প্রতীকী চিত্র।
যুদ্ধ থামছে না তাদের।
দিন কয়েক আগে বেলডাঙায় তাদের চেষ্টাতেই রোখা গিয়েছিল পড়ুয়া নাবালিকার বিয়ে।
এ বার সুতির প্রান্তিক গ্রামে অসময়োচিত তিনটি বিয়ের প্রস্তুতিও রুখল প্রশাসন এবং তা কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের কাছে আগাম খবর পেয়ে। সোমবার, ওই যোদ্ধাদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারাও।
সুতির কন্যাশ্রী যোদ্ধার দলনেত্রী নাজেমা খাতুন বলছেন, “দিন কয়েক ধরেই কানে আসছি, ইদের আশেপাশেই বিয়ে ঠিক হয়েছে নিতান্তই বারো-চোদ্দো বছরের তিনটি মেয়ের। পাকা খবর পেতেই আমরা ছুটে গিয়েছিলাম পুলিশের কাছে। ওঁরা পাসে থাকায় আটকানো গিয়েছে ওই অকাল বিয়ে।’’ সোমবার, তাঁরা সবাই মিলে হাজির হয়েছিলেন, জগতাই পশ্চিমে মান্নান শেখের বাড়িতে। পাঁচ ভাই বোনের বড় টুম্পা খাতুন। পঞ্চগ্রাম হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। পাশের গ্রাম মহেন্দ্রপুরেই ঠিক হয়েছিল তার বিয়ে। বেলা আড়াইটা নাগাদ তাঁরা যখন সদলবলে গ্রামে গিয়েছেন তখন, বারান্দায় বিয়ের তোড়জোড়ই চলছিল বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মান্নান। তাঁকে বোঝানো হয়, এই বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে অকালে ‘ঝড়ে’ যাবে মেয়েটি। ওজর-আপত্তি শেষে মান্নান স্বীকার করেন, “ঠিক আছে, তোমরা যা বলবে, তাই হবে!’’
পাশের গ্রাম চাঁদরাতেও যোদ্ধাদের দলটি যখন পৌঁছয় তখন, সোনামনি খাতুনের বাড়িতে ম্যারাপ বাঁধা হচ্ছে। বাবা বিড়ি কারখানার কর্মী। মা মমতাজ বিবি বিড়ি শ্রমিক। সোনামনিও দশম শ্রেণির ছাত্রী বুঝিয়েসুঝিয়ে সে বিয়েও রোখা গিয়েছে এ দিন বলেই দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। একই ভাবে এ দিন তাঁরা বন্ধ করেছেন ওই গ্রামের সেলিম শেখের মেয়ে মেয়ের বিয়ে।
নাবালিকা বিয়ে বন্ধের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে সুতি। গত দেড় বছরে সুতির দুই ব্লকে ৮৪টি বিয়ে বন্ধ করা গেছে। ২০১৬ সালে সুতিতে নাবালিকা বিয়ে আটকানো গেছিল ৭৩টি। এবছরের গত ৫ মাসে বিয়ে বন্ধের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬।
স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সুতির সুপারভাইজর বিজয় হাজরাও ছিলেন সঙ্গে, তিনি বলেন, “বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে বহুবার গ্রামবাসীদের হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে। ডেকে নিয়ে যেতে হয়েছে পুলিশ ও ব্লকের বিডিওকে। এখন সে কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছে কন্যাশ্রী যোদ্ধারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy