Advertisement
০৪ মে ২০২৪

স্কুলে ছুটি দিয়ে ভোজ

সর্ষে-ইলিশ, মুগের ডাল, পাঁচ রকম তরকারি আর শেষ পাতে চাটনি। কোনও বিয়ে বাড়ির মেনু নয়। ছুটি ঘোষণা করে সোমবার স্কুলে এই ভাবেই প্রীতি ভোজে মেতে উঠলেন শিক্ষকরা। এই অভিযোগ বহরমপুরের নওদাপানুর যুগলকিশোর হাইস্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতে অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।

যুগলকিশোর হাই স্কুলে ভোজের আয়োজন।—নিজস্ব চিত্র।

যুগলকিশোর হাই স্কুলে ভোজের আয়োজন।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:০০
Share: Save:

সর্ষে-ইলিশ, মুগের ডাল, পাঁচ রকম তরকারি আর শেষ পাতে চাটনি।

কোনও বিয়ে বাড়ির মেনু নয়।

ছুটি ঘোষণা করে সোমবার স্কুলে এই ভাবেই প্রীতি ভোজে মেতে উঠলেন শিক্ষকরা। এই অভিযোগ বহরমপুরের নওদাপানুর যুগলকিশোর হাইস্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতে অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, এমন ঘটনা ওই স্কুলে এই প্রথম নয়। আগেও স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা রান্না-খাওয়া করেছেন। মিড-ডে মিলের টাকা নয়ছয় করে ‘ইলিশ উৎসব’ করছেন বলে নালিশ অভিভাবকদের।

যুগলকিশোর হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১০৮১, তার মধ্যে সোমবার দুপুরে মিড-ডে মিলের খাবার খেয়েছে ২৭৬ জন। তার পরেই তাদের ছুটি দিয়ে শুরু হয় অন্য রান্না। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে মোট ২২ জন। গোটা বিষয়টি জানার পরে জেলা প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক তথা মিড-ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তানিয়া পারভিন বলেন, “ছুটি ঘোষণা করে এ দিন স্কুলে যা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি। এমনকী মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের দিয়ে নিজেদের রান্না করানো উচিত হয়নি। প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রকৃত ঘটনা লিখিত জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।” বহরমপুরের বিডিও বর্ণমালা রায় বলেন, “যে ভাবে পড়ুয়াদের সামনেই ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা রান্নায় মেতে ওঠেন, তা গর্হিত কাজ। ব্লক প্রশাসনের পক্ষে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত ভাবে জানতে চাইব।”

স্কুল কর্তৃপক্ষ এর মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছে না। প্রধান শিক্ষকের সাফাই, “মঙ্গলবার থেকে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ইউনিট টেস্ট রয়েছে। তাই শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চ ঠিক করার জন্য অর্ধদিবসে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, সম্প্রতি করণিক পদে এক জন যোগ দিয়েছেন। চাকরি পাওয়ার আনন্দে তিনি ভোজ দেন। প্রধান শিক্ষক সমর কুমার চক্রবর্তী বলেন, “শিক্ষকদের জন্য চা তৈরি হয় যে স্টোভে, তাতেই রান্না হয়।” নওদাপানুর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের মমতা বিবি বলেন, “এমন কাজ করে শিক্ষকরা অন্যায় করেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

berhampur naodapanu jugalkishore high school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE