Advertisement
০৯ মে ২০২৪

ভোট আসে-যায়, পানীয় জলের হাহাকার যায় না

পঞ্চায়েতের নলকূপ রয়েছে বাড়ির পাশেই। কিন্তু গরম পড়তেই সেই নলকূপে আর জল উঠছে না। মহুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে করকাটার বাসিন্দা সেলিমউর রহমানকে প্রায় আট কিলোমিটার উজিয়ে মহুলা মোড় থেকে পানীয় জল আনতে হচ্ছে। জলের সমস্যায় জেরবার বেগুনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বরূপনগরের সৈয়দ আলি মল্লিকও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০০:২২
Share: Save:

পঞ্চায়েতের নলকূপ রয়েছে বাড়ির পাশেই। কিন্তু গরম পড়তেই সেই নলকূপে আর জল উঠছে না। মহুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে করকাটার বাসিন্দা সেলিমউর রহমানকে প্রায় আট কিলোমিটার উজিয়ে মহুলা মোড় থেকে পানীয় জল আনতে হচ্ছে। জলের সমস্যায় জেরবার বেগুনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বরূপনগরের সৈয়দ আলি মল্লিকও। তাঁকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূর থেকে ব্যবস্থা করতে হচ্ছে পানীয় জলের। কাপাসডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ছেতিয়ানির সোনালী খাতুন আবার প্রতিদিন দীর্ঘ পথ উজিয়ে জল বয়ে আনতে পারেন না। এই গরমে বাধ্য হয়ে তাঁকে জল কিনে খেতে হচ্ছে।

ভোটের আগে পানীয় জল নিয়ে জলঘোলা হয় বিস্তর। তরজা চলে আরও বেশি। ‘আর আপনাদের জলের সমস্যা থাকবে না’ গোছের ঢালাও প্রতিশ্রুতিও দিয়ে যায় ভোট ভিক্ষা করতে আসা রাজনীতির কারবারিরা। কিন্তু জলের সমস্যা মেটে না কিছুতেই। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “ওরা তো এই সমস্যাটা জিইয়ে রাখতেই চায়। সমস্যাটা মিটে গেলে ওরা আর গলা ফাটাবে কী নিয়ে? বছরের পর বছর ধরে এই জলের সমস্যাটুকু যাঁরা মেটাতে পারেন না, তাঁরা আবার বড় বড় কথা বলেন কোন মুখে!” বেলডাঙা ১ ব্লকের বেগুনবাড়ি, কাপাসডাঙা, চৈতন্যপুর, মহুলা, পুলিন্দা এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে এই সময় চরম জলকষ্টে ভুগতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু বার পানীয় জলের এই সমস্যার কথা জানানো হয়েছে প্রশাসনের কর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতাদেরও। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে আর কিছুই মেলেনি। বেলডাঙা পুরসভা এলাকা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে বেগুনবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকা। কিন্তু চৈত্র ও বৈশাখ মাসে এলাকার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানীয় জলটুকু নাগালের কাছে পান না। স্থানীয় বাসিন্দারা রাগে ফুঁসছেন, “অনেক হয়েছে। আর নয়। এই জলকষ্টের মাসুল কিন্তু নেতাদের গুণতে হবে। মিলিয়ে নেবেন।” বেগুনবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সদস্য ও গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ আলি মল্লিক বলেন, “ভোটের প্রচারে জল নিয়ে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি না দিলেই আমরা খুশি হব। বাবুরা সব ধুলো উড়িয়ে উৎসবের মেজাজে গ্রামে আসবেন ভোট প্রচার করতে। আর জলের কষ্টে ছাতি ফাটবে গ্রামের মানুষের। এমনটা আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের আল্লারাখা শেখ বলেন, “গরমে জলস্তর নেমে গিয়েছে। তাছাড়া জলে আর্সেনিক ও আয়রন রয়েছে। সব মিলিয়ে সত্যিই সমস্যায় আছেন এলাকার মানুষ।”

জলের সমস্যার কথা মেনে নিয়ে কাপাসডাঙার বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের সদস্য কংগ্রেসের মনিরুল হক বলেন, “পানীয় জলের একটি প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। সেটা হয়ে গেলেই জলের সমস্যা মিটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

beldanga water crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE