জামিনের পরে বামফ্রন্টের অবস্থান বিক্ষোভে মহানন্দ মণ্ডল (মাঝখানে)। রয়েছেন অশোক ভট্টাচার্যও (ডান দিকে)। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মন্ত্রী যাঁকে চড় মেরেছেন বলে অভিযোগ, সেই মহানন্দ মণ্ডলকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় ধরে পুলিশ। তাঁর জামিন রোখারও চেষ্টা করে পুলিশ। শিলিগুড়ি থানার আইসি বিকাশকান্তি দে লিখিত ভাবে কোর্টে জানিয়েছিলেন, ধৃত জামিন পেলে এলাকায় ‘রাজনৈতিক সঙ্কট’ দেখা দিতে পারে। বুধবার বিকাশবাবুকে কোর্টে তলব করে ভর্ৎসনার পরে সতর্ক করেন শিলিগুড়ির ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম নীলাঞ্জন মৌলিক। এ দিন শর্তসাপেক্ষে মহানন্দবাবুর জামিনের আর্জি মঞ্জুর হয়।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব তাঁকে চড় মেরেছিলেন বলে মহানন্দবাবু অভিযোগ করেন। মহানন্দবাবুর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও গৌতমবাবুকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার হন তিনি। জামিনের পর মহানন্দবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ায় আমাকে ধরা হয়েছে। অথচ মন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি।” পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়ে পদক্ষেপ করবেন বলে জানান তিনি। গৌতমবাবুর বক্তব্য, “আইন আইনের পথে চলবে।” তাঁর দাবি, শহরে আর একটি শ্মশানে যে বৈদ্যুতিক চুল্লি হচ্ছে, তাতে দূষণ কমবে। অথচ সেখানে দূষণ বাড়বে অভিযোগে কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএম তাতে মদত দিচ্ছে। তাঁর কথায়, “উন্নয়নে বাধা দিলে গোটা শিলিগুড়িই রাস্তায় নামবে।”
২৮ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ির রামঘাটে শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির শিলান্যাসে মহানন্দবাবু-সহ কিছু স্থানীয় বাসিন্দা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তখনই তিনি মন্ত্রীর দিকে তেড়ে যান ও মন্ত্রী তাঁকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। এ দিন শিলিগুড়ি আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম প্রথমে তদন্তকারীকে কাঠগড়ায় ডাকেন। তাঁর কাছে বিচারক জানতে চান, ধৃত জামিন পেলে আইনশৃঙ্খলার কী ধরনের অবনতি হতে পারে। তদন্তকারীর উত্তরে অসন্তুষ্ট বিচারক আইসি-কে কাঠগড়ায় উঠতে বলেন। তাঁকে প্রশ্ন করেন, ধৃতকে জামিন দিলে রাজনৈতিক সঙ্কট হবে বলে আপনি কেন লিখেছেন? কী ধরনের সঙ্কট হতে পারে? উত্তরে আইসি জানান, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরেই বিভিন্ন গোষ্ঠী ক্ষোভ জানাচ্ছে, থানায় আসছে। সে কারণেই ওই আশঙ্কা। শুনে বিচারক তাঁকে বলেন, “মামলার নথির পিছনে এ ভাবে রাজনৈতিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ ঠিক নয়। আপনি আইনশৃঙ্খলার অবনতির শঙ্কার কথা দিতে পারতেন। কিন্তু রাজনৈতিক সঙ্কটের কথা লিখলেন কেন? এমন করবেন না।”
বিচারক জানতে চান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কী ধরনের অবনতি হতে পারে? আইসি জানান, মহানন্দবাবু এবং তাঁর সঙ্গীরা শ্মশানের শিলান্যাস বেদি ভাঙতে গিয়েছিলেন। তিনি জামিন পেলে ফের এমন ঘটতে পারে। শুনে আইসিকে কাঠগড়া থেকে নামতে বলেন বিচারক। মহানন্দবাবুর আইনজীবী পার্থ চৌধুরী জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন। সরকারি আইনজীবীর কথা শুনে বিচারক ধৃতকে সপ্তাহে ৩ দিন তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরা দেওয়ার শর্তে ও ১২০০ টাকার বন্ডে জামিন দেন।
এর মধ্যে ১২ অক্টোবর মিছিল ডেকেছে দার্জিলিং জেলা ফ্রন্ট। সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “দলমত নির্বিশেষে সকলকে মিছিলে আসতে বলছি।” বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন বসুর দাবি, বাম আমলে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু বন্ধের সময়ে লালবাতির গাড়িতে যাওয়ার সময় জলপাইগুড়ির এক যুবক প্রতিবাদ করায় পুলিশ তাঁকে ধরেছিল। এখন তৃণমূল জমানায় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর দাবি, “বাম-কংগ্রেস বা তৃণমূলকে মানুষ চিনে গিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy