ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালীন ভাঙচুরের ঘটনায় ইসলামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলেন মুর্শিদাবাদ আদর্শ মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও পুলিশ তা ‘এফআইআর’ হিসেবে গণ্য করেনি। বুধবার একটি সাধারণ ডায়েরি নেওয়া হয়েছে শুধু।
ইসলামপুর থানার যে ওসি-র বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল, তিনিও বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা একটা দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দূরে থাক, কোনও বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়নি।
মঙ্গলবার ডোমকলের ওই কলেজে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁকে মঞ্চে তুলে ‘অতিথি বরণ’ করতে হবে বলে আব্দার জুড়ে বসেছিলেন এলাকার এক যুব তৃণমূল নেতা। কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি। এর পরেই কিছু ছেলে ছাত্র সংসদ অফিস থেকে লাঠিসোটা এনে চেয়ার ভাঙচুর করে। অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষকদের সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয়।
রানিনগর ১ ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা ইমতিয়াজ কবির অবশ্য এর দায় নিতে চাননি। তাঁর দাবি, এটা ছাত্রদের নিজেদের বিষয়। কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনও গুরুত্ব না দেওয়াতেই গোলমাল বেধেছে। গণ্ডগোল শুরু হতেই তিনি যে কলেজ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন, সিসিটিভি ফুটেজেই তা দেখা যাবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পাল্টা বলছেন, যা ঘটার সকলের চোখের সামনেই ঘটেছে। যুবনেতার দলবল শুধু চেয়ার ভাঙচুর করে ক্ষান্ত হয়নি। লাঠি উঁচিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দিকেও তেড়ে গিয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বাসব ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’
এ দিন কলেজ চালু থাকলেও পরিবেশ ছিল থমথমে। ছাত্রছাত্রীর হাজিরাও ছিল কিছুটা কম। মুখ্যমন্ত্রী যখন বারবার বলছেন, বিক্ষোভের নামে ভাঙচুর বরদাস্ত করবেন না, তাঁরই দলের লোকজন কোন সাহসে সেই কাজ করছেন? তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, স্থানীয় ব্লক নেতৃত্বকে চাপে রাখতেই পুলিশের একটা অংশ ইমতিয়াজকে মাথায় তুলছে। সেই কারণেই গণ্ডগোলের সময়ে কলেজ থেকে ফোন করা হলে ইসলামপুর থানার ওসি সাহায্য করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। রানিনগর ১ ব্লক তৃণমূলের অনেকেই ইমতিয়াজ এবং পুলিশের এই আচরণে বিরক্ত।
পুলিশকর্তারা অবশ্য এখনও বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টাই করে যাচ্ছেন। এসডিপিও (ডোমকল) মাকসুদ হাসান এ দিনও দাবি করেন, ‘‘ছাত্রদের দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ভাঙচুরের খবর নেই।’’ পুলিশের অসহযোগিতা প্রসঙ্গে তার দাবি, ‘‘খবর পেয়েই পুলিশ ওখানে গিয়েছে। সহযোগিতা না করার অভিযোগ ঠিক নয়।’’
মঙ্গলবার দুপুর থেকেই মোবাইল বন্ধ করে বসেছিলেন ইসলামপুর থানার ওসি বিপ্লব কর্মকার। এ দিনও তাঁর নাগাল পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy