Advertisement
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

খেত পাহারা দিয়েই পুজো কাগ্রামে

ধানখেত পাহারা দিয়েই জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করে কাগ্রাম। কন্দি মহকুমার সালার থানা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম, কাগ্রাম। গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি, এই পুজোর খরচ উঠে আসে গ্রামের ধানখেত পাহারা দিয়ে।

কৌশিক সাহা
কান্দি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০০:১১
Share: Save:

ধানখেত পাহারা দিয়েই জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করে কাগ্রাম। কন্দি মহকুমার সালার থানা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম, কাগ্রাম। গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি, এই পুজোর খরচ উঠে আসে গ্রামের ধানখেত পাহারা দিয়ে।

গ্রামে মোট ২৩টি জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। তার মধ্যে ১৩টি পুজো পারিবারিক ও বাকি দশটি পুজো সর্বজনীন। গ্রামের বেশির ভাগ লোকজন কৃষিকাজের উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করেন। ফলে পুজোর সব টাকাটাই চাঁদা থেকে আসে না। পুজো করার জন্য প্রত্যেকটি পাড়ার লোকজন নিজের এলাকায় ধানের খেত পাহারা দিয়ে সেখান থেকেই পুজোর খরচ জোগাড় করেন।

যেমন ওই গ্রামের দক্ষিণপাড়া সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। তারা প্রায় ৭০০ বিঘা জমি পাহারা দিচ্ছে। ধান পাকার সময় বিঘা প্রতি জমি থেকে দশ গণ্ডা (৪০ আঁটি) ধান পাহারদারদের দেওয়া হয়। পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের দাবি, ওই ধানের খেত পাহারা দেওয়ার জন্য পাড়ার ছ’জনকে কমিটির পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই ধান পাহারা দেন। পাহারা দিয়ে যে পরিমাণ ধান আদায় হত তার অর্ধেক দেওয়া হয় পাহারাদারদের। বাকি অর্ধেক জমা হয় পুজো কমিটির তহবিলে। সেখান থেকে পুজোর একটা বড় খরচ উঠে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আগে গ্রামের জমিদার বাড়িতেই জগদ্ধাত্রী পুজো হতো। কিন্তু বারোয়ারি পুজো হতো না। এ দিকে, সেই সময় ধান খেত থেকে প্রায়ই ধান চুরি হয়ে যাচ্ছিল। তখন গ্রামের প্রবীণেরা সিদ্ধান্ত নেন, ধানখেত পাহারা দিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজো করা যেতে পারে। সেই থেকেই শুরু বারোয়ারি পুজো। দক্ষিণপাড়া পুজো কমিটির সম্পাদক চন্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা নিজেদের পাড়ার বাইরে কোনও বাড়িতে চাঁদা নেওয়া হয় না। চাঁদা নিয়েও আমরা কাউকে চাপ দিই না। ধানখেত পাহারা দিয়েই পুজোর অর্ধেক খরচ উঠে আসে।”

পশ্চিমপাড়া পুজো কমিটির সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “১২৮ বছর ধরে আমাদের পুজো এ ভাবেই হয়ে আসছে। এ বার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বাজেট। তার মধ্যে ধানখেত পাহারা দিয়েই প্রায় দেড় লক্ষ টাকা উঠে আসবে।” দক্ষিণপাড়া, উত্তরপাড়া, সাহাপাড়া, বাজারপাড়া, মধ্যসাহাপাড়া, পূর্বপাড়া প্রত্যেক পাড়ারই নিজস্ব মাঠ আছে। সেই জমি পাহারা দিয়েই পুজো সামাল দেয় কাগ্রাম।

গ্রামের বাসিন্দা তথা ভরতপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “কাগ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজোয় সারা গ্রাম কী ভাবে সেজে ওঠে সেটা না দেখলে বোঝা যাবে না। পুজোর দিন গ্রামের বাসিন্দা ছাড়াও সালার থানা ও কান্দি মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসেন কাগ্রামে পুজো দেখতে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE