Advertisement
E-Paper

ধানের ঘরে ফড়ের হানা, কিনছেন মেয়েরা

ফড়েরাজ সামলাতে শেষ অবধি মেয়েদের কাজে লাগাচ্ছে প্রশাসন। মালদহের প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে ধান সংগ্রহ কেন্দ্র তৈরি করা কঠিন, প্রশাসন সেই সব জায়গায় পাঠাচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। এই দফায় ওই গোষ্ঠীগুলি প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনে ফেলেছে।

অভিজিৎ সাহা 

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০০
বেচাকেনা: সরকারি শিবিরে চলছে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা। নিজস্ব চিত্র

বেচাকেনা: সরকারি শিবিরে চলছে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা। নিজস্ব চিত্র

ফড়েরাজ সামলাতে শেষ অবধি মেয়েদের কাজে লাগাচ্ছে প্রশাসন। মালদহের প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে ধান সংগ্রহ কেন্দ্র তৈরি করা কঠিন, প্রশাসন সেই সব জায়গায় পাঠাচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। এই দফায় ওই গোষ্ঠীগুলি প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনে ফেলেছে। কিন্তু এই গোষ্ঠীর শিবিরগুলিতেও ফড়েরা ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, শিবিরে কড়া নজর রাখছে তারা।

পুরাতন মালদহের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবগঞ্জ, সিন্ধিয়া গ্রাম। টাঙন নদী ব্লক সদর থেকে গ্রাম দু’টিকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ওই গ্রাম থেকে পুরাতন মালদহের নারায়ণপুর কৃষক বাজারের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। ওই এলাকার চাষি কল্যাণ মণ্ডল বলেন, “নৌকায় করে ধান নিয়ে নদী পার হয়ে আসতে হয়। তার পরে গাড়িতে করে সেই ধান কৃষক বাজারে নিয়ে যেতে প্রায় হাজার খানেক টাকা খরচ।” সেই খরচের ভয়ে অনেক চাষি মাঠেই ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন, জানান তিনি। সরকার তো বাজার থেকে বাড়তি দামে ধান নিচ্ছে, তার পরেও কেন ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করছেন? কল্যাণ বলেন, “অনেকেই মনে করেন ব্যাঙ্ক গেলে টাকার জন্য ঘুরতে হবে। ধান বিক্রি করার জন্য বারবার করে ছুটতে হবে। ফড়ে তো বাড়ি বয়ে টাকা দিয়ে যাচ্ছে। ছোটাছুটি, বাড়তি খরচ, কিছুই নেই।”

শুধু ওই গ্রামেই নয়, জেলার অন্যান্য প্রত্যন্ত গ্রামের চাষিদেরও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট চাষিরাই। তাই খাদ্য সরবরাহ দফতর কৃষক বাজার, সোসাইটির পাশাপাশি আসরে নামানো হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও। খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে ২২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ধান কেনার কাজে নামানো হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে শিবির করে ধান কিনবেন ওই মহিলারা।

১ নভেম্বর থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ১৬ হাজার মেট্রিক টনের মতো ধান কিনেছেন। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলাদের শিবির থেকেই মিলগুলি ধান নিয়ে যাবে। এর জন্য মহিলারা কমিশন পাবেন। কুইন্টাল প্রতি তাঁদের দেওয়া হয় সাড়ে ৩১ টাকা।

তবে প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা, এই শিবিরগুলিতেও হয়তো ফড়েরা ভিড় করছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক মহিলা বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী চাষিদের সচিত্র পরিচয়পত্র, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, দু’কপি ছবি এবং মোবাইল নম্বর থাকলেই ধান নেওয়া হচ্ছে। এর পরে আর কী ভাবে যাচাই করা হবে, বিক্রেতা প্রকৃত চাষি কিনা!’’

সরকারি মূল্যে ধান বিক্রির জন্য চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদহের কৃষি দফতররের অধিকর্তা অভিতাভ চৌধুরী। তিনি বলেন, “কৃষিমেলাগুলিতে নিয়ম করে প্রচার চালানো হচ্ছে।”

খাদ্য সরবরাহ দফতরের জেলা আধিকারিক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, “প্রতিটি শিবিরেই আমরা নজরদারি চালাচ্ছি। কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতেও জোর দেওয়া হচ্ছে। মাত্র দু’দিনের মধ্যে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকাও দেওয়া হচ্ছে।”

Paddy Self Help Group Malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy