বিক্ষোভের আগুন। —নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যুৎ নিয়ে বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাগরদিঘিতে বিদ্যুতের সাব স্টেশনে ঢুকে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল চাষিদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, উত্তেজিত চাষিরা সাব স্টেশনের মধ্যে বিদ্যুতের তার কেটে দেয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় সাব স্টেশন ক্যাম্পাসের মধ্যে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই প্রায় দু’ ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চলে। কিন্তু সব দেখে শুনেও মারমুখী চাষিদের রুখতে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।এদিন এই ভাঙচুরের ফলে দুপুর থেকে সাগরদিঘি ও নবগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। গত ২ এপ্রিলও ওই সাব স্টেশন অবরোধ করে রেখেছিল চাষিরা। সেদিনও তাদের বিরুদ্ধে সাব স্টেশনের আসবাবপত্র ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছিল। চাষিদের অভিযোগ, সেদিন বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে দু’দিনের মধ্যে লোডসেডিং ও লো-ভোল্টেজ সমস্যার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তারপরেও বিদ্যুৎ সমস্যা মেটেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যা না মেটায় বৃহস্পতিবার ফের চাষিরা এসে বিক্ষোভ দেখান। অপারেটর মৃণালকান্তি জানা বলেন, “বেলা ১ টা থেকে জমায়েত হতে শুরু করে চাষিরা। বিক্ষোভ হতে পারে বলে আগে থেকেই সাব স্টেশনের সামনে পুলিশ মোতায়েন ছিল। তাদের সামনেই বিক্ষোভকারীরা সাব স্টেশনে ঢুকে প্রথমে নবগ্রাম ফিডারের বিদ্যুতের তার কাটে। পরে অফিসে ঢুকতে গেলে আমরা বাধা দিই। তারা আমাদের উপরেও চড়াও হয়। একে একে সব ফিডারের চার্জার ভেঙে ফেলে। ভাঙচুর করে আসবাবপত্রও। তখন আমরা অফিস ছেড়ে পালিয়ে যাই।” মুর্শিদাবাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ৬ হাজার হেক্টর বোরো ধানের চাষ হয়েছে সাগরদিঘিতে। বিক্ষুব্ধ চাষিদের অভিযোগ, একে তো লোডসেডিং, তার উপর ভোল্টেজ নেই। মাঠে সাব মার্সিবল পাম্প চলে না। ফলে মরতে বসেছে মাঠের বোরো ধান। ধান বাঁচাতে সাগরদিঘি থেকে নবগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতর আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি। তবে ভাঙচুরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে চাষিরা।
বিদ্যুৎ দফতরের রঘুনাথগঞ্জের ডিভিসনাল ইঞ্জিনিয়ার বাণীব্রত রায় বলেন, ‘‘সাব স্টেশনে ঢুকে ৬ টি ফিডার লাইনের সমস্ত চার্জার ভেঙে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এর ফলে সাগরদিঘি ও নবগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। কবে তা স্বাভাবিক হবে বলা যাচ্ছে না।”
জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy