুল বিশ্বাস বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলেন রাতের ট্রেনে করে বেঙ্গালুরু যাবেন বলে। কৃষ্ণনগরে এসে দেখেন ট্রেন বন্ধ। তাঁদেরও লটবহর নিয়ে শেষতক বাসেই উঠতে হয়। সুযোগ বুঝে বাস কনডাক্টরও চেয়ে বসেন দ্বিগুণ ভাড়া।

Railway track Block
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy