চলছে ভাঙচুর। ছবি: কৌশিক সাহা।
আসানসোলের পর এ বার কান্দি। ফের শিক্ষকের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবং, এখানেও মূলে রইল তৃণমূলের সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই। তৃণমূল সমর্থকদের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হলেন কান্দির বড়ঞা থানার কুলি কোলেশ ঘোষ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল খোলার আগে স্কুলের কিছু ছাত্রের সঙ্গে বাইরের ছেলেদের মারপিট হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পথে নামে স্কুলের ছাত্ররা। তাদের মদত দেন বড়ঞা উত্তর ব্লকের সভাপতি জর্জ শেখ এবং তাঁর অনুগামীরা। ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়ক অবরোধ করেন। শিক্ষকরা যাতে বাধা দিতে না পারেন, সে জন্য তাঁদের টিচার্স রুমে তালা বন্ধ করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ।
শিক্ষকদের দাবি, বন্দী অবস্থাতেই তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। কিন্তু পুলিশ আসেনি। তার বদলে স্কুলে হাজির হয় বহিরাগতদের একটি দল। সকাল ১০টা নাগাদ তারা তালা খুলে স্কুলে ঢুকে সোজা হাজির হয় টিচার্স রুমে। কলার ধরে টেনে প্রধান শিক্ষককে ঘরের বাইরে বের করে আনে তারা। তার পর শুরু হয় মারধরের পালা। প্রথমে তারা অনবরত কিল-চড়-লাথি মারতে থাকে প্রধান শিক্ষককে। মারের চোটে প্রধান শিক্ষক মাটিতে পড়ে গেলে লাঠি দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। এর পর অন্য শিক্ষকদেরও টিচার্স রুম থেকে বের করে এনে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙতে থাকে বহিরাগতদের ওই দল। স্কুলের সব আসবাবের সঙ্গে ভেঙে ফেলা হয় ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতিও। শিক্ষকদের দাবি, ঘটনার সময়ে পুলিশ উপস্থিত ছিল স্কুল চত্বরেই। কিন্তু, তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
ঘটনায় প্রধান শিক্ষক নিয়ত হোসেন সরাসরি আঙুল তুলেছেন বড়ঞা উত্তর ব্লক সভাপতি জর্জ শেখের দিকেই। তিনি স্পষ্ট বলেন, “এটা জর্জ শেখের কাজ! আমি তৃণমূল করি। আমি বড়ঞা ব্লক সভাপতি জালালউদ্দিনের সমর্থক। জালালউদ্দিনকে জর্জ সহ্য করতে পারে না বলে এ ভাবে প্রতিশোধ নিয়েছে!”
অভিযুক্ত জর্জ শেখ অবশ্য প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ সম্পূর্ণ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তিনি ওই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
পাশাপাশি, ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আরও একটি দাবি তুলেছেন জর্জ শেখ। তাঁর বক্তব্য, যাঁদের বহিরাগত বলে দাবি করছেন প্রধান শিক্ষক, তাঁরা আসলে অভিভাবকের দল। প্রধান শিক্ষক অধিকাংশ দিনই ঠিক সময়ে স্কুল আসেন না। ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বার বার বলেও এ সবের প্রতিকার না হওয়ায় এ দিন স্কুলে চড়াও হন অভিভাবকরা!
পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। তবে প্রধান শিক্ষকের উপর আক্রমণ ঠেকাতে যে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, এই অভিযোগও অস্বীকার করেছে তারা। পুলিশের বক্তব্য, ঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে তারা পরিস্থিতি আয়ত্তে এনেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy