Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কার্তিক পুজোয় থিম উৎসব, তৈরি হচ্ছে পলাশিপাড়া

এবার কার্তিক পুজোয় মেতেছে তেহট্ট। পলাশিপাড়া সেজে উঠেছে। দুর্গা জগদ্ধাত্রীর পাশাপাশি কার্তিক পুজোতেও থিমের ঢেউ লেগেছে গত কয়েক বছরে। পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা তাই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন থিম আর আলোকসজ্জার প্রতিযোগিতায়। পলাশিপাড়ায় সব মিলিয়ে প্রায় চল্লিশটি পুজো হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো পুজোটি পুরাতন বাজারের ‘আপনজন সঙ্ঘ’-এর।

চলছে প্রস্তুতি। তেহট্টের পলাশিপাড়ায় কল্লোল প্রামাণিকের ছবি।

চলছে প্রস্তুতি। তেহট্টের পলাশিপাড়ায় কল্লোল প্রামাণিকের ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

এবার কার্তিক পুজোয় মেতেছে তেহট্ট। পলাশিপাড়া সেজে উঠেছে। দুর্গা জগদ্ধাত্রীর পাশাপাশি কার্তিক পুজোতেও থিমের ঢেউ লেগেছে গত কয়েক বছরে। পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা তাই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন থিম আর আলোকসজ্জার প্রতিযোগিতায়।

পলাশিপাড়ায় সব মিলিয়ে প্রায় চল্লিশটি পুজো হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো পুজোটি পুরাতন বাজারের ‘আপনজন সঙ্ঘ’-এর। এ বছর ৪৩ বছরে পা দিচ্ছে এই পুজো। পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ সুশান্ত দাস বৈরাগ্য বলেন, “প্রায় চার দশক আগে বর্ধমানের কাটোয়া থেকে দেখে এসে এখানে প্রথম কার্ত্তিক পুজো শুরু করেন সুনীল দাস বৈরাগ্য, অদ্বৈত দাস বৈরাগ্য ও আরও অনেকে। তখন দু’দিনের অনাড়ম্বর পুজো হত। আলোকসজ্জা বা মণ্ডপসজ্জা তেমন কিছুই ছিল না। এখন এই পুজো হয় চার দিনের।” তিনিই জানালেন, এ বছর মণ্ডপ সাজানো হয়েছে ফোম দিয়ে। মূল মণ্ডপের পাশেই থাকবে আর একটি মণ্ডপ। যেখানে পরপর তিনদিন সন্ধ্যা থেকে রাত্রি পর্যন্ত দেখানো হবে পুতুলনাচ।

অন্যদিকে ‘মুক্তি সঙ্ঘে’র পুজো এ বছর ১৭ বছর পূর্ণ করবে। এই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা অনুপ দাস জানান, “আমাদের পুজোর প্রধান আকর্ষণ চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা। আর তা অবশ্যই চন্দননগরের। তাছাড়া মণ্ডপে বৃষ্টির আবহ তৈরি করা হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যেই কার্ত্তিককে দেখতে পাওয়া যাবে। বাচ্চাদের নজর কাড়ছে বৈদ্যুতিন হাতি, শুঁড় দিয়ে জল ছিঁটিয়ে দেবে সে। পুজোর আগেই বাচ্চাদের ভিড় জমতে শুরু করেছে হাতির কাছে।”

বহু বছর আগে এলাকায় প্রায় চারশোর বেশি বাড়িতে ছোট ছোট মানসিকের কার্তিক পুজো হত। নিয়ম অনুযায়ী পুজো শুরু হত কার্তিক মাসের সংক্রান্তির দিন। পরের দিন অর্থাৎ ১ অগ্রহায়ণ হত ঘট বিসর্জন। তাকে বলা হয় কার্তিক লড়াই। বিসর্জনের দিন প্রত্যেক প্রতিমার সঙ্গে দু’তিন জন লাঠিয়াল নিয়ে বাজারের রাস্তায়। সেই শোভাযাত্রা ছিল মানুষের অন্যতম আকর্ষণ। পরবর্তী কালে সেই পুজোয় এসেছে আধুনিকতার ছোঁওয়া। বিশাল বাজেটের পুজোই এখন রীতি। দু’দিনের বদলে উৎসব হয় চারদিনের। বিসর্জন হয় অগ্রহায়ণ মাসের চার তারিখ। এই পাঁচ দিনে দূর-দূরান্তের বহু মানুষ ভিড় করেন পলাশিপাড়ায়।

অগ্রণী সুভাষ সঙ্ঘের পুজোও বেশ পুরনো। ক্লাবের সহ-সম্পাদক প্রশান্ত হালদার বলেন, “এ বছর কাপড় ও থার্মোকল দিয়ে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানানো হয়েছে। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে প্রচুর গাছ।” তহ-বাজার মেন গেট কার্তিক পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক প্রভাত দাস বৈরাগ্য জানালেন তাঁদের পুজোর বৈশিষ্ঠ। তিনি বলেন, “আমাদের ২৫ বছরের পুজো। বাজারের ব্যবসায়ীরা মিলেই এই পুজোর আয়োজন করি। এ বছর আমাদের থিম মানুষের বিবর্তন। কোনও মূর্তি নয়। জীবন্ত মানুষই গোটা বিষয়টি তুলে ধরবে।” ঘট বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রায় ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের ‘ট্যাবলো’।

‘যুবক সঙ্ঘের’ পুজোর মণ্ডপে উঠে আসছে আদিম গুহা। এই পুজো এবার ৩৫ বছরে পা দিল। সুব্রত স্মৃতি সঙ্ঘের আকর্ষণ বীরভূমের লাল মাটির দেশ। বালিকা বিদ্যালয়ের কাছে স্টার ক্লাবের পুজো এবার ২১ বছরে পড়ল। রামনগরপাড়া জনকল্যাণ সঙ্ঘের পুজো ১৫ বছরে পুজোয় চন্দননগর থেকে আনা আলোকসজ্জায় দেখা যাবে ‘আইফেল টাওয়ার’। ও দিকে আলোকসজ্জায় কুতুবমিনার দেখা যাবে সিনেমাহলপাড়া ষষ্ঠীতলা পুজোয়। নাথপাড়া শতদল ক্লাব, বটতলাপাড়া, বাস স্ট্যান্ড পুজো কমিটির পুজো মানুষের ভাল লাগবে বলেই আশা রাখছেন পুজো উদ্যোক্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

karimpur kartik them pujo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE