Advertisement
E-Paper

চেয়ার ‘বুক’ আগেই, রাত জেগে শোভাযাত্রায় ভোগান্তি

উৎসব মানচিত্রে নবদ্বীপের রাস কিংবা শান্তিপুরের ভাঙারাস জায়গা করে নিয়েছে অনেক আগেই। ফি বছর সেই উৎসবে সামিল হতে দূরদুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন এই দুই শহরে। উৎসব চলাকালীন যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রশাসনের তরফে নানা পদক্ষেপও করা হয়। কিন্তু তবুও কিছু ভোগান্তি, কিছু সমস্যা থেকেই যায় যা কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে। উৎসবের পরেও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৪
রাস শেষে ‘কুঞ্জভঙ্গ’। শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

রাস শেষে ‘কুঞ্জভঙ্গ’। শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

উৎসব মানচিত্রে নবদ্বীপের রাস কিংবা শান্তিপুরের ভাঙারাস জায়গা করে নিয়েছে অনেক আগেই। ফি বছর সেই উৎসবে সামিল হতে দূরদুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন এই দুই শহরে। উৎসব চলাকালীন যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রশাসনের তরফে নানা পদক্ষেপও করা হয়। কিন্তু তবুও কিছু ভোগান্তি, কিছু সমস্যা থেকেই যায় যা কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে। উৎসবের পরেও।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থেকে শান্তিপুরে এ বার ভাঙা রাস দেখতে এসেছিলেন হরিহর মণ্ডল। তামাম শহর ঘুরে তিনি একটি চেয়ার তো দূরের কথা, একফালি জমিও পাননি। সবই নাকি আগেই ‘বুক’ করা হয়ে গিয়েছে। যার নিট ফল রাতভর ভোগান্তি। হরিহরের আক্ষেপ, “এই বয়সে সারা রাত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শোভাযাত্রা দেখা সম্ভব নাকি! আর একটু আগে এসে পৌঁছতে পারলে কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যেত।”

কিন্তু ভাঙা রাসের শোভাযাত্রার সঙ্গে চেয়ার কিংবা জমির সম্পর্ক কী? স্থানীয় এক উদ্যোক্তা জানান, শান্তিপুরে এটাই দস্তুর। শোভাযাত্রায় ভিড়ের কথা মাথায় রেখে রাস্তার দু’পাশে চেয়ার পেতে দেওয়া হয়। এক একটি চেয়ারের ভাড়া পড়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। আগে থেকে সেই চেয়ার ‘বুক’ করলে একটি টোকেন মেলে। শোভাযাত্রার সময় সেই টোকেন দেখালেই মিলে যায় নির্দিষ্ট আসন। এ ছাড়াও রয়েছে জমির ব্যবস্থা। রাস্তার পাশে জমির উপরেই বিছিয়ে দেওয়া হয় তার্পোলিন। সেখানে বসতে খরচ হয় মাথাপিছু ৫০ থেকে ৭৫ টাকা। আর এই দু’টির একটিও ব্যবস্থা করতে না পেরে হয়রান হয়েছেন হরিহরবাবুর মতো অনেকেই।

যদিও বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমিও লজ্জিত। বাইরে থেকে এই শহরে যাঁরা আসছেন তাঁরা আমাদের অতিথি। আর তাঁদের কাছ থেকে এ ভাবে বসার জন্য ভাড়া নেওয়া উচিত নয়।”

শনিবারের ভাঙা রাসের শোভাযাত্রায় আলোর রোশনাইয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল পুরাণ থেকে শুরু করে আদিম সমাজব্যবস্থা। উঠে এসেছে বর্তমান সমাজের নানা প্রসঙ্গও। ছোটদের জন্য ছিল ছোটা ভিম, কালিয়া থেকে শুরু করে স্পাইডার ম্যান।

নবদ্বীপেও রাস উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ছিল। শনিবার প্রতিমা বিসর্জনের আগে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের তরফে বারবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল যে, কেউ যেন প্রতিমার ‘চালিতে’ না ওঠেন। তবুও সেই নিষেধ অমান্য করে প্রতিমার কাঠামোতে উঠে ওভারহেড বিদ্যুৎবাহী তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এক যুবক। বিদ্যুৎপৃষ্ট ওই যুবককে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু ওই ঘটনার পরে শহরের বেশ কিছুটা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়।

তবে দিনের শোভাযাত্রা ক্রমশ পিছনে ফেলে দিয়েছে রাতকে। গত কয়েক বছরে নবদ্বীপের রাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন দিনের বেলা কিছু প্রতিমার চোখ ধাঁধানো শোভাযাত্রা। কার শোভাযাত্রা কত সুন্দর, সুশৃঙ্খল এবং অভিনব হতে পারে তা নিয়ে যেন এক অঘোষিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে নবদ্বীপে। ‘ভদ্রাকালীর’ বারোয়ারির চমক ছিল সিকিমের ‘লায়ন ডান্স’। ‘বামাকালীর’ শোভাযাত্রায় ছিল জঙ্গলমহল থেকে আসা আদিবাসীদের প্রকাণ্ড ধামসা-মাদল।

জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “জগদ্ধাত্রী, রাস ও ভাঙারাস মিটেছে নির্বিঘ্নেই।”

santipur raas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy