Advertisement
১৭ মে ২০২৪

লাগাতার চুরি, সালারে দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ

ঘটনা এক: ২ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ৭টা সালার বাজার থেকে সালার-কাগ্রাম রুটে একটি লছিমন ভ্যানে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তিন ব্যক্তি। রাস্তায় তাঁদের পথ আটকে মোবাইল ফোন ও সাড়ে সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে চম্পট দেয় মোটরবাইকে সওয়ার দুষ্কৃতীরা। ঘটনা দুই: ২৮ জানুয়ারি। ভর সন্ধে বেলা। জমে উঠেছে বাজার। একটু দরকার পড়ায় দোকান ফেলে ইজাবুল শেখ পাশের এক বাড়িতে দিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা হাওয়া। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় এক দল দুষ্কৃতী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৪
Share: Save:

ঘটনা এক: ২ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ৭টা সালার বাজার থেকে সালার-কাগ্রাম রুটে একটি লছিমন ভ্যানে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তিন ব্যক্তি। রাস্তায় তাঁদের পথ আটকে মোবাইল ফোন ও সাড়ে সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে চম্পট দেয় মোটরবাইকে সওয়ার দুষ্কৃতীরা।

ঘটনা দুই: ২৮ জানুয়ারি। ভর সন্ধে বেলা। জমে উঠেছে বাজার। একটু দরকার পড়ায় দোকান ফেলে ইজাবুল শেখ পাশের এক বাড়িতে দিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা হাওয়া। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় এক দল দুষ্কৃতী।

ঘটনা তিন: ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সপরিবারে প্রতিবেশির বাড়িতে সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন তালিবপুরের হাটতলার বাসিন্দা পেশায় পার্শ্বশিক্ষক পার্থ রায়। বাড়ি ফিরে এসে দেখেন গেটের তালা ভেঙে চার ভরি সোনার গহনা-সহ নগদ দশ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

ঘটনা চার: সালারের জনবহুল এলাকায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ফাঁকা বাড়ি পেয়ে সন্ধ্যায় বাবন কর্মকারের বাড়িতে ঢুকে লক্ষাধিক টাকার গহনা ও কয়েক হাজার টাকা ছিনিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীদের দল।

গত কয়েক মাস থেকে সালারে লাগাতার এই চুরির ঘটনায় ঘুম ছুটেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পুলিশের ভূমিকাতেও ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “মনে হচ্ছে মগের মুলুকে বাস করছি। দিন কয়েক আগে দুপুর বেলায় বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। ঘণ্টা কয়েক পরে ফিরে দেখি সব সাফ করে নিয়ে গিয়েছে চোরেরা।” পুলিশকে জানিয়েছেন? প্রশ্নটা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লেন ওই গৃহকর্তা। বললেন, “পুলিশ! সব জেনেও যদি কেউ ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকে তাকে বলে কোনও লাভ হয়! খোঁজ নিয়ে দেখুন থানায় গত কয়েক মাসে কতগুলো চুরির অভিযোগ জমা পড়েছে, আর ক’টা চুরির কিনারা হয়েছে।”

সম্প্রতি সালারের হামিদ হাটি পিলখুন্ডি গ্রামে দিনে দুপুরে পরিবারের লোকজনের অনুপস্থিতিতে চার চারটি তালা ভেঙে দশ ভরি সোনার গহনা ও পনেরো ভরি রুপোর গহনা নিয়ে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এখনও পর্যন্ত সেই ঘটনার কোনও কিনারা হয়নি। গৃহকর্তা গোলাম রসুল বলেন, “পাশের গ্রামে ভাইজির বিয়েতে পরিবারের সবাই মিলে গিয়েছিলাম। বিকেলে এসে দেখি গেটের তালা ভাঙা। চার চারটি তালা ভেঙে প্রায় লক্ষাধিক টাকার গহনা নিয়ে চম্পট গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।” তাঁর কথায়, “এলাকায় একের পর এক চুরি লেগেই রয়েছে। পুলিশ কেন এ সব বন্ধ করতে পারছে না, বুঝতে পারছি না।”

এক সময়ে খুচরো বাজার বসলেও এখন সালার পাইকারি বাজারের রূপ নিয়েছে। দিনে কয়েক লক্ষ টাকা লেনদেন হয় ওই বাজারে। দিনের পর দিন এ ভাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। সালার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক গোলাম দস্তগির এলান বলেন, “লাগাতার চুরির ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ তা অবিলম্বে দূর করার ব্যবস্থা করুক।”

ভরতপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের জহিরুদ্দিন শেখ বলেন, “পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমাদের আন্দোলনের পথে হাঁটতে হবে।”

মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “পুলিশ বসে নেই। আমরা চার দুষ্কৃতী দলকে গ্রেফতার করতে পেরেছি। এলাকায় পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

theft salar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE