অনির্দিষ্টকালের জন্য নদিয়ার চারটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিলেন বাস শ্রমিকরা।
সোমবার সকাল থেকে কৃষ্ণনগর থেকে কৃষ্ণগঞ্জের খালবোয়ালিয়া, বানপুর, ভাজনঘাট ও শিমুলিয়া রুটের ৪৩টি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম হয়রানির মধ্যে পড়তে হয় জেলাবাসীকে। বিশেষ করে ভীমপুরের মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজ ও মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের। যে ছোট গাড়ি, অটো কিংবা লছিমনের বাড়বাড়ন্তের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বাস শ্রমিকরা এদিন তারাই ত্রাতার ভূমিকায়
পথে নেমে বহু মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে।
তবে দিনভর বাস বন্ধ থাকলেও ধর্মঘট তুলে বাস চলাচল স্বাভাবিক করার বিষয়ে প্রশাসন উদ্যোগী হয়নি বলেই অভিযোগ। প্রশাসনের এই ভূমিকায় যাত্রীদের পাশাপাশি রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাসের শ্রমিকরাও। ওই চার রুটের বাস শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক তাপস কুন্ডু বলেন, ‘‘আমরা আমাদের সমস্যার কথা প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের তরফে কেউই সারা দিনে একবারও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।” তাঁর সাফ কথা, “আমাদের সমস্যা না মেটা পর্যন্ত আমরা বাস চালাব না।” জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক নীলেশ চক্রবর্তী বলেন, “এমন কোনও ঘটনার কথা আমাকে কেউ জানায়নি। তাছাড়া ওই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উৎপল ভদ্র বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। যাতে ওই চারটি রুটের বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।’’
কিন্তু আচমকা এমন বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন? শ্রমিকদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে এই রুটে প্রচুর সংখ্যক অনুমোদনহীন যাত্রীবাহী ছোট গাড়ি, অটো এবং যন্ত্রচালিত ভ্যান বা লছিমন চলতে শুরু করেছে। ফলে তাদের দাপটে আর সেভাবে বাসে যাত্রী হচ্ছে না। দিনের পর দিন আমাদের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।” তাপসবাবু বলেন, ‘‘পারমিটবিহীন ওই সব ছোট গাড়ির দাপটে আমরা যাত্রী পাচ্ছি না। তেলের টাকা পর্যন্ত উঠছে না। এভাবে দিনের পর দিন চলতে পারে না। একটা স্থায়ী সমাধানের জন্য বাধ্য হয়ে আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।” নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষে অসীম দত্ত বলেন, ‘‘একেবারে নিরুপায় হয়েই শ্রমিকরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরাও চাইছি প্রশাসন দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ করে সমস্যার সমাধান করুক।”