বিক্রির অপেক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র।
বারো মাসের তেরো পার্বণে বাঙালির চাই হাজারো উপকরণ। আর পুজো-পরবে সেই সব উপকরণের জোগান দিয়ে লক্ষ্মীর মুখ দেখেন বহু মানুষ। তাহেরপুরের পালপাড়ার বাসিন্দারা লক্ষ্মীপুজোর মরসুমে সরার জোগান দিয়ে আসছেন বিগত কয়েক দশক ধরে। সরা বিক্রিবাটার উপর নির্ভর করে চলে সংসার। লক্ষ্মী পুজোর কথা মাথায় রেখে পালপাড়ার ব্যস্ততা তুঙ্গে।
ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে সরা তৈরি করে আসছেন তাহেরপুরের পালপাড়া ও আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারা। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে গত কয়েক দিন ধরে সরা বিক্রিও বেড়েছে। অসম, শিলিগুড়ি, কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে লরি বোঝাই করে সরা নিয়ে যাচ্ছেন। শিল্পীরা জানান, সাধারণত ছয় ধরনের সরা তৈরি হয়। একা লক্ষ্মী, লক্ষ্মী-নারায়ণ, তিন লক্ষী, পাঁচ পুতুল, দুর্গা এবং রাধা-কৃষ্ণ। বৈশাখ মাস থেকেই সরা বিক্রি শুরু হয়। বছরে প্রায় দু’লক্ষ সরা তৈরি করেন পালপাড়ার বাসিন্দারা।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ থেকে কিছু মানুষ তাহেরপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পালপাড়ায় এসে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে তাঁদের মধ্যে প্রায় পঁচিশটি পরিবার তাদের পারিবারিক এই পেশা সরা তৈরির কাজকে ধরে রাখেন। তাহেরপুর বইমেলা কমিটির সম্পাদক তারক দেবনাথ বলেন, “এটা আমাদের এলাকার একটা সম্পদ।”
মৃৎশিল্পী প্রসেনজিৎ পালের আক্ষেপ, “এই ক’বছরে জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়লেও সরার দাম সে ভাবে বাড়েনি। অথচ সরা তৈরির খরচ বেড়ে গিয়েছে। তাই কারিগর রেখে যে সরা তৈরি করবেন তার উপায় নেই।” গৃহবধূ শুক্লা পাল বলেন, “দুই ছেলেমেয়েকে সামলে স্বামীর সঙ্গে সরা তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছি। এই সময়েই তো দুটো পয়সার মুখ দেখতে পাই।” তাহেরপুর পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের সুব্রত শীল বলেন, “আমরা বাজারের মধ্যে ওদের একটা বসার জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে চাইছি। সারা বছর সেখানে ওঁরা জিনিস বিক্রি করতে পারেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy