Advertisement
E-Paper

আজ বিএডের পরীক্ষা শুরু, দোলাচলে ‘প্রতারিত’ পড়ুয়ারা

আজ, সোমবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালের অধীনে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৪০টি বিএড কলেজের পড়ুয়ারা পরীক্ষায় বসবেন। কিন্তু চাপড়ার ভক্তবালা বিএড কলেজের প্রতারিত ৩৯ জন পড়ুয়া কী ভাবে পরীক্ষা দেবেন, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০০:৪৪
ভক্তবালা বি এড কলেজ। —নিজস্ব চিত্র।

ভক্তবালা বি এড কলেজ। —নিজস্ব চিত্র।

আজ, সোমবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালের অধীনে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৪০টি বিএড কলেজের পড়ুয়ারা পরীক্ষায় বসবেন। কিন্তু চাপড়ার ভক্তবালা বিএড কলেজের প্রতারিত ৩৯ জন পড়ুয়া কী ভাবে পরীক্ষা দেবেন, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে ওই পড়ুয়ারা চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। এমনিতেই গত এক মাসে ভর্তি নিয়ে ডামাডোলে পড়াশোনা করার মানসিক অবস্থা ছিল না। তার উপর এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার বিষয়ে নিজেদের ঘাড়ে কোনও দায় রাখছেন না। এমতাবস্থায় পরীক্ষা দেওয়া-না দেওয়া দু’টোই সমান বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা। কেউ কেউ পরীক্ষায় না বসারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কল্যাণীর বাসিন্দা এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘অনিশ্চয়তার জন্য পরীক্ষার প্রস্তুতিই নিতে পারলাম না। দাবি জানিয়েছিলাম পরীক্ষা পিছোনোর। কিন্তু তা মানলেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার উপর নিজেদের দায়িত্বে পরীক্ষায় বসতে হবে। সব মিলিয়ে পরীক্ষায় না বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

নদিয়ার চাপড়ায় ভক্তবালা বিএড কলেজে লক্ষ-লক্ষ টাকা নিয়ে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির অভিযোগকে ঘিরে সম্প্রতি তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। কলেজ কতৃর্পক্ষ ছাড়াও টাকা নেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মী ও তৃণমূলের ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনিয়মের কথা জানতে পেরে কলেজের অনুমোদন বাতিল করে দেন এবং এই বছরও অতিরিক্ত পড়ুয়ারা পরীক্ষায় বসতে পারবে না বলে জানিয়ে দেন। পরে অবশ্য রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী প্রতারিত পড়ুয়ারা পরীক্ষায় বসতে পারবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু ওই পড়ুয়াদের মেথড পেপারের বিষয় কী হবে তা নিয়ে নতুন করে গোল বাধে। ইতিমধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতারিত ১৮ জন পড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলেন দুর্নীতির তদন্তে রাজ্য সরকার নিয়োজিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে নিশ্চিত আশ্বাস দিতে পারেননি তিনিও। সে দিন সন্ধ্যা পাঁচটা নাগাদ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিমলেন্দু বিশ্বাস ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে চূড়ান্ত আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘‘চলতি মাসের ৭ তারিখে ভুক্তভোগী পড়ুয়ারা তেহট্টের রেনুকাদেবী বিএড কলেজে গিয়ে পরীক্ষা দেবেন। আমি নিজে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকব। তবে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না।’’ পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে নিয়ম মতো মার্কশিট পাবেন কি না, সে বিষয়ে বিমলেন্দুবাবু খোলসা করে বলেননি। তিনি জানিয়েছিলেন, উপাচার্য রতনলাল হাংলুর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

শুক্রবার পরীক্ষা নিয়ামকের কার্যালয়ের তরফে প্রকাশিত হয়েছে একটি বিজ্ঞপ্তি। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, ‘ভক্তবালা বিএড কলেজের বাড়তি ৩৯ জন পরীক্ষার্থী নিজেদের দায়িত্বে পরীক্ষায় বসবেন। বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে কোনও দায় নেবে না। এনসিটিই-র সবুজ সঙ্কেত ছাড়া ওই পড়ুয়ারা রেজাল্ট পাবেন না।’ উল্লেখ্য, দিন পনেরো আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতারিত পড়ুয়াদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার জন্য এনসিটিইকে চিঠি পাঠিয়েছে। বিষয়টি এখনও এনসিটিই-র বিচারাধীন। পরীক্ষা নিয়ামকের বক্তব্য, ‘‘বিএডের ব্যাপারে এনসিটিই শেষ কথা বলে। বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে দায়িত্ব নেবে? এটা আইনবিরুদ্ধ। এনসিটিইকে সমস্যার কথা পুনরায় জানানো যেতে পারে বড়জোর।’’

এই সব শুনে মুষড়ে পড়েছেন প্রতারিত পড়ুয়ারা। এক ছাত্রী বলেন, ‘‘যে পরীক্ষার রেজাল্ট পাব কি না ঠিক নেই সে পরীক্ষা দিয়ে লাভ কী? তবু পরীক্ষা দেব। টাকা ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়। পরীক্ষা দিয়েই দেখি, যদি রেজাল্ট পাই। ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলাম।’’

b.ed exam dhubulia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy