Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনী এখন স্থিতিশীল

রানাঘাটের নির্যাতিতা বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। আতঙ্কের ঘোর অনেকটা কাটিয়ে ওঠায় তাঁর মানসিক অবস্থারও উন্নতি হয়েছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার তিনি তাঁর পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রবিবার আধা-তরল খাওয়ার পর এ দিন রুটি, তরকারি, সুপ খেয়েছেন।

রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। সোমবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। সোমবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

সৌমিত্র সিকদার
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৬
Share: Save:

রানাঘাটের নির্যাতিতা বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। আতঙ্কের ঘোর অনেকটা কাটিয়ে ওঠায় তাঁর মানসিক অবস্থারও উন্নতি হয়েছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার তিনি তাঁর পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রবিবার আধা-তরল খাওয়ার পর এ দিন রুটি, তরকারি, সুপ খেয়েছেন।

এ দিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে ওই সন্ন্যাসিনীর খোঁজখবর নেন। তিনি প্রায় ২৫ মিনিট হাসপাতালে ছিলেন। তার মধ্যে মিনিট পাঁচেক তিনি সন্ন্যাসিনীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। তাঁর উপর নির্যাতনের প্রতিকার করতে প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে, এই আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে তিনি সুপারের কাছে চিকিৎসার বিষয়ে বিশদ জানতে চান। এ দিন সকালে পুলিশ সুপার এবং জেলা শাসকও হাসপাতালে গিয়ে ওই সন্ন্যাসিনীর সঙ্গে দেখা করেন।

হাসপাতালে সুপার অতীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, “গত দু’দিনের তুলনায় আজ অনেকটাই বল ফিরে পেয়েছেন ওই সন্ন্যাসিনী। এক মানসিক চিকিৎসক তাঁর কাউন্সেলিং করছেন। বিধ্বস্ত অবস্থা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন,” বলেন সুপার।

শনিবার সকাল ৬টা ৫৮ মিনিটে ওই সন্ন্যাসিনীকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তখন তিনি প্রায় অচৈতন্য। সুপারের নেতৃত্বে তখনই বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ এবং নার্সিং সুপারকে নিয়ে ‘মেডিক্যাল টিম’ তৈরি করা হয়। দ্রুত অস্ত্রোপচার করার পর মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে চলতে থাকে চিকিৎসা। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার মাধ্যমে হাসপাতালের সুপারের কাছ থেকে জানতে চান, নির্যাতিতা বৃদ্ধাকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা। রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসও হাসপাতালে এসে একই প্রশ্ন করেন।

সুপার অতীন্দ্রবাবু বলেন, “আমরা মানুষটাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার মতো কষ্ট দিতে চাইনি। এখানে তিনি চেনা পরিবেশে রয়েছেন। প্রিয় মানুষরা তাঁর সঙ্গে দেখা করছেন। যেটা তাঁকে মানসিক ভাবে সুস্থ হতে সাহায্য করছে।”

রবিবারই রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করেন রোম থেকে আসা রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রতিনিধি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ের নেতৃত্বে তৈরি একটি দলও হাসপাতালে গিয়ে সন্ন্যাসিনীর অবস্থা এবং চিকিৎসার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখেন। তাঁরাও সন্তুষ্ট। মহিলা ওয়ার্ডে সন্ন্যাসিনীর কেবিনে সারাক্ষণ থাকছেন দু’জন নার্স। বাইরে মোতায়েন দুই পুলিশকর্মী। অনুমতি ছাড়া কেউ ঢুকতে পারছেন না।

যাঁকে নিয়ে সবার এত দুশ্চিন্তা, তিনি চিন্তিত ডাক্তারদের ভালমন্দ নিয়েই। সন্ধ্যা সাতটায় হাসপাতাল সুপার দেখা করতে গেলে বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনী তাঁকে বলেন, “এত রাত হয়ে গেল, এখনও বাড়ি যাননি? আর কত কাজ করবেন?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE