মালদহে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। গত এক সপ্তাহে জেলায় ফের ১০ জন আক্রান্ত ডেঙ্গিতে। এ নিয়ে চলতি বছরে ১৫২ জন আক্রান্ত হলেন। এ দিকে বৃষ্টি শুরু হলে ওই সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই পরিস্থিতিতে সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় আরও জোর দিতে চাইছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।
গত বছর জেলায় ডেঙ্গিতে ৪,৪২৭ জন আক্রান্ত হন। যদিও কারও মৃত্যু হয়নি বলে দাবি। এ বছর যাতে ওই হারে সংক্রমণ না হয় তাই আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন। ১১-১৩ জুন গোটা জেলা জুড়ে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়। জেলার সমস্ত হাসপাতাল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার সাফাই করা হয়েছে। নজরদারির জন্য ব্লক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদেরও কাজে নামানো হয়েছিল। সহযোগিতা নেওয়া হয় ভেক্টর বর্ন ডিজিস কন্ট্রোল টিম, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, কন্যাশ্রী ক্লাব, ব্যবসায়ী সংগঠন, ইমাম, মোয়াজ্জেম এবং পুরোহিতদেরও। তাও ডেঙ্গির সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সাত দিনে ১০ জন আক্রান্ত। এদের মধ্যে ইংরেজবাজার ও কালিয়াচক ১ ব্লকে ২ জন করে এবং পুরাতন মালদহ, কালিয়াচক ২ ও ৩, রতুয়া ১ ও ২ ব্লকে ও ইংরেজবাজারে এক জন করে আক্রান্ত হন।
উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলেও মালদহ জেলায় এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ্রা। তাদের মতে, বৃষ্টি হলে বিভিন্ন জায়গায় জল জমবে এবং সেই জমা জলে ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী মশার বংশবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। বর্ষা আসার আগেই জেলা জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হয়ে যাওয়ায় শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগও ছড়িয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘‘ডেঙ্গির প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি ও সে কাজ পঞ্চায়েত, পুরসভা, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর যৌথ ভাবে করছে জেলা জুড়ে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় জমা জল রয়েছে তা সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ব্লক হাসপাতাল থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজেও রয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)