Advertisement
E-Paper

পরীক্ষায় পাল্লা ভারী ছাত্রীদের

মাধ্যমিকে যা দেখা গিয়েছিল, সেই ধারা স্পষ্ট উচ্চ মাধ্যমিকেও। দু’টি পরীক্ষাতেই ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। যা সম্ভবত রুজির খোঁজে ছেলেদের স্কুলছুট হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করছে।

বিমান হাজরা ও সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০১:১৮

মাধ্যমিকে যা দেখা গিয়েছিল, সেই ধারা স্পষ্ট উচ্চ মাধ্যমিকেও।

দু’টি পরীক্ষাতেই ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। যা সম্ভবত রুজির খোঁজে ছেলেদের স্কুলছুট হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করছে। তবে প্রশাসনের কর্তারা এর মধ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্যও দেখছেন। তার মানে এই নয় যে বিয়ে করে নাবালিকারা স্কুল ছেড়ে চলে যাচ্ছে না। কিন্তু রুজির জন্য ছেলেদের স্কুল ছাড়ার হার তার চেয়ে বেশি।

মুর্শিদাবাদ জেলায় মাধ্যমিকে এ বার ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী বেশি ছিল প্রায় ১৮ শতাংশ, উচ্চ মাধ্যমিকে ১০ শতাংশ। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা যেখানে ছিল প্রায় ৫৯ শতাংশ, ছাত্রের সংখ্যা মোটে ৪১ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে সেখানে ছাত্রের সংখ্যা ৪৫ শতাংশ, বাকি ৫৫ শতাংশ ছাত্রী।

একই ছবি নদিয়াতেও। গত বছর মাধ্যমিকে ছাত্র ছিল ৪৭ শতাংশ, ছাত্রী ৫৩ শতাংশ। ফারাক অন্তত ৬ শতাংশের। এ বারে ছাত্র ৪৬ শতাংশ, ছাত্রী ৫৪ শতাংশ। ফারাক দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। মুর্শিদাবাদে ২০১৫-য় মাধ্যমিকে ছাত্রী ছিল ৫৭ শতাংশ। ফারাক ১৪ শতাংশের। পরের বছর ছাত্রীর সংখ্যা ৫৮ শতাংশ, ফারাক বেড়ে ১৬ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে ২০১৫-য় ফারাক ছিল ৬ শতাংশ, পরের বছর বেড়ে ৮ শতাংশে দাঁড়ায়।

কেন এই প্রবণতা?

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নদিয়া জেলা আহ্বায়ক প্রশান্ত দে বলছেন,
“মূলত দু’টি কারণে এই ফারাক
তৈরি হচ্ছে। এক, ছেলেরা একটু বড় হলেই কাজের খোঁজে পড়াশোনা ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে বা দেশে চলে যাচ্ছে। উল্টো দিকে, মেয়েরা একেবারেই পড়াশোনা ছাড়তে চাইছে না। তার মূল কারণ কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা।” প্রবণতাটা ধরা পড়ছে স্কুলস্তরেও।

এ বার সুতির গোঠা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছে ৯৪৬ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ৫৮০, ছাত্র ৩৬৬। এরা ২০১১ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। তখন যে ১২৫০ জন ভর্তি হয়েছিল, তার মধ্যে ছাত্র ছিল ৫১ শতাংশ। মাধ্যমিকে ৩৯ শতাংশে তা নেমে এল কেন?

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস তিওয়ারির মতে, “মেয়েদের মধ্যে পড়ার তাগিদ কিছুটা বেড়েছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তা বলে গোটা বিষয়টা কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফল হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। বরং একটা বড় কারণ হল, ১৩-১৪ বছরে পড়লেই ছেলেরা বাবা-দাদার হাত ধরে কাজে চলে যাচ্ছে।”

হাটখোলা হাইমাদ্রাসার পরীক্ষার্থী ছিল ৯৯ জন। তার মধ্যে ছাত্রী প্রায় ৬০ শতাংশ। উলাশি জে এস বিদ্যাপীঠের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ১০৫ জন। তার মধ্যে ছাত্র ৪৫। জঙ্গিপুরে শ্রীকান্তবাটি হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ৪৮০ জন, ৫৫ শতাংশই ছাত্রী। প্রধান শিক্ষক উৎপল মণ্ডলের আক্ষেপ, “যত উপরের ক্লাসে উঠছে, তত ফারাকটা তত বাড়ছে।”

মির্জাপুর বয়েজ হাইস্কুলে ২০১১-তে পঞ্চম শ্রেণিতে ৩০০ ছাত্র ছিল। এ বার মাধ্যমিক দিয়েছে ১৮১ জন। প্রধান শিক্ষক বিরাট বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, “গত পাঁচ বছরে ১১৯ জন ছাত্র হারিয়ে গিয়েছে। বিষয়টা ভয়ঙ্কর দিকে যাচ্ছে।” মুর্শিদাবাদের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ পাল বলেন, “ছাত্রদের স্কুলছুট হওয়া যে ভাবেই হোক রুখতে হবে।”

কী ভাবে? তার হদিস অবশ্য কেউ দিতে পারেননি।

HS Examination
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy