Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৩

থামে ধাক্কার তত্ত্ব সংস্থার

নির্মাণকারী সংস্থার একাংশের দাবি, বাইরে থেকে স্তম্ভে জোর ধাক্কায় এমন ঘটে থাকতে পারে। তবে গাড়ির ধাক্কায় সবক’টি বোল্ট উপড়ে ফেলা সম্ভব কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উড়ালপুলটির নির্মাণ সংস্থার সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার নিলয় দত্ত ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তকে জানান, বাইরে থেকে স্তম্ভে কোনও প্রবল ধাক্কা হলেও এরকম হতে পারে।

ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ সেতুর একটি অংশ।ফাঁসিদেওয়ার কাছে ৩১ডি জাতীয় সড়কের উপর।

ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ সেতুর একটি অংশ।ফাঁসিদেওয়ার কাছে ৩১ডি জাতীয় সড়কের উপর।

শান্তশ্রী মজুমদার
ফাঁসিদেওয়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩৭
Share: Save:

ফাঁসিদেওয়ায় ৩১ডি জাতীয় সড়কে ২৪টি নাটবোল্ট ভেঙে কী ভাবে উড়ালপুলের একটা অংশ ধসে পড়ল তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।

রাজ্য সরকারের নানা কাজে যুক্ত ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের ধারণা, স্তম্ভের উপরে ওই অংশ বসানোর পদ্ধতিতে কোনও ত্রুটি ছিল। ধসে পড়া অংশ স্তম্ভের উপরে আদৌ মজবুত ভাবে ছিল কি না তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। যে ঠিকাদার-কর্মীরা ওই অংশ বসিয়েছেন তাঁদের জেরা করে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছেন তদন্তকারীরা। শুধু তা-ই নয়, দ্রুত উদ্বোধনের জন্য জোড়াতালি দিয়ে কাজ হচ্ছিল বলে যে অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কয়েকজন করেছেন, সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।

অন্যদিকে, নির্মাণকারী সংস্থার একাংশের দাবি, বাইরে থেকে স্তম্ভে জোর ধাক্কায় এমন ঘটে থাকতে পারে। তবে গাড়ির ধাক্কায় সবক’টি বোল্ট উপড়ে ফেলা সম্ভব কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উড়ালপুলটির নির্মাণ সংস্থার সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার নিলয় দত্ত ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তকে জানান, বাইরে থেকে স্তম্ভে কোনও প্রবল ধাক্কা হলেও এরকম হতে পারে। সংস্থার আরেক সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে যায়নি। পড়ে ভেঙেছে। গাড়ির ধাক্কায় ঘষার চিহ্নও আমরা দেখতে পেয়েছি একটি থামের গায়ে।’’ গত কয়েকমাস দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু চলছিল। উদ্বোধনের তাড়ায় কোনও গাফিলতি হয়েছিল কিনা খতিয়ে দেখার কথা।

যদিও লরি বা গাড়ির ঘষায় থামের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কথা নয় বলেই দাবি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক পার্থ বিশ্বাসের। তাঁর কথায়, ‘‘ঘষা বলতে আমরা যা বুঝি, তাতে যদি গার্ডার ভেঙে পড়ে, তাহলে হয় নকশা, না হলে সামগ্রী, নাহলে নির্মাণ পদ্ধতিতে গোলমাল থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে। যদিও তদন্তের পরেই তা বলা সম্ভব।’’ সজোরে ধাক্কা মারলে পিলারের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে অত জোরে ধাক্কা মেরে গাড়িটি সেখানেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। ঘটনাস্থলে অবশ্য সেরকম কোনও গাড়ি ছিল না।

খারাপ গুণমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলে এ দিন দুর্ঘটনার পর পথ অবরোধ করেন কান্তিভিটার বাসিন্দারা। এর জেরে ঘোষপুকুর-সলসলাবাড়ি রোডে দিনভর ব্যাপক যানজট হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিটি পিলার এবং প্রতিটি গার্ডার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। না হলে কাজ করতে দেওয়া হবে না। এ দিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে পথ অবরোধ। পরে তা তুলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE