Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিখোঁজ বৃদ্ধকে বাড়িতে ফেরাল সোশ্যাল মিডিয়া

বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। তাই পরিবারের লোকজন শনিবার থেকে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ৭৮ বছরের নিতাই সরকারকে। শেষে শান্তিপুরের দুই সংস্থাই সরকার পরিবারের কাছে সান্টা ক্লজ হয়ে উঠল।

হাসপাতালে নিতাই। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে নিতাই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৯
Share: Save:

বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। তাই পরিবারের লোকজন শনিবার থেকে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ৭৮ বছরের নিতাই সরকারকে। শেষে শান্তিপুরের দুই সংস্থাই সরকার পরিবারের কাছে সান্টা ক্লজ হয়ে উঠল।

নবজাগরণ ও সায়েন্স ক্লাব— ওই দুই সংস্থার উদ্যোগেই বুধবার বাড়ি ফেরেন নিতাই। ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সরকার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই দুই সংগঠন।

বৃদ্ধের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর সামান্য মানসিক সমস্যা রয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হন তিনি। এরপর তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাননি পরিবারের লোকজন। শেষপর্যন্ত তাঁর ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও হদিস মেলেনি। এরই মধ্যে, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সৌমেন দাস নামে এক ব্যক্তি প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে মুচিপাড়া এলাকায় এক বৃদ্ধকে রাস্তার ধারে শুয়ে থাকতে দেখেন। গায়ে শুধুমাত্র একটি ছেঁড়া কম্বল। প্রচণ্ড শীতে তখন রীতিমতো কাঁপছেন তিনি। সৌমেন খবর দেন দিব্যেন্দু চক্রবর্তী নামে আর এক ব্যক্তিকে। এর পরে দিব্যেন্দুই বিষয়টি জানান, শান্তিপুর নবজাগরণ এবং সায়েন্স ক্লাবের সদস্যদের। দুই সংস্থার সদস্যরা সেখানে পৌঁছে বৃদ্ধের জন্য প্রথমে শীত পোশাকের ব্যবস্থা করেন। দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে বৃদ্ধকে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়।

এর পরে বৃদ্ধের নাম-ঠিকানা জানার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু তখন তিনি কিছুই বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। সেখানে উপস্থিত অনুপম সাহা, সুব্রত মৈত্র, রমাপ্রসাদ ভট্টাচার্য, দিব্যেন্দুর মতো কয়েক জন গোটা ঘটনা লিখে এবং বৃদ্ধের ছবি দিয়ে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন এবং হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেন। কৃষ্ণনগরের এক ব্যক্তি সেই পোস্ট দেখে শক্তিনগরের এক পরিচিতকে জানান। তিনিই বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দেন বৃদ্ধের। পরে বাড়ির লোকজন চলে যান শান্তিপুরে। বৃদ্ধের আধার কার্ড-সহ যাবতীয় প্রমাণপত্র দেখানোর পরে তাঁকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাঁকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক সংস্থার সদস্য সুব্রত বলেন, “বৃদ্ধকে এ ভাবে পড়ে থাকতে দেখে খারাপই লেগেছিল। তিনি যাতে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারেন সেই চেষ্টাই করেছি।’’

বৃদ্ধের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগেও বেশ কয়েকবার তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। পরে এলাকার বাসিন্দারাই তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। বৃদ্ধের নাতি সুমিত সরকার বলেন, “দাদুর সামান্য মানসিক সমস্যা আছে। আগেও কয়েক বার এ রকম হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Missing Social Media
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE