অতি উচ্চ তাপমাত্রায় কাচ গলিয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে বেলজিয়াম ফানুস তৈরি হয় ইউরোপে। একাধিক ফানুস পাশাপাশি সাজিয়ে তৈরি হতো ঝাড়বাতি। তার মধ্যেই বড় আকারের মোমবাতি জ্বালিয়ে তৈরি করা হত এক অপূর্ব আলোকসজ্জা। যে কাঠি দিয়ে এই মোমবাতিগুলি জ্বালানো হত, স্থানীয় ভাষায় সেগুলিকে বলা হত ‘হুঁশ’। শান্তিপুরের রাসে ঐতিহ্য মেনে এ বারও জ্বলল সেই বেলজিয়াম ফানুস।
শান্তিপুরের রাধারমন জিউ মঠবাড়ি, কালাচাঁদ ঠাকুরবাড়ি এবং দীনদয়াল প্রামাণিকের বাড়ি, যেটি বর্তমানে বাবুদের বাড়ি নামে পরিচিত, এই দুই বাড়িতেই আজও রাস যাত্রা উপলক্ষে ঝেড়েপুছে সাজানো হয় বেলজিয়াম ফানুস। সন্ধ্যার সময় থেকে কাচের ফানুসের মধ্যে এক বিশেষ ধরনের মোমবাতির আলোতে এক অসাধারণ পরিবেশ তৈরি হয়। এখানে কোনও বৈদ্যুতিক আলো ব্যবহার করা হয় না।
বেলজিয়াম কাচের ফানুস তৈরির সুদক্ষ কারিগরেরা সংখ্যায় অপ্রতুল। পরম যত্নে আজও রয়েছে ৫০টি ফানুস। বাবুর বাড়ির বর্তমান সদস্যরা অনেক ‘কাঠখড় পুড়িয়ে’ আরও ২০টি তৈরি করেছেন। ফানুসগুলিতে মোমবাতি জ্বালানোর ধরন যেমন আলাদা, তেমনিই মোমবাতি নেভানোর কায়দা। সরু আকৃতির একটি লাঠির মাথায় ন্যাকড়া বেঁধে স্পিরিটে চোবানো হয়। এর পর তাতে আগুন ধরিয়ে ঝুলন্ত ফানুসের ভিতরে থাকা মোমবাতি জ্বালানো হয়। ঠিক একই ভাবে লাঠির মাথায় ধাতব পাত্র ঝুলিয়ে কাচের ফানুসের উপরে আলতো চেপে ধরলে নিভে যায় মোমবাতি। এই পদ্ধতিকে স্থানীয়েরা বলেন ‘ফোঁস’। শান্তিপুরের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই শহরে রাসের মাহাত্ম্যের সঙ্গে যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে অভিজাত আলোকধারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy