Advertisement
০২ মে ২০২৪

জ্বর নিয়ে ভর্তি ৫০

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া হয়েছে কি না, তা জানতে সকলেরই রক্তপরীক্ষা করানো হয়েছে। কিন্তু চলতি বছর এখনও পর্যন্ত কোনও রোগীর শরীরে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার জীবাণু মেলেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৯
Share: Save:

গত দেড় মাস ধরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৭০ জন করে পুরুষ ও মহিলা রোগী জ্বর, মাথাব্যথা নিয়ে ভিড় করছেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কিছু রোগী জরুরি বিভাগের চিকিত্সকের পরামর্শেও হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

গত ১ জুলাই জেলা হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড সংলগ্ন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই দুই ওয়ার্ডে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ৫০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া হয়েছে কি না, তা জানতে সকলেরই রক্তপরীক্ষা করানো হয়েছে। কিন্তু চলতি বছর এখনও পর্যন্ত কোনও রোগীর শরীরে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার জীবাণু মেলেনি।

হাসপাতাল সুপার গৌতম মণ্ডলের দাবি, তিন দিনের কম জ্বরে আক্রান্তদের এনএসওয়ান ও তিন দিনের বেশি জ্বরে আক্রান্তদের ম্যাকালাইজা পরীক্ষা করানো হয়েছে। ওই দুই পরীক্ষায় কারও শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। স্লাইড ও কিটটেস্টে তাঁদের কারও রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু মেলেনি।

তা হলে গত দেড়মাস ধরে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কেন?

এই বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম দাসের দাবি, ঠান্ডা ও গরম আবহওয়ার জেরে প্রতি বছরই জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অক্টোবর পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের ৯টি ব্লকের বহু বাসিন্দা ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হন। জ্বরের সঙ্গে তাঁদের শরীরের ব্যথা শুরু হয়। পাঁচ থেকে সাত দিনের আগে সাধারণ ভাইরাল ফিভার সারে না। তবে অনেক সময় ভাইরাল ফিভারের উপসর্গ থাকলেও কিছু রোগীর শরীরে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া যায়। তাই শুধু প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ার পর তিন দিনের মধ্যে তাঁদের জ্বর না কমলে রক্তপরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা হয়। এ বছর এখনও পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত সমস্ত রোগী ভাইরাল ফিভারে ভুগছেন।

গত বছর রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত ৬ জন রোগীর শরীরে ডেঙ্গি ও ২ জন রোগীর শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু মেলে। তাঁদের মধ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৫ জন রোগীকে হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে রেখে প্রায় দু’সপ্তাহ চিকিত্সা করানো হয়। তবে হাসপাতালে আলাদা করে পৃথক প্লেটলেট ইউনিট চালু না হওয়ায় সেই সময় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক রোগীকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়।

হাসপাতালের সুপার গৌতমবাবুর দাবি, হাসপাতালে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের তিনটি স্তর পর্যন্ত চিকিত্সার পরিকাঠামো রয়েছে। তবে কোনও রোগীর শরীরে আচমকা ৬০ হাজারের নীচে প্লেটলেট নেমে গেলে তখন তাঁদের চতুর্থ স্তরের চিকিত্সার প্রয়োজন। সেই সময় তাঁদের শরীরে প্লেটলেট না দিলে তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। সেই চিকিত্সা পরিকাঠামো এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে গড়ে ওঠেনি। এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা জানান, প্রয়োজনের ভিত্তিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ন’টি ব্লকে মশা ও জীবাণুনাশক স্প্রে ও পাউডার ছড়ানোর কাজ চলছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE