Advertisement
E-Paper

আধার কার্ডে অশ্লীল শব্দ, ক্ষোভ প্রিয়নগরে

আধার কার্ডে নামের পাশে অশ্লীল গালাগালি লেখা। মাস দু’য়েক আগে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে এসেছিল। জানানো হয়েছিল সংশ্লিষ্ট অসরকারি সংস্থাটিকেও। এমনটাই দাবি করলেন ওই সংস্থার নদিয়া জেলা কো-অর্ডিনেটর অরণ্যপ্রতিম কুণ্ডু। অরণ্যবাবু-সহ বেশ ওই সংস্থার বেশ কয়েকজন আধিকারিক সোমবার দেখা করতে যান ভুক্তভোগিদের সঙ্গে। দেখা করেন চাকদহের বিডিও-র সঙ্গেও। তাঁরা জানান, ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুই যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৭

আধার কার্ডে নামের পাশে অশ্লীল গালাগালি লেখা। মাস দু’য়েক আগে বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে এসেছিল। জানানো হয়েছিল সংশ্লিষ্ট অসরকারি সংস্থাটিকেও। এমনটাই দাবি করলেন ওই সংস্থার নদিয়া জেলা কো-অর্ডিনেটর অরণ্যপ্রতিম কুণ্ডু।

অরণ্যবাবু-সহ বেশ ওই সংস্থার বেশ কয়েকজন আধিকারিক সোমবার দেখা করতে যান ভুক্তভোগিদের সঙ্গে। দেখা করেন চাকদহের বিডিও-র সঙ্গেও। তাঁরা জানান, ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুই যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। পাশাপাশি তাঁরা আশ্বাস দেন সংশোধিত আধার কার্ডের জন্য কবে ছবি তোলা হবে নাগরিকদের সুবিধামতো কোনও জায়গায়।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে আধার কার্ড এসেছে জেনে পোস্ট অফিসে তা আনতে গিয়েছিলেন মদনপুরের প্রিয়নগর গ্রামের বাসিন্দা নরেশ দাস। খাম খুলে দেখেন নিজের নামের পাশে ও বাবার নামের জায়গায় অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে। ভাই দীনেশের কার্ডেও নামের জায়গায় অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে। নাম-ঠিকানা ভুল হলেও না হয় মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু এমন ভুলের জন্য লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে তাঁদের। এতদিন আধার কার্ডে নাম, পদবি, বাবার নাম, ঠিকানা ভুল দেখা গিয়েছে। একের ছবি অন্যের জায়গায় বা পুরুষের জায়গায় মহিলার ছবি ছাপানো হয়েছে। কিন্তু ওই কার্ডগুলিতে যা লেখা হয়েছে তা ছাপারও অযোগ্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর খানেক আগে মদনপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রিয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের আধার কার্ডের জন্য ছবি ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা নেওয়া হয়েছিল। বছর পেরিয়ে ডাকযোগে সেই কার্ড আসা শুরু হয়েছে। দিন আটেক আগে নরেশবাবু ও দীনেশবাবু কার্ড হাতে পান। ইছাপুর রাইফেল কারখানার কর্মী দীনেশবাবু বলেন, “এমন অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।”

গ্রামের বাসিন্দা মনতোষ দাসের ইংরেজিতে লেখা নাম ঠিক থাকলেও বাংলার নামের জায়গায় অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে। পেশায় রাজমিস্ত্রি মনতোষবাবু বলেন, “কার্ড হাতে পেয়ে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না।” গ্রামের বাসিন্দা সুস্মিতা দাস এখনও অবিবাহিত। অথচ, তাঁর অভিভাবকের জায়গায় স্বামীর নাম ‘ইংলিশ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শিমুরালি তেমাথার বাসিন্দা ওষুধের দোকানের মালিক গোবিন্দ রায়ের অভিজ্ঞতা ততটা তিক্ত না হলেও তিনি জানান, পরিবারের চার সদস্যের আধারকার্ড হাতে পেয়েছেন। তার মধ্যে দু’জনের কার্ডে কোনও সমস্যা নেই। বাকি দু’জনের ঠিকানা ভুল এসেছে।

চাকদহের বিডিও বিপ্লব সরকার বলেন, “বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওই কার্ডগুলি ব্লক অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। সেগুলি আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠাব।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উৎপল ভদ্র বলেন, “কার্ডগুলো পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করব। কী কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে তা দেখা হচ্ছে। যে সংস্থা ওই কার্ড তৈরির দায়িত্বে ছিল প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ দিন বিকেলে প্রিয়নগরে নরেশ দাস ও দীনেশ দাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানেই অরণ্যবাবু বলেন, “আমরা জেলায় মোট ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার ১৪৫ টি ছবি তুলেছিলাম। বেশ কয়েকটি কার্ডে কিছু ভুল এসেছে। কিন্তু এই তিনটি কার্ডে যে ধরণের অশ্লীল শব্দ রয়েছে তা সত্যিই লজ্জাজনক। কিন্তু আমরা যখন বিষয়টি জানতে পারি, ততক্ষণে সব কিছু হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। তবে ঘটনায় যুক্ত দুই ডাটা অপারেটরকে চিহ্নিত করা হয়েছে।” ওই দুই যুবক উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটার বাসিন্দা শুভ ঘোষ এবং বাপি দেবনাথ। তাঁদের নামে পুলিশে অভিযোগ জানান হয়েছে বলেও জানান অরণ্যবাবু। কিন্তু ওই দুই যুবক পলাতক।

madanpur priyanagar abusive language adhar card
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy