রঙিন পতাকা আর বেলুনে ঢেকে যাওয়া মাঠ জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কচি-কাঁচার দল। রং-বেরঙের বেলুন নিয়ে মত্ত ছোটরা, কেউ কারও বেলুন মাটিতে পড়তে দেবে না। ছোটদের তালে তাল মেলাতে গিয়ে মা-বাবারাও যেন কিছুক্ষণের জন্য ফিরে গিয়েছে শৈশবে। মাঠের মাঝখানে ছোট্ট মঞ্চে কখনও চলছে জাদুর খেলা, কখনও নৃত্যানুষ্ঠান। মাঝে স্বাদ বদলে রয়েছে হরবোলার কেরামতিও।
মুরগির সাজে ছোটদের গানের সঙ্গে নাচ দেখতে গিয়ে হেসে গড়াগড়ি দিয়েছে ছোটদের পাশপাশি বড়রাও। দৃষ্টিহীন কিশোর বিল্বমঙ্গল সর্দারের হরবোলা শুনে থমকে গিয়েছেন পথ চলতি মানুষজন। মজার পাশাপাশি রয়েছে ক্ষতি করতে পারে এমন বিষয়ে সচেতনার প্রচার। মোবাইল ফোন মানুষকে কতরকম সমস্যায় ফেলতে পারে তা মূকাভিনয় করে দেখিয়েছে কলেজ পড়ুয়া একদল ছাত্রছাত্রী। ছোটদের কেউ পড়েছে কবিতা, কেউ গল্প, কেউ আবার গান শুনিয়েছে। আর সবাই মিলে এঁকেছে ভাল লাগার ছবি। তাদের বাবা-মায়েরাও দেখেছেন কী ভাবে বন্ধুত্ব করে নিজেরাই তারা প্রাতরাশ সারে, সদ্য পাতানো বন্ধুর দিকে খাবারের থালা এগিয়ে দেয়। জল ফুরিয়ে গেলে বাড়িয়ে দেয় নিজের জলের গ্লাসটাও। পড়ন্ত বিকেলে অনুষ্ঠান শেষে উপহার নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘরে ফেরার সময় প্রত্যেকেই কিন্তু জেনে নিয়েছে তার বন্ধুর নাম-ঠিকানা।
শিশুদের এ হেন মিলনমেলার আয়োজক ছিল ব্যারাকপুরের পাক্ষিক পত্রিকা ‘আজকের বারাকপুর শিশুমেলা’। কল্যাণী মহকুমা পুলিশ, পুরসভা, রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর-সহ কল্যাণীর বাসিন্দাদের উদ্যোগেই কল্যাণী লেক পার্কে মোহর কুঞ্জে রবিবার এই মেলায় উপস্থিত ছিলেন এসডিপিও, পুরসভার চেয়ারম্যান, কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রমুখ। আয়োজকদের তরফে ইন্দ্রাণী রায় বলেন, ‘‘মূলত প্রান্তিক শিশুদের নিয়েই এই মেলা। তাদের কথা বলার, ভাব বিনিময়ের, স্বপ্ন দেখার একটা মাধ্যম এই শিশু মেলা।’’
মেলায় তথ্য সংস্কৃতি দফতর আয়োজন করেছিল সুকুমার রায়ের উপর প্রদর্শনী। পুরপ্রধান নীলিমেশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই শিশু মেলা সুন্দর ও সুস্থ সমাজ গড়ার বার্তা দেয়। আমাদের কাছে এটা বড় উপহার। সারা বছর ধরেই যদি আয়োজকরা এ ধরনের অনুষ্ঠান করেন আমরা তাঁদের সঙ্গে থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy