চলছে মারধর।—নিজস্ব চিত্র।
জমি নিয়ে গোলমালে নাম জড়াল তৃণমূলের এক যুবনেতার। অভিযোগ, জমি কেনাবেচার ব্যবসায় অংশীদার না করায় ঐতিহ্য রক্ষার নামে ক্রেতাদের ওই জমি থেকে উৎখাত করতে চাইছেন ওই তৃণমূল নেতা-সহ এলাকার কিছু যুবক।
মঙ্গলবার দুপুরে কাশিমবাজার রাজবাড়ি লাগোয়া এলাকায় মোটরবাইক বাহিনী নিয়ে এসে জমি বিক্রেতাদের মারধর করে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। ঘটনায় জখম হন তিন ব্যক্তি। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল। ওই দিন পুলিশি প্রহরায় কাশিমবাজার রাজবাড়ি সংলগ্ন বিঘা পাঁচেক জমিতে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেন জনা কয়েক ব্যবসায়ী। তাঁদের দাবি, ২০০০ সালে প্রয়াত মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর নাতি সৌমেন্দ্রচন্দ্র নন্দী ওই জমিটি তাঁদের বিক্রি করে দেন। কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া পর প্লট করে জমি বিক্রির কাজ শুরু হয়। বর্তমান মালিকের হয়ে কাজ দেখভাল করেন চার-পাঁচ জন যুবক। অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে ২৫-৩০টি মোটরবাইকে চেপে প্রায় ৭০-৮০ জনের এক দুষ্কৃতী দল তাঁদের উপর চড়াও হয়। মারধর করে তাঁদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। মোটরবাইক বাহিনীর নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের স্থানীয় যুবনেতা মৃন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। মৃন্ময় বলেন, ‘‘রাজবাড়িটি হেরিটেজ। তার সামনের জমি এভাবে বিক্রি করা যায় না। তা ছাড়া আড়াই বিঘা খাস জমিও অবৈধ ভাবে জবরদখল করা হয়েছে। এলাকার মানুষের খেলাধূলা ও অবসর বিনোদনের প্রয়োজনে ওই জমি হস্তান্তর করা যাবে না। তাই মানুষজনকে নিয়ে প্রতিরোধে সামিল হয়েছি।’’
যদিও ব্যবসায়ীদের একজন শঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই জমির কোনও অংশই খাস নয়। জমি বৈধ ভাবে কিনেছি। তার নথিপত্রও রয়েছে। বিচারকের রায়ে পুলিশ প্রহরায় গত ১৮ এপ্রিল ওই জমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়েছিল। মৃন্ময়বাবু ও তার দলবল সেই বেড়া ভেঙে দিয়েছেন।’’
জমি বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন রাজবাড়ির বর্তমান ম্যানেজার কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্যও। তিনি জানান, ২০০০ সালে রাজবাড়ির সামনের দিকে আনুমানিক পাঁচ বিঘা জমি শঙ্কর রায়চৌধুরীদের বিক্রি করেন রাজকুমার সৌমেন্দ্রচন্দ্র নন্দী।
শঙ্করবাবুর দাবি, ‘‘ওই জমি কেনাবেচায় মৃন্ময়বাবু ও তাঁর বাবা অংশীদার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই আব্দার মানা হয়নি বলে ঐতিহ্য রক্ষার অজুহাত তুলে এলাকার মানুষকে খেপিয়ে তুলছেন।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে মৃন্ময়বাবু বলেন, ‘‘আমাকে ওরাই অংশীদার করতে চেয়েছিল। আমিই রাজি হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy