নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত কৃষ্ণেন্দু দে-কে। — নিজস্ব চিত্র
কখনও রেলের অ্যাসিসট্যান্ট কমার্শিয়াল ম্যানেজার। কখনও আবার আরও উচ্চ পদস্থ অন্য কোনও আধিকারিক। এমনই পরিচয় দিয়ে অবাধেই চলছিল গুরুত্বপূর্ণ কামরায় যাতায়াত। তবে বুধবার আপ শতাব্দী এক্সপ্রেসের এক্সিকিউটিভ ক্লাসের কামরা থেকে গ্রেফতার করা হল রেলের ওই ভুয়ো আধিকারিককে। ফরাক্কা স্টেশনের কাছে তাঁকে আটক করে তুলে দেওয়া হয় রেল পুলিশের হাতে।
রেলপুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম কৃষ্ণেন্দু দে। তিনি ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর কাছ থেকে রেলের দু’টি মাসিক পকেট নোটবুক উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে মালদহ জেলা আদালতে তোলা হয় তাঁকে। মালদহ জিআরপির আইসি কৃষ্ণগোপাল দত্ত বলেন, ‘‘রেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কেন ওই ব্যক্তি এমন করতেন তা দেখা হচ্ছে।’’
অভিযোগ, ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দুবাবু বছর খানেক ধরে রেলের ভুয়ো আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে ট্রেনের প্রথম শ্রেণির কামরায় যাতায়াত করতেন। টিকিট পরীক্ষকরা টিকিট দেখতে চাইলে তিনি কখনও ডিসিএম, আবার এসিএম পরিচয় দিতেন। রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের পরিচয় দেওয়ায় টিকিট পরীক্ষকরা তাঁর টিকিট দেখার সাহস পেতেন না।
ওইদিন দুপুরে হাওড়া থেকে ফের এসিএম পরিচয় দিয়ে শতাব্দী এক্সপ্রেসের ইসি-১ কামরায় ওঠেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। টিকিট পরীক্ষকদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা যোগাযোগ করেন মালদহের এসিএম অনুপ সিংহের সঙ্গে। এরপরই অনুপবাবু উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে হাজির হন ফরাক্কা স্টেশনে। সেখানে তাঁরা ইসি-১ কামরায় উঠে কৃষ্ণেন্দুবাবুর পরিচয় পত্র দেখতে চান। পরিচয় পত্র দেখাতে না পারায় তাঁকে আটক করে তুলে দেন মালদহের জিআরপির হাতে। অনুপবাবুই কৃষ্ণেন্দুর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন।
জিআরপির সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ৪২০, ৪১৯ নম্বর এবং রেল আইন অনুযায়ী ১৩৭ নম্বর ধারায় মামলারুজু করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণেন্দুবাবু মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভের কাজ করেন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে রেল পুলিশের কাছে দাবি করেছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। তিনি জানিয়েছেন, এক টিটির অনুমতি নিয়েই ওই কামরাতে উঠেছিলেন। এছাড়া ভুয়ো পরিচয় দিয়ে তিনি কখনওই যাতায়াত করেননি।
মালদহের স্টেশন ম্যানেজার হরেকৃষ্ণ সিংহ বলেন, ‘‘শুনেছি ওই ব্যক্তি ভুয়ো পরিচয় দিয়ে বিনা টিকিটে যাতায়াত করছিলেন। এ দিন তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে।’’ এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অ্যাসিসট্যান্ট কর্মাশিয়াল ম্যানেজার অনুপবাবু। মালদহের ডিআরএম মোহিত কুমার সিংহকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy