Advertisement
১১ মে ২০২৪

নেতৃত্বে ক্ষোভ সিপিএমের যুব সংগঠনেও

জেলা কমিটির কর্মশালায় দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনায় মুখর হল ডিওয়াইএফ। টেট ও সারদা-র মতো বিষয় পেয়েও সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারার জন্য দলীয় নেত্ৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলা হল দলের অন্দরে। এমনকী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন দিতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও সমালোচনা করে সংগঠনের এক নেতা বললেন, ‘এর চেয়ে অনেক বেশি লাভ হত নবান্নের সামনে ধর্নায় বসলে।’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৪ ০০:৫৫
Share: Save:

জেলা কমিটির কর্মশালায় দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনায় মুখর হল ডিওয়াইএফ। টেট ও সারদা-র মতো বিষয় পেয়েও সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারার জন্য দলীয় নেত্ৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলা হল দলের অন্দরে। এমনকী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন দিতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও সমালোচনা করে সংগঠনের এক নেতা বললেন, ‘এর চেয়ে অনেক বেশি লাভ হত নবান্নের সামনে ধর্নায় বসলে।’

রবিবার কৃষ্ণনগরের এবিপিটিএ হলে এই কর্মশালার আয়েজন করা হয়েছিল। সেখানে জেলার জোনাল কমিটি-র ২২০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন সংগঠনের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক ও বর্তমানে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি আভাস রায়চৌধুরী, সিপিএম-এর নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে প্রমুখ। যদিও কর্মীদের ক্ষোভ নিয়ে তাঁরা কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সুমিত দে বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের এই ফলাফলের পিছনে দলীয় নেতৃত্বের দুর্বল ভূমিকা আছে বলে একটা অংশ মনে করছে। বক্তাদের কেউ কেউ সেই ঘাটতির দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা চেয়েছেন আরও ধারাবাহিক ও তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে, যাতে মানুষের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।’’ পরাজয়ের গ্লানি থেকেই এই সব কথা উঠে এসেছে বলে মনে করছেন তিনি।

ডিওয়াইএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের কর্মশালায় জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, একে তো সারদা বা টেট-এর মতো বিষয় নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব, তার উপরে কর্মীরা যখন আন্দোলনে নামতে চেয়েছেন তখন বিভিন্ন সাবধান-বাণী শুনিয়ে পিছন দিকে টেনে ধরেছেন তাঁরা। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সংগঠনের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েও দলীয় নেতৃত্বকে সেভাবে পাশে পাননি। কেউ আবার সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। সংগঠনের এক নেতা বলেন, ‘‘দলের জোনাল স্তর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ নেতৃত্বসর্বক্ষেত্রেই নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কর্মীরা বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখছেন, এলাকায় একেবারেই গ্রহণযোগ্যতা নেই এমন ব্যক্তি পার্টির বিভিন্ন স্তরে নেতা হয়ে বসে আছেন। নির্বাচনী জনসভায় তাঁরা মঞ্চে বসে থেকে সাধারণ মানুষকে সভামুখো করতে পারেননি।’’ নেতৃত্বকে রীতিমতো কটাক্ষ করে কোনও কোনও বক্তা বলার চেষ্টা করেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে ডেপুটেশন দিয়ে সন্ত্রাস বন্ধ করা যাবে না। দলের তৃণমূল স্তরে আন্দোলন সংগঠিত করে একমাত্র তৃণমূলের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা সম্ভব।” পাশাপাশি টেট নিয়ে আন্দোলন আরও তীব্র করে তোলার দাবি ওঠে কর্মশালায়। ডিওয়াইএফ-এর এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘টেট সব চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে যুব সম্প্রদায়ের উপরে। অথচ আমরা সে ভাবে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারনি। একই ভাবে সারদার মতো একটা ইস্যুকে নিয়েও সে ভাবে পথে নামিনি। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি কর্মশালায় উঠে এসেছে। দলের উচ্চস্তরে এই দাবি-দাওয়া জানিয়ে সংগঠনকে জোরালো করার চেষ্টা হবে আগামী দিনে।”

এর আগেও সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠকে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন জেলা কমিটির সদস্যরা। প্রস্তাব উঠেছিল, সক্রিয় নয় এমন নেতাদের সরিয়ে দিয়ে লড়াকু কর্মীদের নেতৃত্বে তুলে আনার। এবার দলের যুব সংগঠনেও একই ভাবে নেতৃত্বের ভূমিকা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। কিন্তু তাতেও শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে কী? প্রশ্নটা কিন্তু কর্মীদের মধ্যে থেকেই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

krishnanagar cpim dyfi surya kanta mishra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE