পুলিশ ও প্রশাসন কড়া হাতে পদক্ষেপ করায় শুক্রবার নির্বিঘ্নে মিটল বহরমপুর কলেজের কাউন্সেলিং।
পুলিশের কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা কলেজ চত্বর। ফলে এ দিন কলেজে শোনা যায়নি কোনও স্লোগান। উধাও ছাত্র সংগঠনের ‘দাদাগিরি’। তৈরি হয়নি কোনও বিশৃঙ্খল পরিবেশও। ছাত্রছাত্রীরা এ দিন রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন, সংস্কৃত ও অঙ্ক অনার্সের কাউন্সেলিংয়ে অংশ নেন।
যদিও বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের কাউন্সেলিংয়ে ছাত্রপরিষদ ও তৃণমূল ছাত্রপরিষদের গণ্ডগোলের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল কলেজ চত্বর। ওই গণ্ডগোল থামানোর নামে বহরমপুর থানার পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স যৌথ ভাবে নিরীহ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের উপরে এলোপাথাড়ি লাঠি চালায়। অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েক জন ছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। ওই আতঙ্কের পরিবেশকে দূরে সরিয়ে রেখে কলেজে ভর্তি হওয়ার আনন্দ লেগে ছিল ছাত্রছাত্রীদের চোখে-মুখে।
তবে ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিদের কলেজে ঢোকার ক্ষেত্রে এ দিন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন, তেমনি ঢুকতে দেওয়া হয়নি অভিভাবকদেরও। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরেই বহরমপুর মহকুমাশাসক সুপ্রীয় দাস কলেজ অধ্যক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে যে বৈঠক করেন, সেখানেই ওই সিদ্ধান্ত হয়। ফলে কাউন্সেলিংয়ের জন্য মেধা তালিকায় নাম থাকা ছাত্রছাত্রীদেরই শুধুমাত্র কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়।
এ দিন পুলিশের দুটি বেষ্টনী ভেদ করে তবেই ওই ছাত্রছাত্রীরা কলেজ গেট পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি পান। কলেজের গেটে ঢোকার মুখে মেধা তালিকা হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বহরমপুর থানার পুলিশ। মেধা তালিকার সঙ্গে নাম মিলিয়ে তবেই ছাড়পত্র মিলেছে কাউন্সেলিংয়ে হাজির হওয়ার। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য পুলিশের এ দিনের ভূমিকায় খুশি। তবে পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে থেকে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের কথায়, বৃহস্পতিবার পুলিশের এই ভূমিকা কোথায় ছিল? পুলিশ যদি গোটা বিষয়টি কড়া হাতে দমন করত, তাহলে ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবকদের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হত না!
বহরমপুর গার্লস কলেজের দিক থেকে যাওয়ার পথে ওয়াইএমএ ময়দানের কোনের ট্র্যাফিক আইল্যান্ড মোড়ে ছিল পুলিশের প্রথম বেষ্টনী। সেখান থেকে কিছুটা দূরে বহরমপুর কলেজ যাওয়ার দিকে ছিল আরও একটি বেষ্টনী। পুলিশের ওই দুটি বেষ্টনী ভেদ করে তবেই ছাত্রছাত্রীরা পৌঁছাতে পেরেছেন কলেজের গেটে। কলেজ অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল বলেন, “কলেজে দুটি সিসিটিভি বসানো হয়েছে।”
কাউন্সেলিংয়ের মাঝে সময় পেলেই অধ্যক্ষ টিভির পর্দায় চোখ রাখছেন। যদি নিরাপত্তার বেষ্টনী গলে কোনও ভাবে বহিরাগত কলেজের ভেতরে ঢুকে যায়! যদিও এ দিনের পরিস্থিতি ছিল চেনা ছকের বাইরে সম্পূর্ণ অন্য রকম!
এদিকে বহরমপুর কলেজের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একটি চিঠি ফ্যাক্স করেন। অধীরবাবু বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে। বহরমপুর কলেজে তার শিকার হন নিরীহ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকেরা। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে প্রতিবাদ পত্র পাঠিয়েছি। ওই ঘটনার পরিসমাপ্তির দাবিও জানানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy