দীপাবলি কবেই চলে গিয়েছে। কিন্তু থেকে গিয়েছে দীপাবলির শুভেচ্ছা। এখনও বহরমপুর শহরের টেক্সটাইল মোড় বা পুরনো হাসপাতাল মোড়ে সেই শুভেচ্ছা ঝুলছে হোর্ডিংয়ে।
পুরনো হাসপাতাল মোড়ে ঝুলছে সরস্বতী পুজোর শুভেচ্ছাও। লালদিঘি পাড়ের উল্টো দিকে রবীন্দ্রসদন ঘেঁষে কালীপুজো কমিটির ছিঁড়ে যাওয়া ব্যানার। বিদ্যুতের বা টেলিফোনের খুঁটিতে ইংরেজিতে কথা বলা শেখানো কিংবা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিজ্ঞাপন ছয়লাপ। খাগড়া জল ট্যাঙ্কি মোড় থেকে কল্পনা মোড়ের দিকে যেতে রাস্তার দু’দিকে বিদ্যুতের বা টেলিফোনের খুঁটিতে বাঁধা দড়ি থেকে রাস্তার উপরে ঝুলছে সে সব। তেমনি বহরমপুর স্টেশনের কাছে বিবেকানন্দ মুর্তি লাগোয়া অকেজো ট্র্যাফিক সিগন্যালের খুঁটি ঢেকেছে বিজ্ঞাপনে।
কৃষ্ণনগরেও ব্যানার-হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ। কোনওটায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি তো কোনওটায় বেসরকারি সংস্থার বিজ্ঞাপন। সবচেয়ে বেশি শহরের প্রাণকেন্দ্র পোস্ট অফিস মোড়েই। রাস্তার দু’ধার ছাড়াও বিভিন্ন ছাদের উপরে বিভিন্ন সংস্থার বিরাট-বিরাট বিজ্ঞাপন। যেগুলোর বেশির ভাগই স্থায়ী কাঠামোর উপরে তৈরি। তা ছাড়া, কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে শুরু করে পাবলিক লাইব্রেরি পর্যন্ত রাস্তার উপরেই তৈরি হয়েছে স্থায়ী তোরণ। আর সেই তোরণ জুড়ে বড়-বড় বিজ্ঞাপন।
ঘটনা হল, ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ওই নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, শহর সাফসুতরো রাখতে ব্যানার-পোস্টার নিয়মিত খুলে ফেলতে হবে। কিন্তু তাতে গা করছে না কেউই। বহরমপুর পুরসভা সূত্রের খবর, একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে বছরে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার চুক্তি রয়েছে তাদের। ওই সংস্থা নিয়ম মেনে শহরে হোর্ডিং-ব্যানার লাগায়। এ ছাড়াও অনুমতি ছাড়া ব্যানার-ফ্লেক্স লাগানো তো রয়েছেই। রাজনৈতিক ব্যানার বা হোর্ডিংও আছে। পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যের আশ্বাস, “মেয়াদ উত্তীর্ণ বা বিনা অনুমতিতে লাগানো ব্যানার-পোস্টার সরানোর জন্য শীঘ্র অভিযান চালানো হবে।” মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের অফিস এবং রবীন্দ্র সদনের কাছে বাঁশ বেঁধে এক প্রকার স্থায়ী গেট বানিয়ে তাতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। অন্তত তিনটি গেট বছরের অধিকাংশ সময় থাকে। তবে পুরপ্রধানের দাবি, রাস্তার উপরে দীর্ঘদিন ধরে যাতে বাঁশের খাঁচা করে রাখা না হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞাপন সংস্থার সঙ্গে কথা বলবেন।
বিজ্ঞাপনে পথ ঢেকে যাওয়ার কারণে কৃষ্ণনগরে গাড়ির গতি কমে যাচ্ছে বলে দাবি ট্রাফিক পুলিশের। চ্যালেঞ্জ মোড় এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, “এমনিতেই শহরে পার্কিংয়ের জায়গা নেই। রাস্তার উপরে রাস্তা রাখতে হয়। তার উপরে বিজ্ঞাপনের জন্য রাস্তা সংকীর্ণ হচ্ছে!” পুরপ্রধান অসীম সাহার দাবি, “কারও কোনও সমস্যা হবে না, এটা নিশ্চিত হয়েই বিজ্ঞাপন লাগানোর অনুমতি দিই। কাজেই সমস্যা থাকার কথা নয়।” তিনি যোগ করেন, “অবৈধ বিজ্ঞাপন কয়েক দিন আগেই সরিয়ে দিয়েছি। ফের কিছু লাগানো হয়েছে দেখছি। সেগুলোও সরিয়ে দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy