Advertisement
E-Paper

হেলমেট না পরলে জরিমানা করবে স্কুল

স্কুলের প্রধান ফটকের পাশে খাতা হাতে বসেছেন দারোয়ান। সন্তানকে স্কুটিতে চাপিয়ে নিয়ে স্কুলে ঢুকছেন অভিভাবকেরা। দারোয়ান মাথার দিকে তাকিয়ে অভিভাবকদের নামের পাশে লিখছেন ‘হেলমেট’ অথবা, ‘নো হেলমেট’।

অনল আবেদিন

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০১:৪৭
ফাঁকা: মাথা বাঁচাতে তোয়ালে? কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা: মাথা বাঁচাতে তোয়ালে? কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের প্রধান ফটকের পাশে খাতা হাতে বসেছেন দারোয়ান। সন্তানকে স্কুটিতে চাপিয়ে নিয়ে স্কুলে ঢুকছেন অভিভাবকেরা। দারোয়ান মাথার দিকে তাকিয়ে অভিভাবকদের নামের পাশে লিখছেন ‘হেলমেট’ অথবা, ‘নো হেলমেট’। বড়ঞার কুলি-কাটনা এলাকার ‘জাগৃতি পাবলিক স্কুল’ ও পাশের ‘প্রগতি শিক্ষা নিকেতন’ নামের দু’টি বেসরকারি স্কুলের মোট ৯০০ পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের উপরেই কেবল ওই দস্তুর চালু হয়নি। ওই নিয়ম লাগু হয়েছে ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের ওই দু’টি স্কুলের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে ১৫০ জনের উপরেও। হেলমেট না থাকলে জরিমানা চাপবে সবার ঘাড়ে। কেমন সেই জরিমানা?

প্রতি মাসে অভিভাবকেরা স্কুলে তাঁদের সন্তানদের মাস মাইনে জমা দেন। সেটা নেওয়ার সময় দারোয়ানের খাতাটি থাকবে করণিকের টেবিলে। সেই খাতায় অভিভাবকের নামের পাশে ‘নো হেলমেট’ লেখা থাকলে মাসিক মাইনের সঙ্গে গুনতে হবে জরিমানার ১০০ টাকা। এখানেই শেষ নয়। নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীর নিয়ম-শৃঙ্খলার জন্য ধার্য রয়েছে ২০ নম্বর। মুর্শিদাবাদ ‘জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি’ (সিডব্লিউসি)-র চেয়ারপার্সন শবনম রামস্বামী ওই দু’টি স্কুলেরও প্রতিষ্ঠাতা অধিকর্তা। তিনি বলেন, ‘‘হেলমেট না পরলে পডুয়াদের ২০ নম্বর থেকে নম্বর কেটে নেওয়া হবে।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, হেলমেট না পরে স্কুলে এলে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের থেকে কড়া শাস্তির কোপে পড়বেন স্কুলের দু’টির শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরাও। তাঁদের কাছ থেকেই পড়ুয়ারা নিয়ম-শৃঙ্খলা শেখে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা হেলমেট না পরলে তার কুপ্রভাব পড়বে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের উপরে।

বুধবার ভোরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মানব দত্ত (৪২) ও তাঁর সাড়ে ন’বছরের ছেলে অর্ঘ্য দত্তের। অর্ঘ্যের মাথায় হেলমেট ছিল না। বড়ঞার ইন্দ্রাণী গ্রামের বাসিন্দা অর্ঘ্য জাগৃতি পাবলিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। ওই দুঃসংবাদ স্কুলে পৌঁছতেই শবনম রামস্বামী ঘোষণা করেন, ‘‘কোনও শিক্ষক, বা অশিক্ষক কর্মী হেলমেট না পরে এলে, জরিমানা হিসেবে সেদিনের বেতন কাটা যাবে। জরিমান দিতে হবে পড়ুয়া ও অভিভাবকদেরও।’’

গত ৭ এপ্রিল বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ এর একটি অনুষ্ঠানে জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘এই কর্মসূচির কারণে পথ দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর হার কমেছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এ জেলায় পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ৪৪ জন। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই সংখ্যাটা অর্ধেক, ২২ জন।’’ অভিভাবকদের অনেকেই বলছেন, ‘‘ভাল উদ্যোগ। এ বার আমরাও হেলমেট পরেই আসব।’’

Helmet School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy