Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
uniform

হাতা ঝুলছে, প্যান্টও বড়, সমস্যায় পড়েছে ডোমকলের একাধিক স্কুলের বহু পড়ুয়া

ডোমকল চক্রের গঙ্গা দাসপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক  পড়ুয়া দিন কয়েক আগে নতুন পোশাক পরে হাসি মুখে স্কুলে গিয়েছিল।

স্কুলের পোশাক নিয়ে সমস্যায় পড়ুয়ারা।

স্কুলের পোশাক নিয়ে সমস্যায় পড়ুয়ারা।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২২ ০৯:৩১
Share: Save:

কারও স্কুলে গিয়ে প্যান্ট খুলে যাচ্ছে, কারও আবার বসার সময় ফেটে যাচ্ছে সেলাই। অনেকেই লজ্জায় পরতে পারছে না সেই পোশাক। আর এই পোষাক নিয়ে রীতিমতো হাসির খোরাক হতে হচ্ছে ডোমকল এলাকার প্রাথমিকের পড়ুয়াদের।

Advertisement

অভিভাবক থেকে শিক্ষকদের দাবি, কেবল এখানেই শেষ নয়। ক্ষুদে পড়ুয়াদের যে পোশাক দেওয়া হয়েছে তার কাপড় অত্যন্ত নিম্নমানের বলেও অভিযোগ শিক্ষক থেকে অভিভাবক মহলে। এমনকি পোশাক তৈরি নিয়ে ক্ষোভ চরমে। অভিযোগ যেমন খুশি একটা পোশাক তৈরি করে দিলেই হল এমন একটা ভাব কর্তৃপক্ষের। যদিও পোশাক তৈরির দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলি মানতে চায়নি এই অভিযোগ। তাদের দাবি, সামান্য কিছু পড়ুয়াদের মাপের হেরফের হয়েছে। সেটা ফেরত নিয়ে আবারও ঠিক করে দেওয়া হবে। তবে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের কাছেও বেশ কিছু স্কুল অভিযোগ জানিয়েছে। তারা পোষাক তৈরির দায়িত্বে থাকা সংস্থার সঙ্গে কথা বলে সেগুলিকে পুনরায় ঠিক করে দেওয়ার জন্য বলেছেন। আর কাপড় নিয়ে মুখ ব্লক প্রশাসনের দাবি, যে কাপড় পাঠানো হয়েছে, তাই ব্যবহার হয়েছে।

ডোমকল চক্রের গঙ্গা দাসপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া দিন কয়েক আগে নতুন পোশাক পরে হাসি মুখে স্কুলে গিয়েছিল। কিন্তু ফেরার পথে তার মুখ ছিল ব্যাজার। অবশেষে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন স্কুলে গিয়েই তার নতুন প্যান্টের পিছন দিকটা ফেটে গিয়েছে। ফলে তাকে নিয়ে বন্ধুরা হাসি ঠাট্টাও করেছে। তার মায়ের অভিযোগ, ‘‘কেবল কাপড়ের মান খারাপ তাই নয়, তৈরির মান খুব খারাপ। কোনও ক্রমে দায়সারা ভাবে পোশাক তৈরি করা হয়েছে যার ফলে এমন ঘটনা ঘটছে।’’

অভিভাবকদের দাবি, কখনও দেখা যাচ্ছে জামার বোতাম নেই, বোতাম আছে তো তার ঘাট নেই। পরতে গিয়ে কখনও এতটাই ঢিলেঢালা হয়েছে যে খুলে পড়ে যাচ্ছে প্যান্ট। আবার কোনওটা পরাই যাচ্ছে না টাইট হওয়ার ফলে। ডোমকলের লক্ষ্মীনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার ঠাকুমার দাবি, ‘‘পোশাক শুধু নিম্নমানের নয়, এতটাই বেমানান ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন দেখা যাক কত দিনে স্কুলের তরফে নতুন পোশাক দেওয়া হয়।’’

Advertisement

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রূপা পাল বলছেন, ‘অভিভাবকেরা প্রায়ই অভিযোগ নিয়ে আসছেন। কারও জামার বোতাম নেই, কোনটার আবার ঘাট নেই। তা ছাড়া ছোট-বড় নিয়েও অভিযোগ পেয়েছি। আর কাপড়ের মান নিয়ে আমরা অভিযোগ করেছিলাম গোষ্ঠীর মেয়েদের। তারা জানিয়েছে, যে কাপড় তাদের দেওয়া হয়েছে দফতরের পক্ষ থেকে, সেই কাপড় দিয়েই তারা পোশাক বানিয়েছে।’’

কোথাও জামার হাত পাঁচ সাত ইঞ্চি বড়। কোথাও প্যান্ট যেন বারমুডা। ডোমকলের বিলাসপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলছেন, ‘‘পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে কোনও রকমের মাপ যোগ নেওয়া হয়নি স্কুল থেকে। অনুমানের ভিত্তিতেই সম্ভবত তৈরি করা হয়েছে পোশাক। ফলে পোশাক নিয়ে আমরা রীতিমতো বিড়ম্বনায় পড়েছি। ’’

তবে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ডোমকল মহাসঙ্ঘের সম্পাদক সামসেদা বেগমবলছেন, ‘‘অনেক পোশাক এক সঙ্গে এবং দ্রুত তৈরি করতে গিয়ে হয়তো কিছু ভুল ত্রুটি থেকেছে। কিন্তু আমরা শিক্ষকদের বলেছি, অসুবিধা হলে পোশাক ফেরত দিতে। আমরা নতুন করে বানিয়ে দেব। তবে কাপড়ের ক্ষেত্রে বলতে পারি, যে কাপড় রাজ্য থেকে পেয়েছি, সেটা দিয়েই পোশাক তৈরি করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.