নষ্ট-রান্না: কে রাঁধবে, বিবাদ তা নিয়েই। তছনছ মিড-ডে মিলের রান্নাঘর। মঙ্গলবার সাদিখাঁর দেয়াড় প্রাইমারি স্কুলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
মিড-ডে মিল চালু করতে গিয়ে আবারও খণ্ডযুদ্ধ বাধল জলঙ্গির সাদিখাঁর দেয়াড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
মঙ্গলবার জলঙ্গির যুগ্ম বিডিও দীপক দেবনাথ ও মিড-ডে মিলের নোডাল অফিসার জার্জিস হোসেন পুলিশ নিয়ে স্কুলে যান। মূল গেটে তালা দিয়ে তিনটি গোষ্ঠীর মহিলারা রান্নাও শুরু করেন। কিন্তু খবর পেয়ে বাকি ২৯টি গোষ্ঠীর মহিলারা এসে চড়াও হন।
মুহূর্তের মধ্যে স্কুল চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ফেলে দেওয়া হয় সব্জি, চাল, ডিম। ভেঙে ফেলা হয় চুল্লি আর রান্নাঘরের কিছুটা অংশ। পরিস্থিতি খারাপ বুঝে কর্তারা পুলিশ নিয়ে স্কুল ছেড়ে চলে যান। প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামানের বলেন, ‘‘দু’পক্ষের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে গত ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে মিড-ডে মিল টানা বন্ধ। এই সমস্যার সমাধান না হলে স্কুল চালানো আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে। ছাত্রছাত্রীরা এসে খাবারের কথা বলছে। এটা খুব কষ্টের।’’
২০০৮-০৯ সালে বাম আমলে স্কুলের রান্নার যাবতীয় দায়িত্ব গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে দেওয়ার নির্দেশ ছিল সরকারের। সে সময়ে ৩২টি গোষ্ঠীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেড় থেকে দু’বছর পরে এক-একটা গোষ্ঠী রান্নার সুযোগ পেত। জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএমের সাইফুল মোল্লা সেই সময়ে ছিলেন সাদিখাঁর দেয়াড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান।
তাঁর কথায়, ‘‘এখন সরাসরি রাঁধুনির অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার নিয়ম হয়েছে। ছাত্রের সংখ্যা অনুযায়ী রাঁধুনি নিয়োগের নির্দেশও আছে। ফলে ৩২টি গোষ্ঠীকে কাজ দেওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসন সব দিক খতিয়ে দেখে তিনটি গোষ্ঠীকে দায়িত্ব দিয়েছে। তা নিয়েই গণ্ডগোল। নিজেরা না মেটালে ওই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’’
বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীগুলির দাবি, বিশেষ কোনও কারণে প্রশাসন তিনটি গোষ্ঠিকে কাজ দিচ্ছে। যদি সত্যি শুধু তারাই কাজ পাওয়ার যোগ্য হয়, তা হলে তাঁরা দাবি ছেড়ে দেবেন। রাঁধুনি চাঁদমন বিবির অভিযোগ, ‘‘বিডিও বা প্রশাসন আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে নারাজ। পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে ওরা রান্না করতে চাইছে। সেটা হতে দেব না। হয় আমাদের কাজ দিতে হবে, অথবা বলতে হবে কেন আমাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।’’
যুগ্ম বিডিও দীপক দেবনাথ বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই মিড-ডে মিল চালু করার চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টা সফল হয়নি। ব্যর্থ হয়ে আমাদের ফিরে আসতে হয়েছে। গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy