Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের দ্বন্দ্বে বাজেট ভণ্ডুল

দলীয় সদস্যদের বিদ্রোহের মুখে পড়ে সোমবার ২০১৪-১৫ আর্থিক বর্ষের বাজেট পাশ করাতে পারল না তৃণমূলের দখলে থাকা সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতি। এ দিনের বাজেট সভায় থাকার কথা ছিল ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মোট ৪৮ জন সদস্যের (তৃণমূলের ২৪, কংগ্রেসের ১৩, সিপিএমের ১১)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৫:৫৩

দলীয় সদস্যদের বিদ্রোহের মুখে পড়ে সোমবার ২০১৪-১৫ আর্থিক বর্ষের বাজেট পাশ করাতে পারল না তৃণমূলের দখলে থাকা সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতি।

এ দিনের বাজেট সভায় থাকার কথা ছিল ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মোট ৪৮ জন সদস্যের (তৃণমূলের ২৪, কংগ্রেসের ১৩, সিপিএমের ১১)। কিন্তু তৃণমূলের স্থানীয় দুই পঞ্চায়েত প্রধান-সহ ৯ জন সদস্য হাজির হননি। সিপিএম সদস্যরা হাজির হলেও বাজেট পেশের আগে বেরিয়ে আসেন সভা ছেড়ে। ছিলেন না কংগ্রেসের কোনও সদস্যও। ফলে রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক সুব্রত সাহার অনুগামী ১৫ জন সদস্য কোরামের অভাবে পাশ করাতে পারেননি বার্ষিক বাজেট। সভায় উপস্থিত যুগ্ম বিডিও কালেশ্বরী কোঁড়া বলেন, “এদিন ছিল খসড়া বাজেট পেশের দিন। সদস্যদের হাজিরা ছিল ৫০ শতাংশের চেয়ে কম। তাই বার্ষিক খসড়া বাজেট পাশ হয়নি। আগামী সোমবার আবার বাজেট সভা ডাকা হয়েছে।”

তৃণমূলের একাংশ অনুপস্থিত ছিল কেন? বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর তরফে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কিনার হোসেন বলেন, “মন্ত্রী সুব্রত সাহা স্বেচ্ছাচারী শাসন চালাচ্ছেন সাগরদিঘিতে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের নিয়োগ করা হয়েছে তাঁর মর্জি মাফিক। এর প্রতিবাদেই আমরা বাজেট পাশের সভায় আসিনি। দলের ব্লক কমিটিকে আমরা তা আগাম জানিয়েও দিয়েছিলাম।” দলের ব্লক সভাপতি মহম্মদ আলি মধু এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘‘মন্ত্রী সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে দলের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ জমা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি চলছে পঞ্চায়েত সদস্যদের উপেক্ষা করে। ক্ষোভে দলের ৯ জন সদস্য বাজেট সভায় যাননি। এর সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে সুব্রতবাবুকেই।” আর দলের কার্যকরী সভাপতি রেজাউল্লা বলেন, “সুব্রতবাবুকে বার বার বলা হয়েছে সাগরদিঘির দলীয় নেতাদের সঙ্গে বসে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নিতে। জেলা ও রাজ্য নেতাদেরও সব কথা জানানো হয়েছে। তাঁরা যদি বিষয়টা সময় মতো দেখতেন তা হলে সোমবার বাজেট সভা নিয়ে এভাবে দলকে অপদস্থ হতে হত না।”

এদিন সুব্রতবাবু নিজে হাজির ছিলেন বাজেট সভায়। তবে দলের সাগরদিঘির ব্লক কমিটির নেতা বা বিক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত সদস্যরা কেউই তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা এখনও চিন্তা-ভাবনা করিনি। দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে যা করার করা হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি অবশ্য সুব্রতবাবুর পাশেই দাঁড়িয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, “সুব্রতবাবু দলের মন্ত্রী, বিধায়ক। সাগরদিঘিতে তিনি যা বলবেন সেটাই মানতে হবে সকলকে।” বাজেট পাশ না হওয়ায় হতাশ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকলেমা বিবি। তিনি বলেন, “নিজেদের লোকেরাই এল না, অন্যকে কী বলব। বাজেট পাশ না হলে সমস্ত উন্নয়নের কাজ আটকে যাবে। আশা করব আগামী দিনে সকলে আসবেন।”

অন্য দলের জনপ্রতিনিধিরা বাজেট সভায় এলেন না কেন?

কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অলোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধী সদস্যদের কোনও মর্যাদা নেই। তাই আমাদের কেউ যায়নি বাজেট সভায়।” সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির নেতা রজব আলি বলেন, “খসড়া বাজেট পাশ করিয়ে দেব বলেই সভায় দলের ১১ জন সদস্যকে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু গিয়ে দেখি ওরা খসড়া ও পূর্ণাঙ্গ বাজেট একই সঙ্গে পাশ করতে চাইছে। আমরা তা না মানতে পেরে সভা ছেড়ে বেড়িয়ে আসি।”

trinamul budget
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy