রয়েল ক্লাব ও টাউন ক্লাবের খেলার একটি মুহূর্ত। রবিবার সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।
শেষ কবে নবদ্বীপের ফুটবল মাঠে এত লোক হয়েছিল? কবে নবদ্বীপের মাঠে এক সঙ্গে ছ’জন বিদেশি ফুটবলার খেলেছেন? বছরের শেষ রবিবার এমনই সব বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন নবদ্বীপের ফুটবলপ্রেমীরা।
রবিবার নবদ্বীপ মিউনিসিপ্যাল সকার কাপের দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে শহরের চির প্রতিদ্বন্ধী দুই দল রয়েল ক্লাব এবং টাউন ক্লাবের ডার্বি ম্যাচ ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে পৌঁছল। গোটা প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে আসা দুই দলের খেলা দেখতে নদিয়া ক্লাবের মাঠে ভিড় উপছে পড়ে। টানটান খেলায় টাউন ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় রয়েল ক্লাব।
এর আগে শনিবার সকার কাপের চলতি মরসুমের প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে পৌঁছায় নবদ্বীপ মিলন সঙ্ঘ। গতবারের চ্যাম্পিয়ান মিলন সঙ্ঘ প্রথম সেমি ফাইনালে ২-০ গোলে হারায় কর্মমন্দিরকে। বুধবার সকার কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে মিলন সঙ্ঘ এবং রয়েল ক্লাব।
রবিবার খেলার শুরুতেই টাউন ক্লাবের প্রবল আক্রমণের সামনে কিছুটা বেসামাল মনে হচ্ছিল রয়েল ক্লাবকে। প্রথম পনেরো মিনিটের মধ্যে টাউন ক্লাবের রিয়াজ হোসেন, পল, লাউলা একের পর গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। একটু একটু করে খেলা ধরে রয়েল ক্লাব। প্রথমার্ধের ২৩ মিনিটের মাথায় একটি ফিরতি আক্রমণে রয়েল ক্লাবের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ৯ নম্বর জার্সি পড়া জাস্টস। একই ভাবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও গোল শোধে মরিয়া টাউন ক্লাব একের পর এক আক্রমণ শানালেও তা গোলে পরিণত হয়নি। এ দিকে, দ্বিতীয়ার্ধের ২১ মিনিটের মাথায় বক্সের মাথা থেকে মাটি ঘেঁষা শটে দ্বিতীয় গোল করেন ২ নম্বর জার্সি পড়া অমিত মল্লিক।
গোটা প্রতিযোগিতায় দুরন্ত ফর্মে থাকা টাউন ক্লাবের বিদেশি ভিকি রবিবার খেলেননি। তাঁর দলে না থাকা এবং একাধিক গোল ‘মিসের’ খেসারত দিয়ে সকার কাপ থেকে ছিটকে গেল টাউন ক্লাব।
ফাইনালের অন্য দল মিলন সঙ্ঘের হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে চলতি সকার কাপে প্রথম হ্যটট্রিক করেন অনুপ বিশ্বাস। তিনি কার্যত একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষ যুবদলকে। সেমি ফাইনালেও প্রথম গোলটি করেন সেই অনুপ বিশ্বাস। আঠারো মিনিটের মাথায় বিপক্ষের গোলমুখের জটলা থেকে বাঁ পায়ের মাপা শটে চমৎকার গোল করেন অনুপ। শনিবার মিলন সঙ্ঘের হয়ে দ্বিতীয়ার্ধের ১৭ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় গোলটি করেন আসিফ ইকবাল। হেরে গেলেও কর্মমন্দিরের গোলরক্ষক রামকৃষ্ণ দেবনাথের খেলা নজর কাড়ে।
বুধবার সকার কাপের ফাইনাল নিয়ে শহর জুড়ে তুমুল উন্মাদনা ছড়ালেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন উভয় দলের কর্তারা। ফাইনালের টিম নিয়ে শহরের ফুটবল মহলে নানা কথা ভেসে বেড়ালেও ক্লাবকর্তারা ‘স্পিকটি নট’। প্রশ্ন করলেই হেসে বলছেন এখনও দু’দিন বাকি আছে। দেখি কি করা যায়।
এ দিন, খেলা শেষে মাঠ ফেরত দর্শকরা বলছিলেন, প্রায় একমাস ধরে দুপুরে মাঠে আসার নেশাটা বেশ ধরে গিয়েছে। বুধবারের পর থেকে দুপুরগুলো যে কী ভাবে কাটবে কে জানে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy