Advertisement
০৫ মে ২০২৪
saraswati puja

দূর থেকেই এ বার ‘বিদ্যাং দেহি’ বলবে পড়ুয়ারা

জেলার বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় প্রতিটি স্কুলেই নির্দিষ্ট কোভিড বিধি মেনে পুজো করা হবে এ বছর।

n প্রস্তুতি। শনিবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

n প্রস্তুতি। শনিবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

সন্দীপ পাল
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৫
Share: Save:

করোনার জেরে প্রায় এগারো মাস ধরে বন্ধ থাকার পরে স্কুল খুলেছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চাইছে পড়ুয়ারা। এরই মধ্যে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সরস্বতী পুজো। তার আগে স্কুল খুলেছে ঠিকই, তবে এই কোভিড পরিস্থিতিতে কতটা জাঁকজমক করে স্কুলে-স্কুলে সরস্বতী পুজো করা হবে, তা নিয়ে যথেষ্ঠ সংশয় ছিল। তবে এখনও পর্যন্ত স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ করার ব্যাপারে কোনও সরকারি নির্দেশিকা না থাকায় খানিকটা স্বস্তিতে পড়ুয়ারা।

স্কুলে সরস্বতী পুজো স্থগিত রাখার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নদিয়া জেলার স্কুল পরিদর্শক মৃণালকান্তি সিংহরায় এ দিন বলেন, ‘‘এই নিয়ে কোনও অর্ডার আমার কাছে নেই। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’

জেলার বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় প্রতিটি স্কুলেই নির্দিষ্ট কোভিড বিধি মেনে পুজো করা হবে এ বছর। তবে অধিকাংশ স্কুলেই এই পুজোয় ছাত্রছাত্রীদের যোগদান নিয়ন্ত্রিত করা হবে। এক-একটি স্কুল তাদের নিজেদের মতো করে পুজো সংক্রান্ত সুরক্ষাবিধি তৈরি করে নিয়েছে। প্রতি বছরই বিভিন্ন স্কুল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো ঘিরে পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ থাকে চোখে পড়ার মতো। বিশেষত, বিদ্যার দেবীর আরাধনায় নানা আয়োজন করা হয়, যেখানে মেতে থাকে পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের নিয়ে কমিটি তৈরি, কাজ ভাগাভাগি, নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের তালিকা তৈরি সবই হয়। তবে এই সবের কিছুই এ বছর থাকছে না বেশিরভাগ স্কুলে। কয়েকটি স্কুলে সরস্বতী পুজোর চাঁদা নেওয়া হলেও এখনও অনেক স্কুলে চাঁদা পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে জেলা জুড়ে স্কুলগুলি কী ভাবে সুষ্ঠু ভাবে সরস্বতী পুজো পরিচালনা করে, সে দিকে তাকিয়ে আছেন সকলেই।

যেমন শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কিংশুক চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘পুজো হবে কোভিড নিয়ম মেনেই। কিছু ছাত্ররা অল্প অল্প করে অংশগ্রহণ করবে। তবে কোভিডের কারণে শোভাযাত্রা হবে না।’’ তিনি জানান, ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণি অনুযায়ী প্যাকেটে করে খাবার দেওয়া হবে, পুজোর পরে পড়ুয়াসংখ্যা ভাগ-ভাগ করে। এ ছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। যাঁরা প্রতিমা দর্শন করতে আসবেন, তাঁদের সকলের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। এ ছাড়াও স্যানিটাইজ়ার, থার্মাল গান চেকিং-এর ব্যবস্থা থাকবে।

আবার, চাকদহ রামলাল একাডেমির প্রধান শিক্ষক রিপন পাল জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে সরস্বতী পুজো করা হচ্ছে। তবে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে করে অভিভাবকদের নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সব কোভিড নিয়ম মেনেই করা হবে। এবার ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে বসে খাওয়ানোর কোনও ব্যবস্থা থাকবে না। পুজোর তিন দিন পরে প্যাকেটে করে খাবার দেওয়া হবে।’’

তবে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভিন্ন আয়োজন দেখা গিয়েছে কয়েকটি স্কুলে। সে সব জায়গায় পড়ুয়াদের পুজোর কাজে যুক্ত করা হচ্ছে না। যেমন কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুজো হলেও সেখানে ছাত্রছাত্রীদের কোনও অংশগ্রহণ থাকবে না। শিক্ষক ও অন্য কর্মীরা মিলেই পুজো করবেন এই বছর।’’ তবে তিনি জানাতে ভোলেননি, প্রিয় স্কুলের সরস্বতী পুজো দেখতে চেয়ে কোনও পড়ুয়া স্কুলে আসতেই পারেন, সেটা আটকানো হবে না। কিন্তু পুজো উপলক্ষে স্কুলে খাওয়াদাওয়ার পর্ব বন্ধ থাকবে এই বছর। প্রায় একই সুরে করিমপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চন্দ্রানী দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে পুজো হলেও তা ওই নিয়মরক্ষা মতোই করা হবে। ছাত্রীদের কোনও অংশগ্রহণ থাকছে না। আর খাওয়াদাওয়া বন্ধ থাকছে।’’

আবার, নাকাশিপাড়ার জেসিএম স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অংশুমান দে বলেন, ‘‘সরস্বতী পুজো হলেও ছাত্রছাত্রীদের কোভিড নিয়ম মেনেই অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। তবে খাওয়াদাওয়া বন্ধ থাকবে এই বছর।’’

কালীগঞ্জের মিরা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসিত মণ্ডল জানান, প্রতি বছরের মতোই পুজো হবে। স্কুলে বসে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে তাঁর কথায়, ‘‘সব কিছুই করা হবে কোভিড
নিয়ম মেনে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

saraswati puja Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE