কিছু দিন আগেই স্কুল বদলের নির্দেশ পেয়েছিলেন হীরালাল দাস। সোমবার দলও বদল করে ফেললেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এই সদস্য।
এ দিন দিনহাটায় তৃণমূলের এক সভায় শাসক দলে যোগ দেন হীরালালবাবু। তাঁকে তৃণমূলের দিনহাটা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি, হীরালালবাবুকে দলে টানতে পরিকল্পিত ভাবে তাঁকে বাড়ির কাছে স্কুল থেকে প্রত্যন্ত একটি এলাকার স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়। তাতেই চাপে পড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন হীরালালবাবু। ফরওয়ার্ড ব্লকের ওই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং দলের রাজ্য সম্পাদক উদয়ন গুহ।
হীরালালবাবুও ওই দাবি ঠিক নয় বলে জানান। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য জুড়ে যে উন্নয়ন করেছেন তাতে আমি খুশি। তাই তাঁর সঙ্গেই থাকতে চাই। তাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। এর মধ্যে অন্য কিছু খোঁজা ঠিক নয়।” উদয়নবাবুর যুক্তি, এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে অনেকেই বদলি হয়েছেন। সবাই তৃণমূলে যোগ দেননি। তিনি বলেন, “এসব কথা হাস্যকর। হীরাবাবু দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। নানা কারণে আগে তিনি যোগ দিতে পারেনি। এখন দিলেন।” রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, হীরাবাবুকে দিনহাটায় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সভাপতি পরেশ অধিকারী বলেন, “দলীয় কর্মীদের ভাঙাতে নানা ভাবে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। চক্রব্যূহের মধ্যে ফেলে সাময়িক ভাবে দলে টানা যেতে পারে। কিন্তু চিরদিনের জন্য কাউকে নেওয়া যায়নি। হীরালালবাবু প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করেন। দল ছাড়ার জন্য চাপ তৈরি করতে সম্প্রতি তাঁকে প্রত্যন্ত এলাকার একটি স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়।”
দলীয় সূত্রের খবর, কমল গুহের সময় থেকে হীরালালবাবু ফরওয়ার্ড ব্লকের সক্রিয় কর্মী। নানা সময়ে দলের নানা দায়িত্ব পান তিনি। তাঁকে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য করা হয়। গত অক্টোবর মাসে উদয়নবাবু দল পরিবর্তন করার আগেও হীরালালবাবুকে তাঁর সঙ্গে দেখা যায়। কিন্তু তখন উদয়নবাবু তৃণমূলে সামিল হলেও হীরালালবাবু তাঁর শরিক হননি।
উদয়নবাবুর দলত্যাগের পড়ে দিনহাটা সহ কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লকের যত আন্দোলন ও সভা হয় তার সামনের সারিতে ছিলেন হীরালালবাবু। জানা গিয়েছে, গত তিরিশ বছর ধরে বাড়ি থেকে হাঁটা পথের দূরত্বে গোসানি রোড প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছিলেন হীরালালবাবু। সম্প্রতি হীরালালবাবুকে বাড়ি থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে গীতালদহের দরিবসে একটি স্কুলে বদলি করে দেওয়া হয়। গীতালদহ বাজার থেকে দু’টি নদী পার হয়ে ওই স্কুলে যেতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নদীর চর ধরে প্রায় দু’ কিলোমিটার হাঁটার পরেই ওই স্কুলে যেতে হয়।
ফরওয়ার্ড ব্লকের এক নেতা বলেন, “ওই চিঠি হাতে পাওয়ার পরে কার্যত ভেঙে পড়েন হীরালালবাবু। এর পরেই তিনি উদয়নবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy