Advertisement
E-Paper

পুজোয় পেনশনহীন শিক্ষকেরা

পুজো, মহরম, গাঁধীজয়ন্তী, মিলিয়ে লম্বা ছুটির পর মঙ্গলবার অনেক আশা নিয়ে ব্যাঙ্কে ছুটেছিলেন বহরমপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ আলাউদ্দিন শেখ। কিন্তু এ দিনও তাঁকে খালি হাতেই ফিরতে হয়।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মাত্র ১৯০০ টাকা পুজো বোনাস। সেটুকু সম্বল করেই পুজোর মরসুম পার করলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা। ফলে চূড়ান্ত আর্থিক সঙ্কটে শারদ উৎসবের দিনগুলি কাটাতে বাধ্য হলেন তাঁরা।

পুজো, মহরম, গাঁধীজয়ন্তী, মিলিয়ে লম্বা ছুটির পর মঙ্গলবার অনেক আশা নিয়ে ব্যাঙ্কে ছুটেছিলেন বহরমপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ আলাউদ্দিন শেখ। কিন্তু এ দিনও তাঁকে খালি হাতেই ফিরতে হয়। কারণ, ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয় পেনশন আসেনি। পেনশনই ভরসা নবদ্বীপের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা দীপালি দাশগুপ্তের। তিনি বলেন, “তিন সদস্যের সংসার। এই অবস্থায় পুজোর মাসে যদি পেনশনটুকুও না পাই, তা হলে কী অবস্থা হয় তা বলে বোঝাতে পারব না।”

নবদ্বীপ লাগোয়া বর্ধমান শ্রীরামপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাখন দেবনাথ জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসের পেনশন পাওয়ার কিছুদিন পর ওই মাসের এগারো তারিখ নাগাদ অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পুজো বোনাসের ১৯০০ টাকা এসেছিল। সেই শেষ। তারপর গোটা পুজো জুড়ে আর কিছুই মেলেনি। মাখনবাবুর আক্ষেপ, “ভেবে ছিলাম পেনশনের টাকা দিয়ে নাতির পুজোর জানা কিনব। কিন্তু পারলাম কই? সবচেয়ে খারাপ লাগছে দেখলাম কর্মরত শিক্ষকদের বেতন ঘোষিত সময়ের আগেই হয়ে গেল। আমরা অবসর প্রাপ্ত বলেই কি এত অবহেলা?”এ প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক এবং বর্তমান রাজ্য কমিটির সদস্য প্রনব ভট্টাচার্য বলেন, “বেশির ভাগ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকই পেনশনের ওই সামান্য টাকার উপর নির্ভর করে থাকেন। পুজোর মাসের খরচ অন্য মাসের থেকে বেশ কিছু বেশিই হয়। অথচ এই মাসেই আমাদের কপালে কিছুই জুটল না।”

পুজোর লম্বা ছুটি শুরু হওয়ার আগে সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখে কর্মরত শিক্ষকদের বেতন হয়ে যায়। ফলে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা আরও নিশ্চিত হন, পুজোর আগে তাঁরাও পেনশন পেয়ে যাবেন। ফলে পুজোর ছুটি পড়ার শেষ দিন পর্যন্ত তাঁরা নিয়ম করে ব্যাঙ্কে ছুটেছেন পেনশনের খবর নিতে। আর রোজই হতাশ হয়ে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরে আসতেন। প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির (পশ্চিমবঙ্গ) রাজ্য সম্পাদক কমলেন্দু মৈত্র এই প্রসঙ্গে বলেন, “এ রাজ্যে প্রাথমিক এবং এবং হাইস্কুল মিলিয়ে কমবেশি প্রায় আড়াই লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আছেন। এঁদের কথা এক বারও ভাবলেন না কেউ?’’ তিনি জানান, উৎসবের মরসুমে লম্বা ছুটিতে ব্যাঙ্ক বন্ধ, এটিএমগুলিও শূন্য। এক দুর্বিষহ অবস্থায় উৎসবের দিনগুলো কাটালেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের আর কোনও কাজে লাগবে না বলেই কি তাঁদের এই দুরবস্থা? তবে এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি।

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি দেবাশিস বৈশ্যও দায় এড়িয়ে বলেছেন, “শিক্ষকদের পেনশনের বিষয়টি আমাদের মাধ্যমে হয় না। সরাসরি রাজ্যের অর্থ দফতরের মাধ্যমে হয়। ফলে এই বিষয়ে আমাদের কিছুই জানা নেই।”

Pension Durga Puja Teachers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy