বহরমপুর স্টেডিয়াম মাঠে খেলা হয়, মেলাও হয়। কিন্তু মেলাতে বহরমপুরের সাধারণ মানুষের ভিড় হলেও খেলার সময়ে গ্যালারী থাকে দর্শকশূন্য! মাঠে দর্শক না হওয়ায় মুর্শিদাবাদ ডিষ্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের (এমডিএসএ) উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন বহরমপুরের ফুটবলপ্রেমী দর্শক। কেননা, প্রায় নিঃশব্দে শেষ হয়েছে জুনিয়র ডিভিশন, সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগ! এখন চলছে সিনিয়র ডিভিশন নক-আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা। কিন্তু তার খবর জানতে পারে না বহরমপুরের ফুটবলপ্রেমী মানুষ! ফলে মাঠে ভাল খেলার প্রেরণা বা উৎসাহ যোগাতে দর্শকদের সোল্লাস নেই। নেই মাঠ কাঁপানো চিৎকারও। ফলে বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতা প্রতি বছর নিয়মরক্ষায় পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে! এমডিএসএ-এর সাধারণ সম্পাদক তরুণ দত্ত অবশ্য বলেন, “লিগ শুরুর আগে মাইকে এক দিন প্রচার হয়েছিল। কিন্তু মাঠে হাজির হয়ে খেলা দেখার মত মানসিকতা এখন দর্শকদের মধ্যে নেই। এই কারণে মাঠে দর্শক সংখ্যা বাড়াতে লিগের খেলা বহরমপুর স্টেডিয়াম ছাড়াও এফইউসি এবং ওয়াইএমএ ময়দানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তাতে এফইউসি এবং ওয়াইএমএ ময়দানে কিছুটা হলেও দর্শক ছিল।”
শহরের মধ্যে জনবহুল ও ব্যস্ততম রাস্তার পাশে এফইউসি এবং ওয়াইএমএমএ ময়দানের অবস্থান হওয়ায় অনেকেই ফুটবলের টানে মাঠে ঢুকে পড়ছেন। দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগও করছেন। এক সময়ে যেমন ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে ফুটবল খেলাকে ঘিরে উপচে পড়া দর্শকের ভিড় হত। পরে স্টেডিয়াম তৈরির পরে ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান থেকে বিভিন্ন খেলা স্টেডিয়ামে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই ফুটবলকে ঘিরে বহরমপুরের মানুষের যে উন্মাদনা, তা এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। এই অবস্থায় গত ৪-২৯ জুন পর্যন্ত চলেছে জুনিয়র ডিভিশন জেলা লিগ প্রতিযোগিতা। ওই প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পরেই গত ৩ জুলাই থেকে শুরু হয় সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগ।
এ বছর সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগে মোট ন’টি দল অংশ নেয়। লিগে মোট ৩৬টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। তার মধ্যে প্রতি দল খেলেছে ৮টি করে ম্যাচ। হিন্দ ক্লাব ৮টি ম্যাচ খেলে ৬টি ম্যাচে জয় ও ২টি ম্যাচ অমীমাংসিত হওয়ায় মোট পয়েন্ট হয়েছে ২০। একই ভাবে অভ্যুদয় ক্লাবও পেয়েছে ২০ পয়েন্ট। কিন্তু বেশি গোল দেওয়ায় হিন্দ ক্লাব চ্যাম্পিয়ান হয়। হিন্দ ক্লাব ২০টি গোল দিয়েছে এবং তিনটে গোল খেয়েছে। অন্য দিকে অভ্যুদয় ক্লাব ১৫টি গোল দিয়েছে এবং ২টি গোল খেয়েছে। লিগের তৃতীয় স্থানে রয়েছে মধুপুর বালার্ক সংঘ। তাদের পয়েন্টের সংখ্যা ১৯। যদিও তারা সবচেয়ে বেশি ২৩টি গোল দিয়েছে।
একই সঙ্গে জুনিয়র ও সিনিয়র লিগ চ্যাম্পিয়ান হয়েছে হিন্দ ক্লাব। কিন্তু প্রচারের অভাবে ওই খবরও বহরমপুরের ফুটবলপ্রেমী মানুষ জানেন না। ওই ক্লাব সভাপতি শেখর রায় বলেন, “আয়োজক সংস্থার উচিত বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরুর আগে ও প্রতিযোগিতা চলাকালিন নিয়মিত প্রচার চালানো। প্রচার না হওয়ায় ওই সব প্রতিযোগিতার খবর জানতে পারেন না বলেই মাঠেও দর্শক হয় না।”
যদিও সিনিয়র ডিভিশন নক-আউট ফুটবল প্রতিযোগিতার শুরুর আগে মাইকে প্রচারের সিদ্ধান্ত হয় মুর্শিদাবাদ ডিষ্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে। কিন্তু কার্যকরী হয়নি। ফলে প্রচার ছাড়াই গত ১৭ অগস্ট থেকে শুরু হয়েছে নক-আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা। এ বছর ওই প্রতিযোগিতায় মোট ১০টি দল অংশ নিয়েছে। ওই প্রতিযোগিতায় চিত্তরঞ্জন ক্লাবকে ৪-১ গোলে হারিয়ে বালার্ক সংঘ, শিবাজি অ্যাথলেটিক ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে হিন্দ ক্লাব ফাইনালে উঠেছে। আগামী শনিবার বহরমপুর স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy