Advertisement
০৬ মে ২০২৪

অপসারণের দাবি উড়িয়ে নয়া দায়িত্ব

দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে দলীয় সভাপতির পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন দলেরই জেলা নেতা ও বিধায়কদের একাংশ।

অমল আচার্য

অমল আচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে দলীয় সভাপতির পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন দলেরই জেলা নেতা ও বিধায়কদের একাংশ। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যকে রায়গঞ্জ পুরসভার যুগ্ম প্রশাসকের দায়িত্ব দিল রাজ্য সরকার। রাজ্য পুর দফতরের পাঠানো সেই সরকারি নির্দেশিকা গত শুক্রবার হাতে পেয়েছেন অমলবাবু।

ওই ঘটনায় একদিকে যেমন অমলবাবু সহ তাঁর অনুগামীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন, তেমনি দল অমলবাবুকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেবে কি না, তা নিয়ে নানা জল্পনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতা ও তাঁদের অনুগামীদের মধ্যে।

২২ জুলাই কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। তার আগে রাজ্য সরকার নির্বাচন ঘোষণা না করায় সরকারি নির্দেশে ওইদিন থেকে পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েছেন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেন্ডুপ নামগিয়েল শেরপা। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রায় এক মাস আগে দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর কাছে অমলবাবুর বিরুদ্ধে দলের নির্দেশ না মেনে জেলার ন’টি ব্লক ও চারটি শহর কমিটি ভাঙার লিখিত অভিযোগ জানান ইসলামপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক করিম চৌধুরী, চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান, গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক গোলাম রব্বানি, জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সভাপতি তিলক চৌধুরী ও দলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার কলকাতার তৃণমূল ভবনে বৈঠক ডাকেন শুভেন্দুবাবু।

ওই বৈঠকে অমলবাবু এবং অভিযোগকারী সমস্ত নেতা বিধায়করা হাজির ছিলেন। বৈঠকে অভিযোগকারী নেতারা শুভেন্দুবাবুর কাছে অমলবাবুর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপ ও নিজের পছন্দের লোককে বিভিন্ন কমিটির শীর্ষপদে বসানোর অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে পদ থেকে অপসারণের দাবি জানান। শুভেন্দুবাবু বিষয়টি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানোর আশ্বাস দেন।

এরপরেই কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে বরং অমলবাবুকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর অনুগামী নেতা কর্মীদের দাবি, জোটের প্রবল হাওয়া সত্ত্বেও গত বিধানসভা নির্বাচনে দল জেলায় চারটি আসন ধরে রাখায় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব অমলবাবুর পাশেই রয়েছেন। দলে সেই বার্তা ছড়িয়ে দিতেই তাঁকে পুরসভার যুগ্ম প্রশাসকের পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অমলবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘দল ও রাজ্য সরকার আমার উপর ভরসা রেখেছে। বাকিটা সময় বলবে। জেলা সভাপতি পদের লোভে আমার বিরুদ্ধে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে মিথ্যা অভিযোগ ও অপসারণ দাবি করা হয়েছে। যাঁরা এসব করছেন তাঁরা তাঁদের এলাকাতেই বিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত করে অতীতে পুরসভা, পঞ্চায়েত, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের হারিয়েছেন।’’

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ বলেন, ‘‘দল ও প্রশাসনের সিদ্ধান্ত পৃথক। দলে কোন নেতার কী ভূমিকা বা কারা দলকে ব্যবহার করে বিত্তশালী হয়েছেন, তা দলনেত্রী সহ দলের রাজ্য নেতারা জানেন। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দলনেত্রী উপযুক্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Amal Acharya Raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE