কলেজে তাণ্ডব। গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে কলেজ চত্বরে ছাত্র সংঘর্ষের বিরাম নেই।
কখনও জোর করে ছাত্র ভর্তি, কখনও বা নিছক ‘দাদাগিরি’পরস্পরের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে এসএফআই, ছাত্র পরিষদ এবং টিএমসিপি-র হাতাহাতি জেলার অধিকাংশ কলেজে পঠন-পাঠনের আবহই নষ্ট করে দিয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ পড়ুয়ারা।
সেই তালিকায় শেষ সংযোজন বৃহস্পতিবার বহরমপুর কর্মাস কলেজে দু’দলের তাণ্ডব।
যাদবপুর কাণ্ডে সরকারের বিরোধিতা করার ‘শাস্তি’ দিতেই এ দিন শাসক দলের আশ্রিত গুন্ডারা কলেজে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে জেলা কংগ্রেসের অভিযোগ।
এ দিনের গণ্ডগোলের জেরে দু’পক্ষের অন্তত ৮ জন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। ছাত্র পরিষদের দাবি, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের হাতে প্রহৃত তাদের চার সমর্থককে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক বাপন দাসের আঘাত গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে এ দিন দুপুরে ওই কলেজে তাণ্ডবের সময়ে ব্যতিক্রমী ছিল পুলিশের তত্পরতা। কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের সময়ে পুলিশ কার্যত ‘দর্শকের’ ভূমিকায় থাকে বলেই স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের অভিজ্ঞতা। এ দিন হাতাহাতি থামাতে পুলিশকে লাঠি হাতে ছাত্র-পেটাতেও দেখা গিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের কথায়, “ছাত্র সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।”
এ দিন ওই কলেজে গণ্ডগোলের স্পষ্ট কারণ অবশ্য পুলিশ কিংবা কলেজ কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেননি। অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল বলেন, “কোনও কারণই তো বুঝতে পারছি না। সকাল থেকে কলেজ শান্তই ছিল। সংঘর্ষ বাধার মতো কোনও কারণও তো দেখছি না।”
তবে টিএমসিপি-র অভিযোগ, গণ্ডগোলের সূত্রপাত বহিরাগতদের নিয়ে। সংগঠনের জেলা সভাপতি অরিন্দম ঘোষ বলেন, “ছাত্রপরিষদের মদতে বেশ কয়েক জন বহিরাগত গুন্ডা মদ্যপ অবস্থায় কলেজে ঢুকে আমাদের সমর্থকদের উপরে চড়াও হয়।” অরিন্দমের দাবি, দিন কয়েক আগে, মহকুমাশাসকের ডাকা বৈঠকে বহিরাগতরা কোনও ভাবেই কলেজ চত্বরে ঢুকবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অথচ এ দিন মহিলা কংগ্রেসের এক সভনেত্রী এবং এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের নেতৃত্বেই ছাত্র পরিষদ তাণ্ডব চালায়।
ছাত্র পরিষদের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সরফরাজ রুবেল পাল্টা বলছেন, “বহিরাগত ঢোকাল টিএমসিপি। আর আঙুল তুলল আমাদের দিকে।” তাঁর অভিযোগ, এ দিন ‘বিনা প্ররোচনায়’ টিএমসিপি-র গুন্ডারা কলেজে ঢুকে ছাত্র পরিষদের সমর্থকদের আক্রমণ করে। তাঁর দাবি, “আসলে যাদবপুর কাণ্ডে আমরা সরকারের বিরোধিতা করেছিলাম। তাই আমাদের বিরুদ্ধেই এ বার মদ-গাঁজার মিথ্যা তত্ত্ব খাড়া করতে চাইছে টিএমসিপি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy