Advertisement
E-Paper

ইন্দ্রনীলের হয়ে দেওয়াল লিখবেন হুমায়ুন

রাজনীতিতে সবই সম্ভব! গত ৫ মার্চ বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে বেছে নেওয়ার পরে অভিমানে ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নেওয়ার কথা বলেছিলেন প্রাক্তন প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। ঠিক তার সাত দিনের মাথায় সেই ইন্দ্রনীল সেনের গাড়িতে চড়ে তৃণমূলের কর্মিসভায় হাজির হলেন তিনি।

শুভাশিস সৈয়দ

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০৪:৫৩
কাঁধ মিলিয়ে। বহরমপুরে গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

কাঁধ মিলিয়ে। বহরমপুরে গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

রাজনীতিতে সবই সম্ভব!

গত ৫ মার্চ বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে বেছে নেওয়ার পরে অভিমানে ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নেওয়ার কথা বলেছিলেন প্রাক্তন প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। ঠিক তার সাত দিনের মাথায় সেই ইন্দ্রনীল সেনের গাড়িতে চড়ে তৃণমূলের কর্মিসভায় হাজির হলেন তিনি। বুধবার বহরমপুর ঋত্বিক সদনে ওই কর্মিসভায় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর উপস্থিতিতে হুমায়ুন বলেন, “ইন্দ্রনীলের হয়ে আমি দেওয়াল লিখব। প্রচার করব। কংগ্রেসের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থেকে নিজে তার মোকাবিলা করব। দল যে ভাবে ব্যবহার করবে, আমি সেই ভাবে ব্যবহৃত হব।” আর ইন্দ্রনীল জানিয়ে দিলেন, “হুমায়ুন ক্যাপ্টেন। আমি প্লেয়ার।”

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অসন্তোষ সামনে চলে এসেছিল। সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছিল জোরকদমে। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আগেই বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অনুপম হাজরাকে পাশে নিয়ে সভা করেছেন। মঙ্গলবার বনগাঁর খেলাঘর ময়দানে তৃণমূলের কর্মিসভায় খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে মেঘ কেটেছে মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর ও তাঁর ভাই মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের মধ্যেও। বুধবার হাত মেলালেন হুমায়ুন-ইন্দ্রনীল।

এই ‘সৌহার্দ্যে’র পিছনে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বকে অনেকটাই কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বলে দলের অন্দরের খবর। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থীর সপক্ষে ভোটে প্রচার করার কথা বলেছেন হুমায়ুনকে। এরপর গত ১০ মার্চ রাতে হুমায়ুনকে ফোন করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় এক নেতা ইন্দ্রনীলের হয়ে প্রচার করার নির্দেশ দেন।”

অধীর-দুর্গে লড়াইয়ে হুমায়ুনকে যে একান্ত প্রয়োজন, তা অবশ্য ইন্দ্রনীল সেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বহরমপুরে পা রেখেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। রাতেই তিনি ফোন করেছিলেন হুমায়ুন কবীরকে। হুমায়ুন সেই সময় কলকাতা থেকে ফিরছিলেন। এ দিন সকালে শক্তিপুরের বাড়ি থেকে হুমায়ুন সোজা চলে যান লালদিঘির হোটেলে, যেখানে ইন্দ্রনীল সেন রয়েছেন। তখন সকাল ১০টা। তাঁকে দেখে ইন্দ্রনীল সেন জড়িয়ে ধরেন। দু’জনে এক সঙ্গে চা খেয়ে কর্মিসভার উদ্দেশে রওনা হন। তাঁদের এক সঙ্গে দেখে কর্মীদের ভিড় থেকে স্লোগান ওঠে মুহুর্মুহু।

সভায় অধীরের নাম-না করে হুমায়ুন বলেন, “বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে যিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থী তাঁকে হারানো আমাদের এক মাত্র লক্ষ্য। তাঁকে হারাতে গেলে শুধু ফুলের বাতাস দিলে হবে না।” বক্তব্যের মধ্যে-মধ্যে ফুটে উঠছিল অভিমানের সুরও। হুমায়ুন বলেন, “কর্মিসভায় অনেক কিছু আলোচনা করার ছিল। কিন্তু দলের গঠনতন্ত্র মেনে প্রকাশ্যে সব কথা বলা উচিত নয়।” এর পরেই তিনি বলেন, “গত পুরসভা নির্বাচনে বহরমপুরের অনেক নেতা ন্যক্কারজনক ভূমিকা নিয়েছিলেন। সেটা যেন লোকসভা ভোটে না হয়।”

ইন্দ্রনীল অবশ্য ‘ঐক্যের চেহারাই’ দেখেছেন কর্মিসভায়। হুমায়ুন কবীরকে ‘কাজের মানুষ, কাছের মানুষ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “উনি তৃণমূল স্তরের কর্মী। লোকসভা এলাকার মাটি-ঘাস-মানুষ চেনেন। উনি ক্যাপ্টেন। আমি প্লেয়ার।”

lok sabha election indranil sen humaun kabir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy