Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গিতে মৃত্যু নিয়ে তদন্ত দাবি মেয়রের

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়িতে অমিত ছেত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসার গাফিলতি বা পরিবারের অসর্কতা ছিল কি না তা তদন্তের দাবি তুললেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শনিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপারকে নিয়ে পুরসভায় বৈঠক করেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১০

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়িতে অমিত ছেত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসার গাফিলতি বা পরিবারের অসর্কতা ছিল কি না তা তদন্তের দাবি তুললেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শনিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপারকে নিয়ে পুরসভায় বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই বিষয়টি জানান। কী ধরনের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি তা খতিয়ে দেখারও দাবি উঠেছে।

বুধবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিলিগুড়ির ক্ষুদিরামপল্লির বাসিন্দা অমিতবাবুর মৃত্যু হয়। মেয়রের দাবি, ‘‘জ্বর নিয়ে পরিবারের লোকেরা তাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়েছিলেন। সেখান থেকে প্রথমে শিলিগুড়ি হাসপাতালে পরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। সিসিইউতে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থাও হয়। তা হলে মৃত্যু হল কেন? মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলে একটা তদন্ত করা হোক।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে মৃত্যুর যে ঘটনাগুলি ঘটেছে সে সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিস্তারিত খতিয়ে দেখাই হয়। এ ক্ষেত্রেই তা করা হচ্ছে।’’ প্রাথমিক ভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, রোগীকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরের দিনই তাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এবং ওই দিনই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণ পরে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়। সে সময় ওই ব্যক্তির প্লেটলেট ৯ হাজারে নেমে গিয়েছিল। ছয় ইউনিট প্লেটলেটও দেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে পড়ে।’’

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শহরের নার্সিংহোমগুলিতে প্রচুর রোগী রয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য দফতর তা স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ। ডেঙ্গি নির্ণায়ক পরীক্ষার ক্ষেত্রে নার্সিংহোম এবং স্বাস্থ্য দফতরের দু’রকম রিপোর্ট নিয়ে যে বিভ্রান্তি হচ্ছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘নার্সিংহোমগুলি বহু ক্ষেত্রেই কার্ড টেস্ট করে ডেঙ্গি হয়েছে বলছে। সেগুলির অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার পর ডেঙ্গি নয় বলা হচ্ছে। সঠিক সময়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার।’’ জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা জানান, নার্সিংহোমগুলিকে নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক ডাকা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৭ জন রয়েছেন ডেঙ্গি আক্রান্ত। তার মধ্যে এক জন দার্জিলিং জেলার। শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত দুই জন রয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তবে তাদের ডেঙ্গি রয়েছে কি না তা নিশ্চিত নয়।

ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের ফের প্রশিক্ষণ দিয়ে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করার কাজ করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্মাণকাজের জায়গাগুলিতে যাতে জল জমে না থাকে তা নিশ্চিত করতে আবার অভিযানে নামার কথা জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। ভবিষ্যতে এ সব নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্মাতারা যাতে ‘ভেক্টর কনট্রোল ইউনিট’ রাখে সে ব্যাপারে নিয়ম চালু করতে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। ২০ টি নতুন অত্যাধুনিক ফগিং মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও মশার দাপট বেড়েছে শহর জুড়েই। মশা এবং তার লার্ভা মারার বিষয়টিতে জোর দিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা কোনও কাজই করছে না। মশা মারতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত তেল, ব্লিচিং কিছুই মিলছে না। পুরসভার উদাসীনতার জন্যই ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। মেয়র দায়িত্ব এড়ালে চলবে না। পুরসভাকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’’

Dengue Death case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy