Advertisement
E-Paper

লালগোলায় বন্ধ মিড-ডে মিল

মিড ডে মিল নিয়ে রাজনৈতিক কাজিয়ায় বছর চারেক ধরে মধুপুর-ড্রাইভারপাড়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের উনুনই জ্বলেনি। মিড ডে না মিললেও যুযুধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে বার চারেক মারপিঠ হয়েছে। বিবাদ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০১:০০

মিড ডে মিল নিয়ে রাজনৈতিক কাজিয়ায় বছর চারেক ধরে মধুপুর-ড্রাইভারপাড়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের উনুনই জ্বলেনি। মিড ডে না মিললেও যুযুধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে বার চারেক মারপিঠ হয়েছে। বিবাদ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। লালগোলার রামচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মধুপুর-ড্রাইভারপাড়ার যুযুধান ৬টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রশাসন একাধিক বার বৈঠক করলেও কোনও সমাধানসূত্র বার হয়নি। মাস পাঁচেক ধরে পড়ে থাকা ৪ কুইন্টাল চালে পচন শুরু হয়েছে।

২০০২ সালের ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার পর ওই শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়াদের মিড ডে মিল হিসেবে শুকনো খাবার দেওয়া হত। ২০১০ সালের ১৭ নভেম্বর বিডিও-র নির্দেশে চালু হয় মিড ডে মিল। ওই শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধান সহায়ক, অর্থ্যাৎ প্রধান শিক্ষক জেকের আলি বলেন, “বিডিও মিড ডে মিলের রান্নার জন্য ‘রুবিনা স্বনির্ভর গোষ্ঠী’কে নিয়োগ করেন। রান্নার উপকরণ কেনার জন্য ২১,৬০০ টাকা দেওয়াও হয়।”

রুবিনা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভানেত্রী সীমা বিবি বলেন, “দলবল নিয়ে তেড়ে আসেন গ্রামেরই ‘যমুনা স্বনির্ভর গোষ্ঠী’র সভানেত্রী সাহানাজ বিবি। আমাদের মারধর করে। সেই থেকেই বন্ধ রান্না।” প্রধান শিক্ষকের কথায়, “ওই ঘটনার পর মিড ডে মিল বন্ধ হয়। পুরনো বিডিও বদলি হয়েছেন। নতুন বিডিও ফের মিড ডে মিল রান্নার নির্দেশ দেন। গত ২৫ মার্চ ৪ কুইন্টাল চাল মেলে। সব্জি-সহ রান্নার উপকরণ কেনার জন্য মেলে ১৯৬৬০ টাকা।” সীমা বিবি বলেন, “কিন্তু অভিজ্ঞতার কথা ভেবে বিডিও এবং ওসি ৬টি গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে গত ১৮ জুলাই বৈঠক করেন। রুবিনা গোষ্ঠী মিড ডে মিল রান্না করবে বলে বৈঠকে তাঁরা নির্দেশ দেন।”

জেকের আলি বলেন, “সেই মতো চলতি মাসের ২০ তারিখ, ২৩ তারিখ এবং ২৬ তারিখ রুবিনা গোষ্ঠী রান্না শুরু করতেই যমুনা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ৫টি গোষ্ঠীর মহিলারা চড়াও হয়ে উনুন ভেঙে দেয়।” অভিযোগ অস্বীকার করে সাহানাজ বিবি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে ওরা মিথ্যা মামলা করেছে। আমরাও ওদের নামে একটা মামলা করেছি।” তবে তাঁর দাবি, “যমুনা পুরনো গোষ্ঠী। তবুও কেন রুবিনাকে রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হল?”

নিজেদের কংগ্রেস সমর্থক বলে দাবি করে যমুনা গোষ্ঠীর সাহানাজ বিবি বলেন, “আরএসপি ঘেঁষা রুবিনা গোষ্ঠী এখন তৃণমূল হয়েছে।” এ কথা স্বীকারও করেছেন একদা আরএসপি-র বুথ ইনচার্জ ও বর্তমানে তৃণমূলের রামচন্দ্রপুর অঞ্চল সভাপতি সীমা বিবির স্বামী মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় তৃণমূলে গিয়েছি।” লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কংগ্রেসের সুজাউদ্দিন বলেন, “রামচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গত বারের প্রধান ছিলেন আরএসপি-র নুর হোসেন। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী ও পুত্রবধুদের নিয়ে রুবিনা নামে গোষ্ঠী তৈরি করেন। সভানেত্রী করেন পুত্রবধু সীমাকে। প্রভাব খাটিয়ে রুবিনা গোষ্ঠীর জন্য বিডিও-রা কাছ থেকে রান্নার ভার আদায় করেন।”

নুর হোসেনের পাল্টা অভিযোগ, “২০০৩ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত লালগোলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন সুজাউদ্দিন। তিনি তাঁর স্বজনদের জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে অন্যায় ভাবে চাকরি নিয়েছেন।” মিড ডে মিলের সংকট কাটাতে সুজাউদ্দিনের দাওয়াই, “৬টি গোষ্ঠী পালা করে মিড ডে মিল রান্না করবে বলে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের ৫ জনের পরিচালন সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” সমিতির অন্যতম সদস্য তথা প্রধানশিক্ষক জেকের আলি বলেন, “ওই প্রস্তাবে আমি আপত্তি জানিয়েছে।” আর লালগোলার বিডিও স্বপ্নজিৎ সাহা বলেন, “পুলিশ সহায়তায় রুবিনা গোষ্ঠীই মিড ডে মিল রাঁধবে!” চার বছরে হয়নি। আবার কবে হবে?

political turmoil midday meal lalgola
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy