পরীক্ষা কেন্দ্রে অসদাচরণের দায়ে শাস্তির ব্যবস্থা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ বার পুরো বিষয়টিকে নির্দিষ্ট লিখিত আচরণবিধির রূপ দিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
মূলত টোকাটুকির রমরমা ঠেকাতেই আরও কঠোর পদক্ষেপ করছে ওই সংসদ। সেই জন্যই তৈরি করা হয়েছে কড়া আচরণবিধি। কোন কোন দুষ্কর্মের জন্য পরীক্ষার্থীকে ‘আরএ’ (রিপোর্টেড এগেনস্ট) করতেই হবে, তা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে টোকাটুকির অভিযোগ উঠছে। কেউ স্কুলের কার্নিস বেয়ে আবার কেউ কেউ বাঁশঝাড়ের উপরে উঠে পরিচিতের হাতে উত্তর লেখা চিরকুট তুলে দিচ্ছে। কেউ বা জানলার ফাঁক দিয়ে বাঁশের লগা ঢুকিয়ে অনায়াস দক্ষতায় টুকলি গলিয়ে দিচ্ছে। টোকাটুকি ঠেকাতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে পুলিশও। টুকতে বাধা দেওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর হচ্ছে। টোকাটুকি ধরে ফেলায় নজরদার-শিক্ষককে আক্রমণের ঘটনাও বিরল নয়। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনকেও কড়া হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার হলে অরাজকতা ঠেকাতে কোমর বাঁধছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এ বার আরও বেড়েছে। গত বছর ছিল সংখ্যাটা ছিল প্রায় সাত লক্ষ ৯০ হাজার। এ বার তা আট লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বৃহস্পতিবার জানান, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কী কী দুষ্কর্ম করলে ‘আরএ’ করা হবে, তার তালিকা সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া, টোকাটুকি, নজরদারকে হেনস্থা করা, মারধর, পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর, উত্তরপত্র নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়া— এ-সবই আরএ-যোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। যে-পরীক্ষার্থী এই ধরনের দুষ্কর্ম করবে, ‘আরএ’ লিখে দেওয়া হবে তার উত্তরপত্রে। এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হবে সংসদের আরএ কমিটিকে। সভানেত্রী বলেন, ‘‘এর জন্য সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর ফলপ্রকাশেও দেরি হতে পারে।’’
মহুয়াদেবী জানান, এই ধরনের দুষ্কর্ম করলে পরীক্ষার্থীকে ‘আরএ’ করা হবে কি না, আগে তা স্থির করতেন সংশ্লিষ্ট নজরদার। এ বার একেবারে লিখিত এই নির্দেশ থাকছে। এই আচরণবিধি মেনেই আরএ করতে হবে। আচরণবিধি পাঠানো হচ্ছে প্রধান পরীক্ষক, পরীক্ষা কেন্দ্রের সুপারভাইজার ও নজরদারদের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy