Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বেতনে জুটল একটি পাঁচশো

মাসপয়লার বেতন নিতে গিয়ে প্রথম দিন ব্যাঙ্ক থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল মাস্টারমশাইদের। পরের দিন মিলেছিল মাথাপিছু মাত্র পাঁচশো টাকা করে। হতবাক মাস্টারমশাইদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সাফ জানিয়ে দিয়েছিল—টাকা নেই। তাই এর বেশি দেওয়া সম্ভব নয়।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১২
Share: Save:

মাসপয়লার বেতন নিতে গিয়ে প্রথম দিন ব্যাঙ্ক থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল মাস্টারমশাইদের।

পরের দিন মিলেছিল মাথাপিছু মাত্র পাঁচশো টাকা করে। হতবাক মাস্টারমশাইদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সাফ জানিয়ে দিয়েছিল—টাকা নেই। তাই এর বেশি দেওয়া সম্ভব নয়।

ডিসেম্বর মাসের বেতন নিতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতায় কার্যত বাকরুদ্ধ নবদ্বীপ উত্তর ও নবদ্বীপ গ্রামীণ চক্রের প্রায় তিনশো প্রাথমিক শিক্ষক। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা ওই ব্যাঙ্ক থেকে তাঁদের অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নিয়ে চেয়ে জেলার সহকারী স্কুল পরিদর্শকের কাছে যৌথ সাক্ষরিত আবেদন জমা দিয়েছেন। নবদ্বীপ উত্তর এবং নবদ্বীপ গ্রামীন চক্রের সহকারী স্কুল পরিদর্শক খাইরুল মিদ্দা বলেন, “ওই শিক্ষকরা তাঁদের দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন। আমি তাঁদের বক্তব্য নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে জানিয়ে দিয়েছি। যাতে পরের মাস থেকে মাস্টারমশাইদের বেতনের টাকা পেতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

নবদ্বীপ শহরের প্রাথমিক স্কুলগুলি তিনটি চক্রে বিভক্ত। এদের মধ্যে নবদ্বীপ উত্তর এবং নবদ্বীপ গ্রামীন চক্রের কয়েক’শো শিক্ষকের বেতন হয় বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের নবদ্বীপ তেঘড়িপাড়া শাখা থেকে। কিন্তু নোট বদলের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দেশজোড়া ডামাডোলের মধ্যে ডিসেম্বর মাসের বেতন তুলতে গিয়ে এমন অভাবনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি ওই শিক্ষকেরা।

ওই ব্যাঙ্ক থেকেই বেতন তোলেন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের নবদ্বীপ উত্তর চক্রের সভাপতি বিষ্ণুপ্রসাদ হাজরা। তাঁর অভিযোগ, “আমাদের যে সব সহকর্মীর নবদ্বীপের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে, তাঁরা চব্বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন। আর যাঁদের সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে তাঁরা দশ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। সেখানে আমাদের জন্য মাত্র পাঁচশো টাকা।”

তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নবদ্বীপ শহর চক্রের সম্পাদক লক্ষ্মণ সাহার কথায়, “ওই ব্যাঙ্ক থেকে যখন এত শিক্ষকের বেতন হয়, তখন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কি উচিত ছিল না আলাদা করে ব্যবস্থা নেওয়া। সব ব্যাঙ্ক দিতে পারলে ওরা পারবে না কেন? এই অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া উপায় কী?”

যদিও ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার আশিস বিদ জানিয়েছেন, “আমাদের যেমন টাকা দিচ্ছে, আমরা তেমনই গ্রাহকদের দিচ্ছি। আর টাকা কতটা আসবে, সেটা তো আর আমাদের হাতে নেই!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School teachers salary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE