Advertisement
০৪ মে ২০২৪
ধানতলা

ঝড়ে ভাঙল বাড়ি, ক্ষতি সব্জি চাষেও

ঘরের কোনও চিহ্ন নেই। খোলা আকাশের নীচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ঘরের যাবতীয় আসবাব, জিনিসপত্র। অথচ চব্বিশ ঘণ্টা আগেও এটাই ছিল শান্তিলতা সিংহের ঘর। ওই প্রৌঢ়া বলছেন, ‘‘ঝড়ের সময় ভাগ্যিস ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। না হলে কী যে হত তা ভাবতেই পারছি না!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৬
Share: Save:

ঘরের কোনও চিহ্ন নেই। খোলা আকাশের নীচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ঘরের যাবতীয় আসবাব, জিনিসপত্র। অথচ চব্বিশ ঘণ্টা আগেও এটাই ছিল শান্তিলতা সিংহের ঘর। ওই প্রৌঢ়া বলছেন, ‘‘ঝড়ের সময় ভাগ্যিস ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। না হলে কী যে হত তা ভাবতেই পারছি না!’’

একই অবস্থা তপন বিশ্বাসেরও। খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাঁর বাড়ির চারটে দেওয়াল। ঝড়ে উড়ে গিয়েছে টিনের চাল। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে তাঁর এগারো বছরের মেয়ে। চোখের সামনে ঘরের চাল উড়ে যেতে দেখেও কিছু করতে পারেননি পেশায় কাঠমিস্ত্রি গোপাল বিশ্বাস। তিনিও সেই সময় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাতের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানতলার কুশাবেড়িয়া, বহিরগাছি, আড়ংঘাটা এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি। বেশ কিছু এলাকায় রাস্তার উপরে গাছ ভেঙে পড়ায় বেশ কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঝড়ের পর থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এই ঝড়ে ফুল ও সব্জির ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। রানাঘাট ২ বিডিও সায়ন্তন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রিপল ও পোশাক পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সাহায্য করা হবে।’’

বুধবার সকালে কুশবেড়িয়া বাজারে গিয়ে দেখা গেল পড়ে থাকা গাছ সরিয়ে রাস্তা পরিস্কারের কাজ চলছে। তার পাশ দিয়েই কোনও রকমে যানবাহন চলছে। গ্রামের রাস্তার ধারে বাড়ি বিমল বিশ্বাসের। ঘরের পিছনের বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে তাঁর ঘরের উপর। পেশায় কাঠমিস্ত্রি বিভূতিকুমার দাস বলছেন, ‘‘৪৭ বছর বয়সে এমন ঝড় এই প্রথম দেখলাম। রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘরে বসে কাজ করছিলাম। তখনই ঝড় শুরু হয়। প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে রীতিমতো তাণ্ডব চলল।’’

স্থানীয় বাসিন্দা হজরত মণ্ডল এ বার ১৫ কাঠা জমিতে পটল চাষ করেছিলেন। ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে পটলের লতা। হজরত বলেন, ‘‘খেতের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। এক ঝড়ে সব শেষ!’’ স্থানীয় আর এক চাষি সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধার চাষ করেছিলাম। ঝড়ে গাছ ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে কলা চাষেরও।’’

ঝড়ের পরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। রানাঘাট ২ ব্লক বিজেপি-র সভাপতি অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি, শাসক দলের পক্ষ থেকে একটা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যে তালিকায় এমন অনেকের নাম রাখা হচ্ছে যাঁদের কোনও ক্ষতি হয়নি। সেই কারণে আমরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছি। সেই তালিকা আমরা বিডিও-র কাছে জমা দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE